
স্বীকৃতি বিশ্বাস, বিশেষ প্রতিনিধিঃ
১৯৭০ সালে পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদ নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে। কিন্তু পাকিস্তানের সামরিক শাসকগোষ্ঠী আওয়ামী লীগ তথা বাঙালিদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে না করে নানামুখী তালবাহানা শুরু করে দেয়। প্রকৃতপক্ষে পশ্চিম পাকিস্তানিদের উদ্দেশ্য ছিল যেকোন মূল্যে দেশের রাজনৈতিক ক্ষমতা নিজেদের হাতে কুক্ষিগত করে রাখা।
এই পটভূমিতে বাঙালিরা রাজপথে নেমে আসে এবং আজ থেকে ৫১ বছর আগে ১৯৭১ সালের ৭ই মার্চ রেসকোর্স ময়দানের (বর্তমান সোহরাওয়ার্দী উদ্যান)
জনসভায় বিপুল সংখ্যক লোক একত্রিত হয়; পুরো ময়দান পরিণত হয় এক জনসমুদ্রে। এই জনতা এবং সার্বিকভাবে সমগ্র জাতির উদ্দেশ্যে শেখ মুজিবুর রহমান ১৮ মিনিটের এক জাদুকরি ভাষণের মাধ্যমে বাঙালি জাতিকে স্বাধীনতার স্বপ্নে বিভোর করেছিলেন এবং বাঙালি ছাত্র-ছাত্রী, শিক্ষক- শিক্ষিকা, কৃষক-শ্রমিকসহ আমজনতা স্বাধীনতার নতুন অনু প্রেরণা খুঁজে পায়। ফলে পাকিস্তান রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ২৪ বছরের আন্দোলন-সংগ্রামের ফলে রচিত জাতিসত্তা, জাতীয়তাবোধ ও পৃথক রাষ্ট্র গঠনের যে ভিত্তি রচিত হয়। পরে ৯ মাসের সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধে ত্রিশ লক্ষ শহীদের রক্ত ও আড়াই লক্ষ মা- বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর স্বাধীনতা অর্জিত হয়।
বঙ্গবন্ধুর কালজয়ী ভাষণটি বাঙালি জাতির কাছে সব সময়ই বিশেষ কিছু। ২০১৭ সালে ৭ মার্চের ভাষণটি জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি সংস্থা ইউনেসকো বিশ্ব ইতিহাসের প্রামাণ্য দলিল হিসেবে গ্রহণ করে এবং ৭৮টি ঐতিহাসিক ও গুরুত্বপূর্ণ দলিল, নথি ও বক্তৃতার মধ্যে বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণও অন্তর্ভুক্ত করে।
আজ ঐতিহাসিক ৭ই মার্চ উপলক্ষে যশোর জেলা আওয়ামীলীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগ, মহিলালীগ, কৃষকলীগসহ স্বাধীনতার স্বপক্ষের বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন, স্থানীয় সাংসদ, জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসনসহ সর্বস্তরের জনগণ সকাল ০৮.০০ ঘটিকায় যশোর শহরের প্রান কেন্দ্র দড়াটানা গরিব শাহ্ মোড়ে অবস্থিত বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত মহান নেতা, স্বাধীনতার স্বপ্নদ্রষ্টা, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতি স্মরণে স্থাপিত বঙ্গবন্ধু স্মৃতি ম্যুরালে ফুল দিয়ে বিনম্র শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
এছাড়া ঐতিহাসিক ০৭ই মার্চ দিবস- ২০২২ উদযাপনের অংশ হিসেবে বিকেল ৪.৩০ টায় টাউন হল ময়দানে আয়োজিত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে থাকবে প্রাথমিক, মাধ্যমিকের শিক্ষার্থী এবং জনসাধারণের জন্য আলাদা আলাদা আকর্ষণীয় কুইজ প্রতিযোগিতা৷