
লিটন পাঠান, হবিগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি :
হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার সদরের উপর দিয়ে ভয়ে যাওয়া সোনাই নদী ক্রমেই তার ঐতিহ্য হারাতে বসেছে। অবৈধ দখল আর নদীতে ময়লা আবর্জনা ও বর্জ্য ফেলার কারণে প্রসস্থ কমে গিয়ে ধীরে ধীরে খালে পরিনত হয়েছে। ফলে বর্ষা মৌসুমে কিছু পানি থাকলেও শুকনো মৌসুমে তা বিরাণ ভ’মিতে পরিনত হয়। সোনাই নদী দিয়ে ব্যবসা বাণিজ্য করত স্থানীয় ব্যবসায়ীরা। জেলেরা নদীতে মাছ ধরে জীবন চালাতো। চাষীরা নদীর পানি দিয়ে জমি চাষ করতো, নদীকে ঘিরেই নদীর পাড়ের মানুষের জীবন জীবিকা ছিল ভারতের পশ্চিম ত্রিপুরা রাজ্যের পাহাড় সোনাই নদীর উৎপত্তি স্থল দীর্ঘ ৫০ কিলোমিটার বয়ে চলেছে এই সোনাই নদী। খাস্টি নদী হয়ে মিলিত হয়ছ মেঘনা নদীতে। সেই সোনালী দিনের সোনাই নদী দখলে দূষণে এখন মরতে বসেছে। ক্রমাগত ভাবে নদী পাড়ের মানুষ ও মাধবপুর বাজারের ব্যবসায়ীরা নদীর মধ্যে বিভিন্ন ময়লা আবর্জনা ও দুষিত পদার্থ ফলেরনদীর পরিবেশ নষ্ট করে ফেলেছে।
বিভিন্ন স্থানে নদী দখল করে ঘর বাড়ি ও ব্যবসা বানিজ্য গড় তোলায় নদী এখন খালের পরিনত হয়ছে। মাধবপুর পৌরশহর কাটিয়ারা গ্রামের নদী পাড়ের বাসিদা কাউন্সিলর বিশ্বজিত দাস বলেন, আমরা শৈশবে দেখেছি নদীর গভীরতা ও প্রশস্থতা অনেক ছিল এ নদীতে সব সময় পানি থাকতো। দুরের মানুষ ব্যবসা বানিজ্যের জন্য নৌযান দিয়ে মাধবপুরে মালামাল আনা নেওয়া করতো। কিন্তু নদীর প্রতি মানুষের এখন আগের মতো ভালোবাসা নেই। যে যেভাবে পারে নদীকে ধ্বংস করে ফেলছে। মাধবপুর সোনাই নদী এই করুন দশা দেখলে এখন মনে খুব কষ্ট লাগে। এখন নদীপাড়ে দুর্গন্ধের কারণে যাওয়া যায় না। নদীর প্রতি মানুষের ভালোবাসা ও সচেতনতা সৃষ্টি না হলে এ নদী এক সময় ভরাট হয়ে মরে যাবে। মাধবপুর গত কয়েকবছর ধরে অপরিকল্পিতভাব শিল্প কারখানা গড় উঠায় শিল্প বর্জ্য নদীতে মিশে নদী নষ্ট হচ্ছে নদীকে বাঁচাতে হলে পরিবশ বান্ধব শিল্প স্থাপন করতে হবে।
মাধবপুর সোনাই নদীতে দূষিত পদার্থ ফেলে নদী দূষণ করা হয়েছে। এখন সোনাই নদীর পাড় দিয়ে হাঁটাচলা কঠিন হয়ে পড়েছে কাটিয়ারায় সোনাই নদীর পাড়ে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। কিন্তু নদীতে পড়ে থাকা বিভিন্ন বর্জ্যের গন্ধে ছাত্র ছাত্রীরা অস্বস্থিতে পরছে। পরিবেশবিদ আরাফাত জুবায়ের তরিৎ বলন, মাধবপুরের অন্যতম নদী হছ সোনাই নদী। এ নদীর পানি বিভিন হাওর ও নালায় পড় মাছর প্রজনন ও আবাস হতো। কি্ন্তু এখন এই সোনাই নদীতে গণহারে বিভিন্ন বর্জ্য দূষিত পদার্থের সংযাগ নদীতে দেওয়ায় এ নদীর পানি কালো হয়ে গেছে। যে কারণে এখন সোনাই নদীতে মাছ থাকার কোন পরিবেশ নেই। মাধবপুর উপজলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান শ্রীধাম দাশগুপ্ত বলন, নদীর জীবন্ত সত্তা রয়েছে মানুষের যেমন অঙ্গহানি হলে মানুষ ব্যতীত হয় নদীও দূষিত হলে নদী মরে যায়। হবিগঞ্জের মধ্যে একসময় সোনাই নদী দিয়ে ব্যবসা বাণিজ্যের ফলে আমাদের সু-দিন ছিল। কিন্তু নদী পাড়ে বিভিন্ন স্থাপনা গড়ে উঠায় এখন সোনাই নদী দখল হয়ে গেছে।
সোনাই নদীতে বাজার ও গৃহস্থালির বর্জ্য ফেলায় নদীর পানি কালাে হয়ে গেছে। সোনাই নদীকে রক্ষা করতে সরকারের দায়িত্বশীল লোকদের যথাযথ ভূমিকা পালন করতে হবে। মাধবপুর পৌরসভার মেয়র হাবিবুর রহমান মানিক জানান, সোনাই নদীর সু-দিন আবার ফিরিয় আনতে হবে। সরকারের প্রতি আমাদের দাবি হচ্ছে নদীর সুরক্ষায় সরকারীভাব প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া দরকার নদী পাড়ের স্বাভাবিক পরিবেশ যাতে আর নষ্ট না হয় সেজন্য পৌরসভার পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। হবিগঞ্জ বাপার সভাপতি অধ্যাপক (অবঃ) ইকরামুল ওয়াদুদ জানান, সোনাই নদীর বিষয়টি নিয় শীঘ্রই বাপা’র সেক্রেটারীর সঙ্গে কথা বলে আমাদের করণীয় নির্ধারণ করবো। মাধবপুর উপজলা নির্বাহী অফিসার মনজুর আহ্সান বলেন, সোনাই নদীর অতীত ঐতিহ্য ও গৌরব ফিরিয়ে আনতে সরকারের যথাযথ কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হবে।