
মোঃ সোহাগ খান, কুয়াকাটা পটুয়াখালী প্রতিনিধিঃ
কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতে ফের ভেসে আসছে হাজার হাজার মৃত্যু জেলিফিশ।
পটুয়াখালীর কুয়াকাটা সৈকতের বিভিন্ন যায়গায় স্তুপে স্তুপে পড়ে আছে হাজার হাজার জেলিফিশ ফিস। গত এক সপ্তাহ পর্যন্ত সৈকতের বিভিন্ন পয়েন্টে অসংখ্য মরা জেলিফিশ বালুতে আটকে থাকতে দেখা গেছে।
এসব মাছের মধ্যে কোনোটা আকারে ছোট, কোনোটা বড়। বিভিন্ন আকারে দেখতে অনেকটা অক্টোপাসের মতো। তবে বঙ্গোপসাগরের পানিতে লবণাক্ততা বেড়ে যাওয়ায় জোয়ারের পানির সঙ্গে ভেসে আসছে বলে মনে করছে মৎস কর্মকর্তাসহ জেলেরা।
জেলে মধু মিয়া বলেন, সমুদ্রে এত পরিমান জেলিফিশ বেড়েছে যে সাগরে জাল দিতে পারছে না। জাল ফেলার সাথে সাথে জেলিফিশে ভরে যায় তাদের জাল। ফলে জাল কেটে দিতে হয় অথবা জাল গুটিয়ে তীরে নিয়ে আসতে হয়।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, কুয়াকাটা সৈকতের দীর্ঘ ১৮ কিলোমিটার সৈকতের একাধিক পয়েন্টে জোয়ারের পানির সঙ্গে অসংখ্য মরা জেলিফিশ ভেসে এসে আটকা পড়েছে। সৈকতে এভাবে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকলে গোটা সৈকতে দুর্গন্ধ ছড়ানোর আশঙ্কা রয়েছে।
স্থানীয় জেলেদের কাছে জেলিফিশ সাগরের ‘লোনা’ হিসেবে পরিচিত। গভীর সমুদ্রে জেলেদের জালে এসব জেলিফিশ আটকা পড়ে মারা যেতে পারে বলে ধারণা স্থানীয়দের। তবে জোয়ারের পানির সাথে জেলিফিশ গুলো ওঠা নামা করে বলে জানান।
স্থানীয় জেলে মোঃ ইয়াছিন খান বলেন, গত এক সপ্তাহ ধরে তাদের জালে বিপুল পরিমাণ জেলিফিশ ধরা পড়েছিল। তারা জাল থেকে সমুদ্রে ফেলে দিয়েছে।
অনেক জাল কেটে দিয়ে আসছে শুধু তারাই নয় বর্তমানে জেলিফিশ সমুদ্রে এতটাই বেড়েছে যে, জেলেরা বাধ্য হয়ে সমুদ্র থেকে জাল উঠিয়ে নিয়ে আসছে।
এদিকে ফিশারিজ বিভাগের গবেষকদের মতে, জেলিফিশ গভীর সমুদ্রের মাছ। সমুদ্রের পানিতে কোনো বিপর্যয় বা পরিবর্তনের প্রভাবে উপকূলের কাছাকাছি চলে আসাটাই শঙ্কা। জেলিফিশ বিভিন্ন প্রজাতির প্রাণি। একটি প্রজাতি মিঠাপানিতে পাওয়া যায়। এরা সাধারণত পানির ওপর ভাগে ভাসমান অবস্থায় থাকে। গভীর সমুদ্রে জেলিফিশের হরেক রকম জাত রয়েছে। এদের বিশেষ ধরণের দংশন কোষ আছে।
যাকে ইরেজিতে- jellyfish (জেলিফিশ) বলে। বহির্বিশ্বে এটার বাজারমূল্য অনেক বেশি। এখান থেকে রপ্তানি করতে পারলে অর্থনৈতিক ভাবে লাভবান হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে। পাশাপাশি এগুলো সমুদ্রের তটে পড়ে থাকার সম্ভাবনা থাকবেবা।
তথ্য বলছে, উন্নতমানের হোটেলে উৎকৃষ্টমানের খাবার হিসেবে বিক্রি হয় এই মাছ। এগুলো স্পর্শ করলে শরীর চুলকায়, এমনকি ঘা হয়ে যেতে পারে। বিশেষ কোষের কামড়ে মানুষ মারাও যেতে পারে। কুয়াকাটা সৈকতে আটকে মরে যাওয়া জেলিফিশগুলো পঁচে গন্ধ ছড়িয়ে পরিবেশ দূষিত করতে পারে বলে আশঙ্কা রয়েছে। তাই কাঠ বা লোহা দিয়ে তুলে এ মাছগুলো বালুতে পুঁতে ফেলা উচিত।
কলাপাড়া উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা অপু সাহা দৈনিক বাংলার আলো নিউজকে বলেন, গত কয়েক দিন থেকে এসব জেলিফিশ উপকূলের কাছাকাছি এসে জেলেদের জালে আটকা পড়েছে। পরে জেলেরা মাছগুলো ফেলে দেয়ায় মরা মাছ কুয়াকাটা সৈকতের বেলাভূমিতে আসতে শুরু করেছে। তবে আবহাওয়ার পরিবর্তন হলে সবকিছু ঠিক হয়যাবে। জেলিফিশ সমুদ্রে বেড়ে যাওয়ায় সমুদ্র থেকে বর্তমানে জেলেরা জাল উঠিয়ে রাখতেছে।