নিজস্ব প্রতিবেদক:
উন্নত জীবনের প্রলোভন দেখিয়ে অবৈধভাবে নৌকায় করে ইতালিতে মানব পাচারের সময় তিউনিসিয়া উপকূলে ৮ জন বাংলাদেশি নিহতের ঘটনায় মানব পাচারকারী চক্রের মূলহোতা এবং চাঞ্চল্যকর হত্যা মামলার পলাতক ২ জন পলাতক আসামিকে ৪৮ ঘন্টার মধ্যে গ্রেফতার করেছে র্যাব-১ ও র্যাব-৬।
র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে সবসময় বিভিন্ন ধরণের অপরাধীদের গ্রেফতারের ক্ষেত্রে অত্যন্ত অগ্রণী ভূমিকা পালন করে আসছে। র্যাবের সৃষ্টিকাল থেকে এ পর্যন্ত মাদক ব্যবসায়ী, অপহরণকারী, সন্ত্রাসী, এজাহারনামীয় আসামী, ছিনতাইকারী, চাঁদাবাজ, প্রতারকচক্র, ধর্ষণকারী, পর্ণোগ্রাফি বিস্তারকারী, চোরাকারবারীদের গ্রেফতার করে সাধারণ জনগণের মনে আস্থা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে।
প্রবাসে বাংলাদেশীদের কর্মসংস্থানের চাহিদা ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পাচ্ছে। এই প্রেক্ষাপটকে পুঁজি করে এক শ্রেণীর স্বার্থান্বেষী সংঘবদ্ধ চক্র বিদেশে কর্মসংস্থানের আশ্বাস দিয়ে নিরীহ সাধারণ মানুষদের প্রতারিত করছে। বাদী সুনিল বৈরাগী এর ছেলে ভিকটিম সজল বৈরাগী (২৫’)কে বিদেশে যাওয়ার জন্য পূর্ব পরিচিত যুবরাজ কাজী (২৪) প্রস্তাব দেয়। তার বাবা মোঃমোশারফ কাজী (৫০) এর মাধ্যমে বৈধপথে ইতালি পাঠানোর ব্যবস্থা করবে বিনিময়ে তাকে ১৪,০০,০০০/- টাকা দিতে হবে।
উল্লেখ্য যে, মোঃ মোশারফ কাজী (৫০) বর্তমানের লিবিয়া অবস্থানরত। উক্ত প্রস্তাবে সজল বৈরাগী রাজি হয়ে গত ১৭/১১/২০২৩ ইং তারিখ সজল বৈরাগী, বড় ভাই সুধীর বৈরাগী (৭০)’ সহ যুবরাজ (২৪) এর গোপালগঞ্জস্থ নিজ বাসায় তার হাতে নগদ ২,৫০,০০০/- টাকা ও পাসপোর্ট প্রদান করে।
পাসপোর্ট ও টাকা দেয়ার কিছুদিন পর যুবরাজ কাজী (২৪) ভিকটিমদের সমস্ত কাগজপত্র রেডি বলে এবং ভিকটিমদের বাকি টাকা রেডি করতে বলে। তারপর যুবরাজ কাজী (২৪) গত ৩০/১২/২০২৩ ইং তারিখ ইতালি যাওয়ার কথা বলে ভিকটিম সজল বৈরাগী (২৫) কে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নিয়ে আসে। বিমানবন্দরের মেইন গেইটে ঢোকার পূর্বেই গাড়ি থেকে নামার আগে ভিকটিমের কাছ থেকে ৫,০০,০০০/- টাকা নেয় এবং বিমান বন্দরে রাত্র অবস্থান করে ৩১/১২/২০২৩ ভোর ০৬০০ ঘটিকায় আকাশ পথে ইতালির উদ্দেশ্যে দুবাই রওনা করে।
পরবর্তীতে ০৮/০১/২০২৪ ইং তারিখ আমার আপন বড় ভাই সুধীর বৈরাগী(৭০)সহ যুবরাজ কাজী(২৪) এর গোপালগঞ্জস্থ নিজ বাসায় তার হাতে আরও নগদ ৬,৫০,০০০/- টাকা গ্রহন করে। অনেক দিন হওয়ার পরেও ভিকটিমের সাথে তার পরিবারের যোগাযোগ হয় নাই। পরবর্তীতে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে ও প্রিন্ট ইলেকট্রনিক মিডিয়ার মাধ্যমে ভিকটিমদের
পরিবার জানতে পারে যে, গত ১৪/০২/২০২৪ ইং তারিখ আনুমানিক ভোর ০৪৩০ ঘটিকায় ভূমধ্যসাগরে ইতালী উদ্দেশ্যে গমনকারী একটি ডিঙ্গি নৌকা তিউনিশিয়া উপকূলে ডুবে যায় এবং অনেক প্রাণহানী ঘটে তার মধ্যে সজল বৈরাগীসহ বাংলাদেশী ০৮ জন নাগরিকের মৃত্যু ঘটে।
পরবর্তীতে ভিকটিম এর বাবা বাদী হয়ে ডিএমপি ঢাকার বিমানবন্দর থানার মামলা নং-১০, তারিখঃ ১৯-০৪-২০২৪খ্রিঃ, মানব পাচার প্রতিরোধ ও দমন আইন- ২০১২ এর ৭/৮ ধারা ও ৩০২/৩৪ পেনাল কোড রুজু করা হয় এবং র্যাব-১ এর নিকট একটি অভিযোগ দায়ের করে। ফলশ্রুতিতে র্যাব-১ আসামীদের আইনের আওতায় নিয়ে আসার জন্য ছায়াতদন্ত শুরু করে এবং গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করে।
এরই ধারাবাহিকতায় গত ২১/০৪/২০২৪ ইং তারিখ আনুমানিক ২৩০০ ঘটিকার সময় র্যাব-১ ও র্যাব-৬ এর একটি আভিযানিক দল গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারে যে, উপরোক্ত মামলার ১নং এবং ৪নং আসামী গোপালগঞ্জ জেলার মুকসুদপুর থানাধীন রাঘদী ইউনিয়ন এলাকায় আত্মগোপনে আছে।
প্রাপ্ত সংবাদের ভিত্তিতে বর্ণিত স্থানে অভিযান পরিচালনা করে ১নং আসামী যুবরাজ কাজী (২৪), পিতা-মোশারফ কাজী, এবং ৪নং আসামী কামাল (৩৮), পিতা-মোঃ মোতালেব, উভয় থানা-মুকসুদপুর, জেলা-গোপালগঞ্জ’দেরকে গ্রেফতার করা হয়। এসময় ধৃত আসামী ০১ টি ভিসা কার্ড এবং নগদ ৭,১৬৪/- টাকা উদ্ধার করা হয়। গ্রেফতারকৃত আসামীর বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।
প্রকাশক ও সম্পাদক মোঃ গোলাম মাওলা শাওন ০১৭১১-০০৬২১৪, ব্যবস্থাপনা সম্পাদক 01762119992, প্রধান কার্যালয় ৩৪ নুরজাহান শরীফ প্লাজা ৮ম তলা, পুরানা পল্টন ঢাকা ১০০০। ০১৯৯৯-৯৫৩৯৭০ নিউজ ই-মেইল [email protected] সিভি পাঠান: [email protected]