প্রেস বিজ্ঞপ্তি
রাজধানীর কোতোয়ালী, মতিঝিল, খিলগাঁও, রামপুরা, হাতিরঝিল, সবুজবাগ, শাহজাহানপুর ও ওয়ারীসহ বিভিন্ন এলাকা হতে সংঘবদ্ধ ছিনতাইকারী চক্রের মূলহোতাসহ মোট ৩২ জন সক্রিয় সদস্য গ্রেফতার; ছিনতাইয়ের কাজে ব্যবহৃত বিপুল পরিমাণ দেশীয় অস্ত্রসস্ত্র জব্দ করেছে র্যাব-৩।
সাম্প্রতিক সময়ে একটি সংঘবদ্ধ ছিনতাইকারী চক্র রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় ব্যাপক তোড়জোড় চালানোর পরিকল্পনা করছিল। সংঘবদ্ধ ছিনতাইকারী চক্রের তৎপরতা দিন দিন বেপরোয়াভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। ছিনতাইকারী চক্রের তৎপরতা বৃদ্ধির বিষয়টি ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ায় ব্যাপকভাবে প্রচারিত হওয়ার ফলশ্রæতিতে র্যাব উক্ত ছিনতাইকারীদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় নিয়ে আসতে গোয়েন্দা নজরদারী বৃদ্ধি করে। র্যাব-৩ বিগত ০৬ মাসে ছিনতাইকারীদের বিরুদ্ধে ৭৯টি অভিযান পরিচালনা করে ২৬৮ জন ছিনতাইকারীকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।
এরই ধারাবাহিকতায় ২৬/০২/২০২৩ তারিখ সন্ধ্যা হতে রাত পর্যন্ত র্যাব-৩ এর কয়েকটি আভিযানিক দল একযোগে রাজধানীর কোতোয়ালী, মতিঝিল, খিলগাঁও, রামপুরা, হাতিরঝিল, সবুজবাগ, শাহজাহানপুর ও ওয়ারী এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে সংঘবদ্ধ ছিনতাইকারী চক্রের মূলহোতা ১। মোহাব্বত মিয়া (৪০), পিতা-মৃত আঃ রশিদ মিয়া, সাং-বাহির গোলা, থানা-সিরাজগঞ্জ সদর, জেলা-সিরাজগঞ্জ এবং ২। মোঃ মাসুম (৩৫), পিতা-মৃত হানিফ মোল্লা, সাং-আজিমপুরা থানা-মুন্সীগঞ্জ সদর, জেলা-মুন্সীগঞ্জ ও তাদের সহযোগী ৩। ফজল খাঁ (৩২), পিতা-মৃত দৌলত খাঁ, সাং-বওলা, থানা-ফুলপুর, জেলা-ময়মনসিংহ, ৪। মোঃ সাইফ (৩০), পিতা-সাহাবুল্লাহ, সাং-লদুয়া, থানা-সেনবাগ, জেলা-নোয়াখালী, ৫। মোঃ আকাশ (২৪), পিতা-আবুল হাশেম, সাং-আলু বাজার হাজী ওসমান গণি রোড, থানা-বংশাল, ডিএমপি ঢাকা, ৬। মোঃ আবু বকর (২১), পিতা-মোঃ আব্দুল মতিন, সাং-দূর্গানগর, থানা-শ্রীমঙ্গল, জেলা-মৌলভীবাজার, ৭। মোঃ নজরুল ইসলাম (৪০), পিতা-নুর ইসলাম, সাং-বাদুরতলী, থানা-কলাপাড়া, জেলা-পটুয়াখালী, ৮। মোঃ আলমগীর (২২), পিতা-মৃত জাহাঙ্গীর, সাং-রাকুদিয়া, থানা-বাবুগঞ্জ, জেলা-বরিশাল, ৯। মোঃ জাহাঙ্গীর (২৮), পিতা-মৃত মমতাজ উদ্দিন, সাং-লক্ষীপুরা বাজার, থানা-মাদারীপুর সদর, জেলা-মাদারীপুর, ১০। মোঃ সোহেল (১৯), পিতা-মোঃ কিনা, সাং-আড্ডা, থানা-গোমস্তাপুর, জেলা-চাঁপাই নবাবগঞ্জ, ১১। মোঃ সোহেল (৩২), পিতা-মৃত