
মোঃ নুরনবী ইসলাম, খানসামা (দিনাজপুর) প্রতিনিধি :
দিনাজপুরের খানসামা উপজেলার কৃষি অর্থনীতিতে নতুন করে যোগ হয়েছে জাপানের মিষ্টি আলু ‘ওকিনিয়া’ ও ‘মুরাসাকি’। পরীক্ষামূলকভাবে উপজেলার ৬ ইউনিয়নের ২০ জন কৃষক ২০ শতক করে জমিতে চাষ করেছে এই জাতের আলু। দেশি মিষ্টি আলুর চেয়ে জাপানি জাতের এই আলুর ফলন দ্বিগুন হওয়ায় চাষীদের আগ্রহ বাড়ছে।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, মানুষের খাদ্যের তালিকায় ভিন্নতা, চাহিদা ও পুষ্টিমান বিবেচনায় রেখে চলতি মৌসুমে পরীক্ষামূলকভাবে চাষ করা হয়েছে জাপানি মিষ্টি আলু ‘ওকিনিয়া’ ও ‘মুরাসাকি’। কন্দাল ফসল উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় কৃষি বিভাগ জাপানী কাটিং, রাসায়নিক সার ও পরিচর্যা বাবদ সহায়তা প্রদান করে ২০ জন কৃষকের ২০ শতক করে জমিতে মিষ্টি আলুর চাষ হয়েছে। সাধারণত দেশি জাতের মিষ্টি আলু শতক প্রতি ১-১.৫ মন ফলন হলেও জাপানি জাতের নতুন আলুর ফলন হবে শতক প্রতি ৩-৪ মন।
হোসেনপুর গ্রামের মিষ্টিআলু চাষি খোদেজা বেগম ও আলতাফুর রহমান জানান, আমরা যৌথভাবে প্রথম বারের মত জাপানি জাতের মিষ্টিআলু আবাদ করেছি। চলতি মৌসুমে কৃষি বিভাগের সহায়তায় তারা যৌথভাবে ৪০ শতক জমিতে জাপানি জাতের মিষ্টি আলু চাষ করেছে। দেশি আলুর চেয়ে ফলন পেয়েছে প্রায় দ্বিগুণ। আকর্ষণীয় রঙ হওয়ার কারণে এই জাতের আলুর চাহিদা অনেক বেশি। আগামী মৌসুমে সে ১ একর জমিতে এই জাতের আলু চাষ করবে বলে আশা প্রকাশ করেছে।
একই এলাকার হাফিজুল ইসলাম বলেন, এবার ২০শতক জমিতে চাষ করেছেন জাপানি জাতের মিষ্টি আলু। উচ্চ ফলনশীল এই জাতের আলু চাষ করে তিনি সন্তুষ্টি প্রকাশ করে জানান, আমার দেখাদেখি অন্য কৃষকরাও আগামী মৌসুমে এই জাতের আলু চাষ করার আগ্রহ দেখিয়েছেন।
উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মৃনাল কান্তি জানান, কন্দাল ফসল উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় চাষিদের উদ্বুদ্ধ করে পরীক্ষামূলক চাষ করা হয়েছে। এই আলুর ফলন অনেক বেশি ও অধিক পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ। এ কারণে কৃষকরা আগ্রহী হওয়ায় আগামী মৌসুমে এই জাতের আলুর চাষ আরও সম্প্রসারিত হবে বলে জানান তিনি।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা বাসুদেব রায় জানান, চলতি মৌসুমে পরীক্ষামূলকভাবে জাপানি নতুন জাতের আলুর চাষ হয়েছে। উচ্চ ফলনশীল ও পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ জাপানি এ মিষ্টি আলুর আবাদ করে কৃষকরা খুশি। কৃষক প্রতি এ মিষ্টি আলু চাষ করে খরচ বাদে ৩০-৩৫ হাজার টাকা করে লাভ করতে পারবে। আগামী মৌসুমে আরও অধিক জমিতে এই জাতের আলু চাষ করার আগ্রহ দেখিয়েছেন স্থানীয় চাষিরা। এতে উপজেলায় মিষ্টি আলুর চাষ আরও সম্প্রসারিত হবে। কৃষি বিভাগ থেকে স্থানীয় চাষিদের প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ, প্রযুক্তিগত সুবিধাসহ উন্নতমানের বীজ সরবরাহ করা হয়েছে।