
সংবাদ বিজ্ঞপ্তি
সিলেট এর বিভিন্ন স্থান থেকে সংঘবদ্ধ ছিনতাইকারী চক্রের ১২ জন সক্রিয় সদস্যকে গ্রেফতার করেছে র্যাব-৯, সিলেট।
র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) এলিট ফোর্স হিসেবে আত্মপ্রকাশের সূচনালগ্ন থেকেই বিভিন্ন ধরনের নৃশংস ও ঘৃণ্যতম অপরাধ বিশেষ করে মাদক উদ্ধার, ধর্ষণ, হত্যা মামলা, জঙ্গি দমন, সন্ত্রাসী, অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার, ডাকাত, চাঁদাবাজ, কিশোর গ্যাং ও ছিনতাইকারীসহ বিভিন্ন অপরাধীদের গ্রেফতারে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে আসছে। যে কোন ধরনের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় র্যাবের প্রতিটি সদস্য প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হয়ে জনসাধারণের জন্য একটি নিরাপদ বাসযোগ্য সমাজ তথা দেশ বিনির্মাণে নিরলস ভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
পবিত্র মাহে রমজান এবং আসন্ন ঈদুল ফিতরকে কেন্দ্র করে সাম্প্রতিক সময়ে সিলেটসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে কিশোর গ্যাং, চাঁদাবাজ, অজ্ঞান পার্টি, মলম পার্টি ও ছিনতাইকারী চক্রের তৎপরতা বেপরোয়াভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। ছিনতাইকারী চক্রের সদস্যরা নিরীহ মানুষকে অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে টাকা- পয়সা, ব্যাগ, মোবাইল, স্বর্ণালংকারসহ বিভিন্ন মূল্যবান দ্রব্যাদি ছিনতাই করে জনজীবন অতিষ্ঠ করে তুলছে। এরই প্রেক্ষিতে ছিনতাইকারী চক্রের সদস্যদের গ্রেফতারের মাধ্যমে আইনের আওতায় আনতে র্যাব- ৯, সিলেট গোয়েন্দা নজরদারী বৃদ্ধি করে এবং শহরের বিভিন্ন এলাকায় ছিনতাই এর সাথে জড়িত সংঘবদ্ধ চক্রকে সনাক্ত করতে সক্ষম হয়।
এরই ধারাবাহিকতায় প্রাপ্ত গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে র্যাব-৯, সিলেট এর একাধিক আভিযানিক দল অদ্য ২৭ মার্চ ২০২৪ খ্রিঃ তারিখ সিলেট মহানগরীর বন্দর বাজার, চৌহাট্টা পয়েন্ট, মহাজনপট্টি, রেলস্টেশন ও শহরের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে সংঘবদ্ধ ছিনতাই চক্রের ১২ জন সক্রিয় সদস্যকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।
গ্রেফতারকৃতদের প্রাথমিক অনুসন্ধানে জানা যায় যে, সিলেট শহরের বিভিন্ন জনবহুল এলাকায় একাধিক সংঘবদ্ধ ছিনতাইকারী চক্র সক্রিয় রয়েছে। এসব ছিনতাইকারী সাধারণ পথচারী, রিকশা আরোহী, সিএনজি আরোহী, যানজটে থাকা যানবাহনের যাত্রীদের টার্গেট করে তাদের সুবিধাজনক স্থান ও সময়ে ছিনতাই কার্যক্রম পরিচালনা করে। সিএনজিতে যাত্রী বেশে অবস্থান নিয়ে সুবিধাজনক স্থানে সিএনজি থামিয়ে সিএনজিতে থাকা অন্যান্য যাত্রীদের কাছ থেকে মোবাইল, মানিব্যাগ কিংবা পার্স ছিনিয়ে নেয়। সাধারণত ইফতারের কিছু পূর্বে এবং ইফতারের পরে বিভিন্ন মার্কেট ও জনবহুল স্থানে ছিনতাই এর ঘটনা ঘটে। ছিনতাইকারীদের নেতৃত্বে রয়েছে উঠতি বয়সি কিছু তরুণ।