মনজিল হোসেন, সাং-কলেজ পাড়া(মালিপাড়া), থানা-বোচাগঞ্জ, জেলা-দিনাজপুর, ১২। মোঃ সোহানুর রহমান সাগর (২০), পিতা-বকুল মন্ডল, সাং-কোয়েল(পাচন্দর), থানা-তানোর, জেলা-রাজশাহী, ১৩। মোঃ মামুন (১৯), পিতা-হযরত আলী, সাং-সোনার চর, থানা-মেঘনা, জেলা-কুমিল্লা, ১৪। লিটন(২১), পিতা-সগির মিয়া, সাং-দক্ষিন ভাংনাহাটি, থানা-শ্রীপুর, জেলা-গাজীপুর, ১৫। মোঃ আলমাস (২৮), পিতা-মৃত মনতাজ ফকির, সাং-পুটিয়ালী(কুষ্টিয়া), থানা-ময়মনসিংহ সদর, জেলা-ময়মনসিংহ, ১৬। সুজন মিয়া (২২), পিতা-শাহজাহান ওরফে বন্দা মিয়া, সাং-আচারগাঁও(পোড়াবাড়িয়া), থানা-নান্দাইল, জেলা-ময়মনসিংহ, ১৭। রাকিব (২৫), পিতা-দুলাল সরদার, সাং-নাগাইন (ধুলামূলগাঁও), থানা-পূর্বধলা, জেলা-নেত্রকোনা ১৮। মোঃ রিপন (২২), পিতা-মুজিবর, সাং-বংশাল থানা এলাকায় ভাসমান, থানা-বংশাল, ডিএমপি, ঢাকা, ১৯। মোঃ কালাম (৪০), পিতা-মৃত মনতাজ, সাং-বংশাল থানা এলাকায় ভাসমান, থানা-বংশাল, ডিএমপি, ঢাকা, ২০। মোঃ নজরুল ইসলাম (৪০), পিতা-মৃত শেখ আলাউদ্দিন, সাং-বংশাল থানা এলাকায় ভাসমান, থানা-বংশাল, ডিএমপি, ঢাকা ২১। মোঃ সুমন মৃধা (২৬), পিতা-মোঃ উজ্জল মৃধা, সাং-বগা, থানা-বাউফল, জেলা-পটুয়াখালী, ২২। অন্তর হোসেন রবিন (২৪), পিতা-মোঃ আবুল হোসেন, সাং-চান্দিভাঙ্গা ফরাজীকান্দি, থানা-মেঘনা, জেলা-কুমল্লিা ২৩। মোঃ আব্দুল রসুল (৩৮), পিতা-মোঃ কাউছার আলী মোড়ল, সাং-সখিপুর, থানা-দেবাভাটা, জেলা সাতক্ষীরা, ২৪। মোঃ কবির (২৫), পিতা-আব্দুর রশিদ মৃধা, সাং-কাশিপুর, থানা-কোতয়ালী, জেলা-বরিশাল, ২৫। মোঃ ছামিদুল রহমান (৩৪), পিতা-মোঃ আব্দুল খালেক, সাং-জাহাঙ্গীর গাঁও, থানা-গোয়ালাবাজার, জেলা-সুনামগঞ্জ, ২৬। ইকবাল হোসেন (২০) পিতা-কাশেম আক্তার, সাং-সদকখালী, থানা-করিমগঞ্জ, জেলা-কিশোরগঞ্জ, ২৭। কামরুল (২১), পিতা-সাইদুল হক, সাং-নজরুল, থানা-সেনবাগ, জেলা-নোয়াখালী, ২৮। শহীদুল ইসলাম উজ্জল (২৬), পিতা-মোঃ মোস্তফা, সাং-ধামুরা, থানা-উজিরপুর, জেলা-বরিশাল, ২৯। মোঃ কালু (২০), পিতা-মোঃ ওবায়দুর, সাং-খাটরা, থানা-ভাঙ্গা, জেলা-ফরিদপুর, ৩০। মোঃ সুমন (২৫), পিতা-মোঃ শাহজাহান খান, সাং-পার গেন্ডারিয়া, থানা-দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ, ঢাকা, ৩১। মোঃ হৃদয় (১৯), পিতা-মোঃ মজিবর, সাং-ভাসমান গুলিস্থান, থানা-পল্টন, ঢাকা, ৩২। মোঃ সাজিদ খান (১৯), পিতা-মোঃ বুলবুল, সাং-মধ্য করপাড়া, থানা-সদর, জেলা-গোপালগঞ্জদেরকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। গ্রেফতারকালে উক্ত আসামীদের নিকট হতে সুইচ গিয়ার, চাকু, ক্ষুর, এন্টিকাটার, কাঁচি, বেøড, মোবাইল ফোন এবং নগদ টাকাসহ বিপুল পরিমাণ দেশীয় অস্ত্রসস্ত্র জব্দ করা হয়।
