
রিয়াদ মাহমুদ সিকদার, কাউখালী (পিরোজপুর) প্রতিনিধি।
পিরোজপুরের কাউখালীতে বিভিন্ন প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে শিক্ষার্থীর সংখ্যা দিন দিন কমে যাচ্ছে। উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়নে বিভিন্ন প্রাথমিক বিদ্যালয় ঘোরে এমন চিত্র দেখা গেছে। বিদ্যালয় সংশ্লিষ্টরা বলছেন শিক্ষার্থীরা বর্তমানে মাদ্রাসা শিক্ষায় ঝুঁকে পড়ছে। এ কারণে আগের তুলনায় শিক্ষার্থীর সংখ্যা অনেক কমে গেছে। বিভিন্ন এলাকার অভিভাবকরা সন্তানদের ইসলাম শিক্ষা দিয়ে পরবর্তী সময় বিদ্যালয়ের ভর্তি করাচ্ছেন।
জানা গেছে, অত্র উপজেলায় প্রায় অর্ধশত নূরানী মাদ্রাসাসহ হাফিজি, কওমি, নূরানী হেফজখানা রয়েছে রয়েছে। এগুলো নিজস্ব তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হয়ে আসছে। উপজেলার বিভিন্ন বাসা বাড়ি কিংবা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ভাড়া নিয়ে এসব প্রতিষ্ঠান চলছে। এ সকল প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীরা নিজেরা টাকা দিয়ে পড়াশোনা করছেন।
নূরানী মাদ্রাসায় পড়ুয়া শিক্ষার্থীর অভিভাবক মোঃ নুরুজ্জামান, নাসরিন বেগম ও খাদিজা খাতুন বলেন, সন্তান মাদ্রাসায় দিয়েছি। বাংলা, ইংরেজি, অংক, আরবি, সাধারণ জ্ঞান ভালোভাবে জানবে তারপর আমরা প্রাথমিক বিদ্যালয় সহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছেলেমেয়েদের ভর্তি করিয়ে দিব।
অভিভাবকরা বলেন নূরানী মাদ্রাসার শিক্ষকরা নিয়মিত বাচ্চাদের পাঠদান করেন ও বাড়িতে গিয়ে খোঁজ খবর রাখেন। উপজেলার উজিয়াল খান নূরানী তালিমুল কোরআন মাদ্রাসায় পেল্লে থেকে তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত শতাধিক শিক্ষার্থী রয়েছে, নাঙ্গুলী নূরানী মাদ্রাসায় প্রায় ১৫০জন শিক্ষার্থী রয়েছে, কাউখালী সদরে অবস্থিত আশরাফুল উলুম মাদ্রাসা প্রধান শিক্ষক মাওলানা মোঃ মহিবুল্লাহ বলেন, তার মাদ্রাসায় পেলে থেকে তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত মোট ১৭০ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। শিক্ষকের সংখ্যা সাত জন।
অত্র মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক বলেন, আমরা ছাত্রছাত্রীদের যথাযথভাবে শিক্ষা দিয়ে থাকি, আমাদের শিক্ষকরা ক্লাসে যেভাবে পাঠদান করেন তাতে কোন শিক্ষার্থীদের আলাদাভাবে প্রাইভেট পড়ার কোন দরকার হয় না। আমরা মাঝে মাঝে ছাত্রছাত্রীদের বাড়িতে গিয়ে খোঁজখবর নেই এবং মাঝে মাঝে অভিভাবকদের অবগত করি।
এদিকে কাউখালী উপজেলার ৫৮ নং মুক্তার কাঠি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ছাত্রছাত্রী সংখ্যা মাত্র ৩০ জন ও ৬ নং জব্দকাঠি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রী সংখ্যা মাত্র ২০ জন। অথচ প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষকরা সরকারি ভাবে বেতন সহ বিভিন্ন ভাতা পাচ্ছে অন্যদিকে নূরানী শিক্ষার্থীরা টাকার বিনিময়ে ক্লাসে লেখাপড়া করেন।
শিক্ষক নেতা হাবিবুল্লাহ ফকির বলেন, আমরা বিদ্যালয়ে ছাত্র-ছাত্রী বাড়াবার জন্য চেষ্টা চালাচ্ছি। করোনা সময় স্কুল বন্ধ থাকার কারণে অনেক অভিভাবক তখন তাদের ছেলেমেয়েদের নূরানী মাদ্রাসায় ভর্তি করেছেন এখন তারা ওখান থেকে আর ফেরত আনছে না।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মুনিবুর রহমান বলেন, করোনা কালীন সময়ে প্রাথমিক বিদ্যালয় বন্ধ ছিল ও নূরানী মাদ্রাসা খোলা ছিল তখন অভিভাবকরা তাদের ছেলেমেয়েদের নূরানী মাদ্রাসায় ভর্তি করেছে এবং ধর্মীয় একটা ব্যাপার আছে। অধিকাংশ অভিভাবকদের ইচ্ছে তারা তাদের ছেলেমেয়েদের লেখাপড়া পাশাপাশি ধর্মীয় শিক্ষার উপর গুরুত্ব দেন। যার কারণে তারা নূরানী মাদ্রাসায় তাদের ছেলেমেয়েদের ভর্তি করাচ্ছেন।