এরা নগরীর বিভিন্ন স্থানে, পাড়া মহল্লায় আড্ডা দেয়। সুযোগ বুঝে তারা ছিনতাইসহ বিভিন্ন অপরাধ সংঘটিত করে। অনেক সময় তারা ভিকটিমকে ভয়ভীতি কিংবা ধারালো অস্ত্র প্রদর্শন করে সর্বস্ব লুটে নেয় এবং বাধা দিলে প্রাণঘাতী আঘাত করতেও দ্বিধাবোধ করে না। খুবই অল্প সময়ে ছিনতাই শেষে ছিনতাইকারীরা দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। ছিনতাইকারী চক্রের সদস্যরা ছিনতাইকৃত অর্থ দিয়ে মাদকদ্রব্য সেবন বা অনেকেই জীবিকা নির্বাহ করে থাকে।
গ্রেফতারকৃত ব্যক্তিরা- ১। আব্দুল হালিম (৬০), পিতা- মৃত আব্দুর রাজ্জাক, সাং- ইসলামপুর, থানা- তাহিরপুর, জেলা- সুনামগঞ্জ, ২। জীবন আহমেদ (২১), পিতা- নুরুল ইসলাম, সাং- টেকারঘাট, থানা- তাহিরপুর, জেলা- সুনামগঞ্জ, ৩। আল ইসলাম (৩২), পিতা- মৃত আফাজ উদ্দিন, সাং- গুলগাঁও, থানা- বিশ^ম্ভরপুর, জেলা- সুনামগঞ্জ, ৪। উজ্জল মিয়া (৩৫), পিতা- আব্দুর কাদির, সাং- শান্তিপুর, থানা- ধর্মপাশা, জেলা- সুনামগঞ্জ, ৫। রুয়েল (২৫), পিতা- মৃত কুদ্দুস মিয়া, সাং- বাঘাসুরা, থানা- মাধবপুর, জেলা- হবিগঞ্জ, ৬। সোহেল আহমেদ (৩৯), পিতা- মৃত সোহরাব আলী, সাং- ইসলামপুর, থানা- ছাতক, জেলা- সুনামগঞ্জ, ৭। ছালিম চৌধুরী, পিতা- মস্তর আলী, সাং- চকিদিঘি, থানা- এয়ারপোর্ট, জেলা- সিলেট, ৮। শফিকুল ইসলাম (৩৫), পিতা- মৃত ছিদ্দিক আলী, সাং- পূর্ব নিশ্চিতপুর, থানা- তাহিরপুর, জেলা- সুনামগঞ্জ, ৯। জহুর বাদশা (৩২), পিতা- মৃত ফজর আলী, সাং- রাজাপাশা, থানা- ধর্মপাশা, জেলা- সুনামগঞ্জ, ১০। মোঃ জিহাদ আহমেদ (১৬), পিতা- ময়না মিয়া, সাং- ছড়ারপাড়, থানা- কোতয়ালী, জেলা- সিলেট, ১১। বাবুল (২৫), পিতা- মৃত ফরিদ মিয়া, সাং- লক্ষীপাশা, থানা- গোলাপগঞ্জ, জেলা- সিলেট এবং ১২। জাকির ওরফে ইমন (২০), পিতা- কালা মিয়া, সাং- কোন্দের আলী (নিমনগর), থানা- পঞ্চগড়, জেলা- পঞ্চগড়।
গ্রেফতারকালে তাদের নিকট হতে সুইচ গিয়ার, চাকু, এন্টিকাটার, কাঁচি, ব্লেড, মোবাইল ফোন, নগদ টাকা এবং সিএনজি জব্দ করা হয়। উক্ত চক্রের সদস্যদের মধ্যে প্রায় সকলের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় মাদক ও ছিনতাইসহ একধিক মামলা রয়েছে। ৬। পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের লক্ষ্যে গ্রেফতারকৃতদের সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন।
আসন্ন ঈদে সিলেটবাসী এবং দেশের বিভিন্ন প্রান্ত হতে সিলেটে আগত ও সিলেট হতে পরিবারের সঙ্গে ঈদ করতে যাওয়া ব্যক্তিরা যাতে নিরাপদে ঈদের কেনাকাটা করে নির্বিঘেু বাড়ি যেতে পারে এ লক্ষ্যে ছিনতাইকারী চক্রের বিরুদ্ধে র্যাব-৯, সিলেট এর গোয়েন্দা তৎপরতা এবং চলমান অভিযান অব্যাহত থাকবে।