গ্রেফতারকৃত আসামীদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, যেকোন উৎসবকে কেন্দ্র করে এদের তৎপরতা বাড়ে। সাম্প্রতিক সময়ে উদযাপিত আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে বিভিন্ন স্থানে জনসমাবেশকে কেন্দ্র করে এবং একুশে বই মেলাকে কেন্দ্র করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন এলাকায় প্রচুর লোকসমাগম হয়ে থাকে। এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে ছিনতাইয়ের মাধ্যমে জনসাধারণের জানমালের ক্ষতি করাই তাদের মূল লক্ষ্য। বেশ কিছুদিন যাবৎ বড় ধরনের ছিনতাইয়ের পূর্ব পরিকল্পনা মোতাবেক এ চক্রটি রাজধানীর কোতোয়ালী, মতিঝিল, খিলগাঁও, রামপুরা, হাতিরঝিল, সবুজবাগ, শাহজাহানপুর ও ওয়ারীসহ বিভিন্ন এলাকায় তৎপরতা চালিয়ে আসছিল। এছাড়াও বিভিন্ন ধরনের নাশকতামূলক কর্মকান্ড ঘটিয়ে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে ছিনতাই করারও পরিকল্পনা করে এই চক্রটি।
সাধারণত এসব এলাকায় ছিনতাইকারী এই চক্রটির সদস্যরা ঘোরাফেরা করতে থাকে। এছাড়াও সংঘবদ্ধ ছিনতাইকারী চক্রের অন্যান্য সদস্যরা বিভিন্ন অলি গলিতে ওৎপেতে থাকে। সুযোগ পাওয়া মাত্রই তারা পথচারী, রিকশা আরোহী, যানজটে থাকা সিএনজি, অটোরিকশার যাত্রীদের ধারালো অস্ত্র প্রদর্শন করে সর্বস্ব লুটে নেয়। সন্ধ্যা হতে ভোর পর্যন্ত তুলনামূলক জনশূন্য রাস্তা, লঞ্চঘাট, বাসস্ট্যান্ড, রেল স্টেশন এলাকায় ছিনতাইকারীরা বেপরোয়া হয়ে ওঠে।
তাদের ছিনতাইকাজে বাধা দিলে তারা নিরীহ পথচারীদের প্রাণঘাতী আঘাত করতে দ্বিধা বোধ করেনা। সাম্প্রতিক সময়ে রাজধানীর কোতোয়ালী, মতিঝিল, খিলগাঁও, রামপুরা, হাতিরঝিল, সবুজবাগ, শাহজাহানপুর ও ওয়ারী এলাকায় সন্ধ্যা হতে ভোর রাত পর্যন্ত ছিনতাইকারীদের বেশ তৎপরতা পরিলক্ষিত হওয়ায় সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে র্যাব-৩ এ সাঁড়াশি অভিযানটি পরিচালনা করে।
ছিনতাইকারী চক্রের সদস্যরা যেসকল ব্যক্তির কাছ থেকে ছিনতাই করবে তাদেরকে আগে থেকে অনুসরণ করতে থাকে এবং অনুসরণকৃত ব্যক্তির সাথে ছিনতাইকারী চক্রের সদস্যরা বিভিন্ন ধরনের কথা বলে থাকে। একপর্যায়ে কথা বলতে বলতে উক্ত ব্যক্তিকে সুবিধামতো কোনো জায়গায় নিয়ে যায় এবং সেখানে ছিনতাইকারী চক্রের অন্য সদস্যরা উপস্থিত হয়। চক্রের একজন সদস্য উক্ত ব্যক্তির সঙ্গে বিতর্কে জড়ায় ও মারধর শুরু করে।
