
নিজস্ব প্রতিবেদক:-
চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার মো. তোফায়েল ইসলাম বলেছেন, প্রায় সময় দেখা যায় প্রবাসীরা অক্লান্ত পরিশ্রমের বিনিময়ে কষ্টার্জিত অর্থ দেশে পাঠায় এবং সে অর্থে পরিবার স্বাবলম্বী হয়। যখন সে মানুষটি নিঃস্ব হয়ে দেশে ফিরে তখন পরিবারের সদস্যরা তাকে বিমান বন্দর থেকে আনতেও অসম্মতি জানায়। সে পরিবার ও সমাজের কাছে বঞ্চনার শিকার হতে হচ্ছে। এই সমস্যা থেকে উত্তরণের কথা চিন্তা করে বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থার আওতায় প্রবাস স্কিম চালু করেছেন।
প্রবাস স্কিমে চাঁদা প্রদান করলে ভবিষ্যতে প্রবাসীর আর্থিক নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে, ভবিষ্যতে প্রবাসী যখন কর্মহীন হবে তখন এ অর্থ ব্যয় করতে পারবে। তিনি চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার দপ্তরের উদ্যোগে ওয়েলফেয়ার সেন্টার, ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ড, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় এর সহযোগিতায় বিদেশ প্রত্যাগত কর্মীর কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি ও পুনঃএকত্রীকরণের (রি-ইন্টিগ্রেশন) লক্ষ্যে মাঠ পর্যায়ের প্রতিষ্ঠানসমূহের কার্যকর সমন্বয় নিশ্চিতকরণ বিষয়ে সোমবার ২২ এপ্রিল নগরীর সার্কিট হাউজে আয়োজিত সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এ কথা বলেন।
বিভাগীয় কমিশনার বলেন, নিবন্ধনের মাধ্যমে বিদেশগামী যাত্রীদের সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থার প্রবাস স্কিমের আওতাভুক্ত হতে উদ্বুদ্ধ করতে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের অনুরোধ জানান। এতে করে তারা সব হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে দেশে ফিরলে কিংবা বৃদ্ধ বয়সে পরিবার ও সমাজের কাছে হেয় প্রতিপন্ন হতে হবে না।
সভাপতির বক্তব্যে ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ড এর পরিচালক (অর্থ ও কল্যাণ) শোয়াইব আহমাদ খান বলেন, চট্টগ্রামে প্রসাবসীদের সকল সেবা একই ছাতার নিচে আনার লক্ষ্যে প্রথমবারের মতো প্রবাসী কল্যাণ ভবন হবে শীঘ্রই।
তিনি বলেন, ওয়েলফেয়ার সেন্টারের মাধ্যমে প্রত্যাগত কর্মী নির্বাচন ও নিবন্ধন, ওরিয়েন্টেশন মনোসামাজিক এবং অর্থনৈতিক পরামর্শ প্রদান, রেফারেল এর আওতায় কর্মীদের দক্ষতা ও উদ্যোক্তা তৈরি, কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টির লক্ষ্যে ঋণ প্রাপ্তিতে সহযোগিতা করা, ফেরত দক্ষ কর্মীদের RPL (Recognition of Prior Learning) এর আওতায় দক্ষতা সনদ প্রদান, নির্বাচিত কর্মীদের নগদ প্রণোদনা, প্রত্যাগত কর্মীদের তথ্য সংবলিত ডাটাবেজ তৈরি ও রেফারেল মনিটরিং নিশ্চিত করা হচ্ছে। ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ড এর পরিচালক (অর্থ ও কল্যাণ) শোয়াইব আহমাদ খান এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় অতিরিক্ত ডিআইজি প্রবীর কুমার রায় পিপিএম (বার), উপপুলিশ কমিশনার (ক্রাইম এন্ড অপারেশন) নিস্কৃতি চাকমা, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) রাকিব হাসান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কবীর আহম্মেদ বক্তৃতা করেন।
সভায় সরকারি, বেসরকারি ও এনজিও প্রতিষ্ঠানের উর্ধতন কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।সভায় বক্তারা বিদেশ প্রত্যাগত কর্মীদের দক্ষতা যাচাই পূর্বক দেশে চলমান মেগা প্রকল্পে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা গেলে কর্মীদের বেকারত্ব নিরসনের পাশা পাশি দেশও অর্থনৈতিক ভাবে সমৃদ্ধ হবে বলে প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন।
একজন বিদেশ প্রত্যাগত কর্মী তার ইমিগ্রেশন ক্লিয়ারেন্স পাসপোর্ট বা আউট-পাস বা বিমান টিকিট বা বোডিং কার্ড বা ফেরত সংক্রান্ত কোন প্রমাণক ও জাতীয় পরিচয় পত্র বা জন্ম নিবন্ধন সনদ এবং ছবি দিয়ে ওয়েলফেয়ার সেন্টারে তার নিবন্ধন নিশ্চিত করতে পারবে।
উল্লেখ্য, নিবন্ধনের জন্য ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডে মাধ্যমে সরকারিভাবে সারা দেশে ৩০টি ওয়েলফেয়ার সেন্টার স্থাপন করা হয়েছে।