
মোঃ ছায়েদ হোসেন, রামগঞ্জ (লক্ষ্মীপুর) প্রতিনিধিঃ
মেঘমুক্ত আকাশ, সূর্যের চোখ রাঙানি। তীব্র তাপদাহের দাপটে অতিষ্ঠ হয়ে পরেছে জনজীবন। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বাড়ি থেকে বের হচ্ছেন না সাধারণ মানুষ। অতি গরমে দিশেহারা নিম্ন মধ্যবিত্ত ও খেটে খাওয়া মানুষরা। বৈশাখ মাসের তীব্র তাপদাহে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে রামগঞ্জের সাধারণ মানুষসহ খেটে খাওয়া শ্রমজীবী মানুষের জনজীবন। গত কয়েকদিন ধরে সূর্যের প্রখর তাপদাহে সাধারণ মানুষের পাশাপাশি গরমে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে প্রাণিকুল। বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া মানুষ ঘর থেকে বের হচ্ছে কম। বর্তমানে বাতাস পর্যাপ্ত জলীয়বাষ্প পাচ্ছে না। ফলে মেঘের সৃষ্টি হচ্ছে না। বাতাসে যে পরিমাণ হলে বৃষ্টি হয় সে পরিমাণ জলীয়বাষ্প নেই। এতে বৈশাখে যে পরিমাণ বৃষ্টি হওয়ার কথা সে পরিমাণ হচ্ছে না। দীর্ঘদিন ধরে প্রচন্ড তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ায় মানুষে জনজীবন অনেকটা বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে।
একদিকে রোধের প্রখর তাপ অন্যদিকে বিদ্যুতের ঘন ঘন তেলেশমাতি মানুষের জনজীবনে দুর্ভোগের নতুন মাত্রা সৃষ্টি হয়েছে। প্রচন্ড রোদের গরমে সাধারণ হতদরিদ্র মানুষরা জীবিকা নির্বাহের জন্য রাস্তায় বের হতে পারেনা। দুপুর হলে রাস্তাঘাটে লোকজনের সংখ্যা একেবারে কমে যায়। তীব্র গরমের কারণে দিনমজুর শ্রমিকরাও সহজে কাজে যেতে চায়না। এদিকে, তাপপ্রবাহে মানুষের হাঁসফাঁস অবস্থা। প্রখর রোদের মধ্যে বাইরে বের বের হচ্ছে ছাতা নিয়ে।
শ্রমিকদের তীব্র রোদে গামছা মাথায় দিয়ে কাজ করতে দেখা গেছে।
রামগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে বৃষ্টিপাত না হওয়ায় খাল বিল ও নদী নালাতেও পানি নেই, রৌদ্রের খরাতাপ আর খা খা মাঠ দেখে বুজার উপায় নাই এখন বাংলা বৈশাখ মাস। ভ্যাপসা গরমে অতিষ্ঠ হয়ে উঠছেন মানুষজন। গরমে মানুষ, পশু-পাখিসহ সব প্রাণীর স্বাভাবিক জীবনযাত্রা বিপর্যস্ত হয়ে পরেছে। প্রকৃতিতে সুনসান নীরবতা। নড়ছে না গাছের পাতাও। তীব্র গরমে অতিষ্ঠ হয়ে কর্মহীন করে তুলছে শ্রমজীবী মানুষদের। প্রকৃতির এই পরিবর্তনে অস্বস্তিতে রামগঞ্জ উপজেলার সাধারণ মানুষের জন জীবন। এদিকে তীব্র গরমে হাসপাতালগুলোতে রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি হচ্ছে। শিশু এবং বয়স্ক মানুষের প্রতি সতর্কতা অবলম্বন করার জন্য চিকিৎসকরা পরামর্শ দিচ্ছেন।
বিশেষ করে এই সময় কলেরা, ডায়রিয়া, হিট স্ট্রোক হতে পারে। স্থানীয় হাসপাতালগুলোতে রোগীদের উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে। গরম বাড়লে ডায়রিয়া-টাইফয়েডের মতো রোগের প্রকোপ স্বাভাবিকভাবেই বৃদ্ধি পায়। তবে এবার এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে ভিন্ন এক ধরনের জ্বর। এই জ্বরে আক্রান্ত কারও সংস্পর্শে গেলে অন্যরাও আক্রান্ত হচ্ছে। মানুষের শরীরে উপকারী, অপকারী এবং সুবিধাবাদী তিন ধরনের জীবাণু থাকে। যখন প্রকৃতির মধ্যে ভারসাম্য থাকে না, তখন এই সুবিধাবাদী জীবাণুগুলোর চরিত্র বদলে যায়, ক্ষতিকর রূপ ধারণ করে। ফলে নানা সংক্রামক রোগ বাড়ে।
পথচারী ইয়াছিন বলেন, প্রচণ্ড গরম হওয়ায় বাইরে বের হওয়ায় অনেক কষ্ট হয়। জরুরি প্রয়োজনের কারণেই বাইরে বের হওয়া। এ সময়ে বৃষ্টি হলে অনেক ভালো হত।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. গুনময় পোদ্দার বলেন, তাপপ্রবাহের কারণে জ্বর-সর্দি ও ডাইরিয়া রোগী হাসপাতালে এসে চিকিৎসাসেবা নিয়ে বাড়িতে যাচ্ছেন। প্রচণ্ড তাপদাহ থেকে রক্ষা পেতে বেশি বেশি করে ডাবের পানিসহ বিশুদ্ধ পানি পান করতে হবে। বিশেষ করে শিশু ও বৃদ্ধের বাড়তি যত্ন নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। এরপরেও আমরা প্রস্তুত আছি।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, দেশের কয়েকটি বিভাগ ও জেলার ওপর দিয়ে মৃদু তাপপ্রবাহ বইছে, যা আরও কিছুদিন অব্যাহত থাকবে। মাঝে মাঝে কয়েক মিনিটের জন্য হালকা বৃষ্টি হলেও এতে গরম কমবে না বরং আরও বাড়বে।