
মোঃ এনামুল হক ( খোকন) পাটওয়ারী
চাঁদপুর জেলা– প্রতিনিধি
দিনের-পর-দিন, মাসের-পর-মাস এবং একটি নয় দুইটি নয় অসংখ্য অনিয়ম নিয়মে পরিণত হয়ে গেছে চাঁদপুর ফরিদগঞ্জ উপজেলার ১ নং বালিথুবা ইউনিয়নের চান্দ্রা বাজারস্থ বালিথুবা অগ্রণী ব্যাংক শাখায়। এতসব অনিয়মের বেড়াজালে অবরুদ্ধ হয়ে গ্রাহকদের অসন্তুষ্টি এখন চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে। যার কারণে গত ক’ মাসে এ ব্যাংক থেকে চলে গেছে অনেক গ্রাহক।
গত ক’ মাসের সংক্ষিপ্ত তদারকিতে দেখা যায় সরকারি এই ব্যাংকটিতে মাসের-পর-মাস ক্যাশিয়ারের দায়িত্ব পালন করতে দেখা যায় সাধারন একজন গার্ডকে। এছাড়া নিয়ম অনুযায়ী ক্যাশ কাউন্টারের ভিতরে বহিরাগত কোন লোক ঢোকার অনুমতি না থাকলেও এ ব্যাংকের ক্যাশ কাউন্টারে বাহিরাগত লোকদের চলে চা-পানির আপ্পায়নের ব্যবস্থা। এবং গ্রাহক লাইনে দাঁড়িয়ে টাকা নিতে দেরি হবে বলে পরিচিতজনরা ক্যাশ কাউন্টারে ঢুকেই তাদের নগদ প্রদান নগদ গ্রহণ শেষ করেন। অভিযোগ রয়েছে ক্যাশিয়ারের বাড়ি বালিথুবা শাখা ব্যাংকের এলাকায় হওয়ায় তিনি সারাক্ষণ পরিচিত জনদের কাউন্টারে ঢুকিয়ে খোশ গল্পে ব্যস্ত থাকেন। এবং এ অনিয়মগুলো নিয়ম করে নিয়েছেন।
অন্যদিকে ক্যাশ কাউন্টারের সামনে বাংলাদেশ ব্যাংকের লিখিত নির্দেশনা ছিল এখানে সব সময় ছিড়া ফাটা টাকা নেওয়া হয়। কিন্তু ক্যাশিয়ার জামেলা কমাতে সেই নির্দেশনা ছিড়ে ফেলে দিয়েছেন। এবং এই ধরনের উপকারভোগীরা আসলে তিনি বলে দেন এখানে কোন ছিড়া ফাটা টাকা নেওয়া হয় না। এবং যারা টাকা জমা করতে আসে তারা বড় বড় নোট না আনলে তিনি টাকা ফেরত দেন। এবং বড় নোট বানিয়ে আনতে বলেন। এবং একটু পুরাতন নোট হলে তিনি নিতে চায় না। এছাড়া গ্রাহকদের কাছ থেকে প্রতিনিয়ত ভাংতি টাকা নেই বলে ১০,২০ টাকা করে রেখে দেয়।
বিদ্যুৎ বিলে এই ব্যাংকে সরকারের হাজার হাজার টাকা রাজস্ব ফাঁকি দেওয়া ২/১ দিনের ঘটনা নয়। মাসের পর মাস বছরের পর বছর ৪০০ টাকার উপরের বিলে ১০ টাকার রেভিনিউ ষ্টাম না লাগানো এই ব্যাংকে একটা নিয়ম হয়ে দাঁড়িয়েছে। এছাড়া ভাংতি টাকা নাই বলে অনেক সময় গ্রাহককে খুচরো টাকা ফেরত দেয় না। যাহা নিয়ে প্রতিনিয়তই কথা কাটাকাটি হতে দেখা যায়। এলাকার সচেতন মহল এ বিষয়ে ব্যাংকের ম্যানেজারের সাথে কয়েকবার রফাদফা করেও বিদ্যুৎ বিলে নিয়মিত রেভিনিউ লাগানো নিয়ন্ত্রণে আনতে পারে না। জানা যায়, রেভিনিউ না লাগিয়ে যে টাকা রাজস্ব ফাঁকি দেওয়া হয়, সে টাকা দিয়ে ব্যাংকের বিভিন্ন খরচ মেনটেন করা হয়। এবং সিকিউরিটি গার্ড যাকে দিয়ে ক্যাশিয়ারের দায়িত্ব পালন করা হয় তাকে বাড়তি সম্মাননা প্রদান করা হয়।
চাঁদপুর জেলার ঐতিহ্যবাহী এবং সর্ববৃহৎ চান্দ্রা বাজারের অসংখ্য ব্যবসায়ীর মতামত অগ্রণী ব্যাংক বালিথুবা বাজার এই শাখার অনিয়মগুলো সিসি ফুটেজে আছে। যাহা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ তদন্ত করে দেখলেই প্রমাণ পাবেন বলে তারা জানান। বাজারের আরো অন্যান্য ব্যবসায়ীরা অত্যান্ত ক্ষোভের সহিত এই প্রতিনিধিকে বলেন, এ অগ্রণী ব্যাংকটি আগে খুব ভাল সেবা প্রদান করত। কিন্তু গত ক’ মাস ব্যাংকের হয়রানি বেড়ে গেছে। এত বড় একটা সরকারি ব্যাংকে একজন অযোগ্য ক্যাশিয়ার এবং একজন সাধারন গার্ড দায়িত্ব পালন করবে ক্যাশিয়ারের! সেটা আমরা মেনে নিতে পারি না। এদের বর্তমান সেবা প্রদানে আমরা অসন্তুষ্ট, তাই আমরা অন্য ব্যাংকে চলে এসেছি।
ব্যাংকের এসব অনিয়মের বিষয়ে নতুন ম্যানেজার মোঃ আবু তাহের পাটোয়ারীর সাথে কথা হলে তিনি বলেন, আমি নতুন এসেছি, ব্যাংকের কিছু অনিয়ম আমার চোখে পড়েছে, আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করে সমস্যাগুলো সমাধান করার চেষ্টা করব।
চাঁদপুর জেলা শাখার ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার (ডিজিএম) লক্ষণ চন্দ্র সিংহের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, আমি চাঁদপুরে নতুন এসেছি। অভিযোগগুলো যুক্তিযুক্ত” তিনি বিষয়গুলো খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেবেন বলে এই প্রতিনিধিকে জানান।
ক্যাপশন, অগ্রণী ব্যাংক বালিথুবা বাজার শাখায় ক্যাশ কাউন্টারে বহিরাগত লোক ডুকিয়ে খোশগল্পে মেতে আছেন ক্যাশিয়ার। ক্যাশিয়ারের কাজ নিয়ে ব্যস্ত আছেন সিকিউরিটি গার্ড সেলিম।