
জেলা প্রতিনিধি, পঞ্চগড় ।।
এবার তাপ প্রবাহের কবলে পড়েছে দেশের উত্তরের জেলা পঞ্চগড়েও। পঞ্চগড়ে বইছে মাঝারি তাপপ্রবাহ। দুই দিনের ব্যবধানে দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা বেড়েছে সাড়ে ৫ ডিগ্রী (৫ দশমিক ৫ ডিগ্রী) সেলসিয়াস।
বুধবার বিকেল তিনটায় জেলায় মৌসূমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৮ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করে তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার। গত এক সপ্তাহ ধরে এখানকার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩১-৩৪ ডিগ্রি সেলসিয়ামের মধ্যে রেকর্ড করা হলেও প্রখর রোদের কারণে বুধবার দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। এর আগে গত ১৬ এপ্রিল সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৬ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছিল।
আবহাওয়া অফিসের হিসাবে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৬-৩৭.৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস হলে সেটি মৃদু, সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৮-৩৯.৯ হলে মাঝারী, সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪০-৪১.৯ হলে তীব্র এবং সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪২+ হলে অতি তীব্র তাপ প্রবাহ ধরে নেয়া হয়। তাদের হিসাবে গতকাল মঙ্গলবার পর্যন্ত পঞ্চগড়ের ওপর দিয়ে মৃদু তাপ প্রবাহ বয়ে যাচ্ছিল।
এদিকে বুধবার সকাল ৯ টায় দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ২০ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয় পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার।
এদিকে হঠাৎ করে তাপ প্রবাহ শুরু হওয়ায় বিপাকে পড়েছে পঞ্চগড়ের মানুষজন। বিশেষ করে খেটে খাওয়া শ্রমজীবী মানুষগুলোর এখন হাঁসফাঁস অবস্থা। পেটে তাগিদে প্রচন্ড গরমের মধ্যেও তারা তাদের কাজ করে যাচ্ছে। বুধবার দুপুরের পর ফাঁকা হয়ে যেতে থাকে বাজার-ঘাট। প্রয়োজন ছাড়া কেউ ঘর থেকে বের হয়নি। আর আকাশে মেঘ জমলেও দীর্ঘদিন ধরে অনাবৃষ্টি থাকায় চা উৎপাদনে ধ্বস নেমেছে। কাঁচা চা পাতার ন্যায্যমূল্য না পেলেও নিয়মিত সেচ দিতে হচ্ছে চা বাগানে।
এরপর শেষ রক্ষা হচ্ছে না। প্রখর রোদে ঝলসে যাচ্ছে চা গাছ। শুধু চা নয়; উঠতি ফসলের মধ্যে ধান, মরিচ, ভূট্টা, চিনা বাদাম, টমেটোসহ অন্যান্য ফসলের চরম ক্ষতি হচ্ছে। এতে করে উৎপাদন খরচ বেড়ে যাওয়াসহ উৎপাদনও অনেক কমে যেতে পারে বলে জানিয়েছেন কৃষকরা।
তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রাসেল শাহ জানান, বুধবার বিকেল ৩ টায় এখানে মৌসূমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৮ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। রাতের তাপমাত্রা কিছুটা কম হলেও বেড়ে চলেছে দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা। বৃষ্টি না হওয়া পর্যন্ত সর্বোচ্চ তাপমাত্রা আরও বাড়বে বলে তিনি আশঙ্খা প্রকাশ করেছেন।
তীব্র গরম থেকে মুক্তি আশায় পঞ্চগড়ে ইস্তিসকার নামাজ আদায় করেছেন স্থানীয় মুসল্লিরা। নামাজ শেষে বৃষ্টি চেয়ে বিশেষ মোনাজাত করা হয়।
বুধবার (২৪ এপ্রিল) বেলা ১১ টার দিকে সদর উপজেলার কামাত কাজলদিঘী ইউনিয়নের তালমা ঈদগাহ মাঠে ঘন্টাব্যাপী এ নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। নির্ধারিত সময়ের আগেই মাঠে জড়ো হন স্থানীয় মুসল্লিরা। নামাজ শেষে সকলেই মহান আল্লাহ পাকের দরবারে মাফ চেয়ে এবং তীব্র গরম থেকে মুক্তিসহ বৃষ্টি চেয়ে কান্নাকাটি করেন।
নামাজে ইমামতি করেন চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি জামিয়া আরাবিয়া ইমদাদুল উলুম মাদ্রাসার প্রধান মুফতি মো. আইয়ুব বিন কাসেম।