লোকজন এগিয়ে আসলে বলে, নিজেদের মধ্যে ভুল-বোঝাবুঝির কারণে এ মারামারি। ততক্ষণে ছিনতাইয়ের কাজটি তাদের চক্রের কেউ একজন সেরে ফেলে। এছাড়াও তারা ছিনতাইয়ের কাজে বিভিন্ন অভিনব কৌশল অবলম্বন করে থাকে এবং ছিনতাইয়ের কাজে বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্র ব্যবহার করে। যখন কোন রিকশা অথবা সিএনজি আরোহী যাত্রীদেরকে টার্গেট করে তারা অন্য একটি রিক্সা অথবা সিএনজি নিয়ে উক্ত ব্যক্তির পিছনে যেতে থাকে। ছিনতাইকারীদের সুবিধামত স্থানে পৌঁছে যাত্রীকে এবং চালককে দেশীয় অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে রিক্সা ও সিএনজি যাত্রীর সর্বস্ব লুটে নেয়।
ছিনতাইকারীরা তাদের ছিনতাইকৃত অর্থ দিয়ে বিভিন্ন ধরনের নেশা করে এবং কেউ কেউ জীবিকা নির্বাহ করে থাকে। উক্ত চক্রের সদস্যদের অধিকাংশেরই রাজধানীতে বসবাসের জন্য স্থায়ী কোন বাসস্থান নেই। তারা সকলেই রাজধানীর বিভিন্ন বস্তিতে ভাসমান অবস্থায় বসবাস করে।
উক্ত চক্রের সদস্যদের মধ্যে প্রায় সকলের বিরুদ্ধে মাদক ও ছিনতাইসহ একাধিক মামলা রয়েছে। বিভিন্ন অপরাধে উক্ত চক্রের সদস্যরা আইন শৃঙ্খলা বাহিনী কর্তৃক ধৃত হওয়ার পর জামিনে মুক্ত হয়ে পুনরায় একই অপরাধে জড়ায় বলে জানায়। গ্রেফতারকৃত এই চক্রটির বেশ কয়েকজন সদস্য ইতিপূর্বেও র্যাব-৩ কর্তৃক গ্রেফতার হয়ে সাজা ভোগ করে কারাগার হতে মুক্তি পেয়ে পুনরায় ছিনতাই ও রাহাযানির মতো অপরাধমূলক কর্মকান্ডের সাথে আবারও যুক্ত হয়।
আপনারা দেখেছেন, যখনই রাজধানীতে ছিনতাইকারী চক্রের দৌরাত্ম বেড়ে যায় তখনই র্যাব-৩ বিশেষ অভিযান পরিচালনার মাধ্যমে তা নিবৃত্ত করে থাকে। ছিনতাইকারীদের বিরুদ্ধে র্যাবের সাড়াঁশি অভিযান চলমান রাখা এবং এসকল ছিনতাইকারীদের আইনের আওতায় আনার মাধ্যমে জনজীবনে স্বস্তি, মানুষের সুষ্ঠু ও নির্বিঘœ চলাচলা নিশ্চিত করাই আমাদের লক্ষ। রাজধানীবাসী এবং দেশের বিভিন্ন প্রান্ত হতে রাজধানীতে আগত যাত্রীরা যাতে নিরাপদে দৈনন্দিন কাজকর্ম সম্পন্ন করে নির্বিঘ্নে স্বস্তির সাথে বাড়ী ফিরে যেতে পারেন এলক্ষ্য নিয়ে সংঘবদ্ধ ছিনতাইকারী চক্রের বিরুদ্ধে র্যাবের সাড়াঁশি অভিযান অব্যাহত থাকবে।
ধৃত আসামীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
ফারজানা হক
সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার
স্টাফ অফিসার (মিডিয়া)
পক্ষে পরিচালক
প্রকাশক ও সম্পাদক মোঃ গোলাম মাওলা শাওন ০১৭১১-০০৬২১৪, ব্যবস্থাপনা সম্পাদক 01762119992, প্রধান কার্যালয় ৩৪ নুরজাহান শরীফ প্লাজা ৮ম তলা, পুরানা পল্টন ঢাকা ১০০০। ০১৯৯৯-৯৫৩৯৭০ নিউজ ই-মেইল [email protected] সিভি পাঠান: [email protected]