
মোঃ ছায়েদ হোসেন, রামগঞ্জ (লক্ষ্মীপুর) প্রতিনিধিঃ
সময়ের আবর্তনে আবারও চলে এল শীত। চারপাশের হিম শীতল বাতাস যার আগমনী বার্তা পৌঁছে দিচ্ছে সবার মাঝে। পৌষ আর মাঘ মাস মূলত শীতকাল হলেও প্রকৃতিতে শীতের আনাগোনা শুরু হয়ে যায় তার আগে থেকেই। ভোর সকালে কুয়াশার চাদর কিংবা শিশিরভেজা ঘাস সব জায়গাতেই পাওয়া যায় শীতের পদচিহ্ন। পৌষের শেষ দিকে জেঁকে বসেছে শীত। রামগঞ্জে ঘনকুয়াশা আর হিমেল বাতাস শীতের তীব্রতা আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।
বেশ কয়েক দিন ধরে এক নাগাড়ে শীতের প্রকোপে স্থবির হয়ে পড়েছে জনজীবন। দিন দিন তাপমাত্রা কমে আসার ফলে শীতের তীব্রতা বেড়েই চলেছে। যার প্রভাব পড়েছে এলাকার খেটে খাওয়া কর্মজীবী মানুষদের ওপর। ফলে কমে গেছে কর্মজীবী অনেক মানুষের আয়ের উৎস। শীত নিবারণে প্রয়োজন গরম কাপড়-চোপড়। তাই বেশি দামে নয়, কম দামেই গরম পোশাক কেনার দিকে মানুষ ঝুঁকছেন। প্রচন্ড শীত উপলক্ষে উপজেলার হাট-বাজারগুলোতে শীতের পোশাক আমদানী ও বেচাকেনা শুরু হয়েছে। সবকিছুর দাম বৃদ্ধির সাথে সাথে বেড়েছে পোশাকের দামও। যে সকল মানুষ পেট পুরে দু’মুঠো ভাত খেতে পায় না, এ শীতে তাদের বাঁচা দায় হয়ে পড়েছে। তারপরও কাপড়-চোপড়ের অত্যধিক দাম। এদিকে শীত থেকে বাঁচতে ফুটপাতে বসা গরম কাপড়ের দোকানগুলোই নিম্ন আয়ের মানুষের একমাত্র ভরসা।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, খোলা আকাশের নিচে শহরের ফুটপাতে কিংবা ছোট ভ্যানে গরম কাপড়ের বেচাকেনা শুরু হয়ে গেছে ইতিমধ্যেই। সর্বত্র জমে উঠেছে শীতের পোশাকের বাজার। নানা ধরনের শীতের পোশাক কিনতে ক্রেতারা ভিড় জমাচ্ছেন। খোলা আকাশের নিচে বসা দোকানগুলোতে নির্দিষ্ট কোনো ধরনের শীতের পোশাকের দেখা মেলে না। একটি থেকে অপরটি সম্পূর্ণ আলাদা। তাই এ সময়ে শীতের পোশাক নিয়েই দোকানিরা তাদের পসরা সাজাচ্ছেন। এসব দোকানে সব শ্রেণি-পেশার মানুষ দেখা গেছে। অল্প শীতের পোশাক যেমন ফুলহাতা মোটা কাপড়ের গেঞ্জি, কানটুপি, গোল গলার লম্বা গেঞ্জি, ফুল কলারের মোটা কাপড়ের গেঞ্জি ইত্যাদি থাকছে এসব দোকানে। উলের সোয়েটার, চাদর, কানটুপি, গেঞ্জি কাপড়ের ট্রাউজার, হাতমোজা, ছোট বাচ্চাদের সোয়েটার সেট, মাফলারসহ বাহারি ডিজাইনের হরেক রকমের শীতের পোশাকের পসরা সাজিয়ে বসেছেন কিছু কিছু দোকানে তবে এসব ছাড়াও দেখা মিলছে অন্যান্য শীতের পোশাকের। শীতের পোশাকের মধ্যে আছে ডেনিম, জিন্স, জ্যাকেট, উলের মাফলার, উলের সোয়েটার, গ্যাবার্ডিং কিংবা জিন্স কাপড়ের তৈরি ব্লেজার, হাফ হাতা উলের সোয়েটার, বুকের মাঝ বরাবর বোতাম কিংবা চেইন সিস্টেমের সোয়েটার দেখা মিলছে এসব দোকানে। মেয়েদের পোশাকের ক্ষেত্রে আছে কিছু ভিন্নতা। কার্ডিগান, ব্লেজার, সোয়েটার, হাফ অথবা ফুল হাতার কার্ডিগান, ট্রাউজারসহ পাতলা চাদর এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য। এসব পোশাকে আছে নানা রঙের ভিন্নতা থেকে শুরু করে কাপড়ের বিচিত্রতা। আকারে ছোট, মাঝারি এবং বড় যে কোনো মাপের পোশাক পাওয়া যায় এসব ভ্রাম্যমাণ দোকানে। দাম হাতের নাগালে এবং নানা ধরনের ভিন্নতা থাকায় এসব দোকানে ক্রেতা সংখ্যা বাড়ছে দিন দিন। উলের সোয়েটার, চাদর, কানটুপি, গেঞ্জি কাপড়ের ট্রাউজার, হাতমোজা, ছোট বাচ্চাদের সোয়েটার সেট, মাফলারসহ বাহারি ডিজাইনের হরেক রকমের শীতের পোশাকের পসরা সাজিয়ে বসেছেন বিক্রেতারা।
জামা কাপড় কিনতে আসা মোঃ আজাদ, বাচ্চু, মন্টুবলেন, ‘শপিং কমপ্লেক্সের দোকানগুলোতে শীতের কাপড়ের দাম বেশি। তাই নিম্ন ও মধ্যবিত্ত পরিবারের লোকেরা কম মূল্যের কাপড় কিনতে ফুটপাতের দোকানগুলোতে বেশি ভিড় জমান। তাছাড়াও ফুটপাতের দোকানে অনেক কম মূল্যের গরম কাপড় পাওয়া যায়।’
ফুটপাতের ব্যবসায়ী আরিফ, বাবু, লোকমান, বাবুলসহ অনেকে বলেন, ‘সবাই পছন্দের শীতের কাপড় কিনতে বিভিন্ন স্থানে গরম কাপড়ের দোকানগুলোতে ভিড় জমাচ্ছে। স্বল্পমূল্যে সোয়েটার, জ্যাকেট, মাফলার, কোর্ট, প্যান্ট, কানটুপিসহ বিভিন্ন প্রকার শীতবস্ত্র পাওয়ায় ক্রেতারা খুশি মনে কাপড় কিনছেন।