
মোঃ সারোয়ার হোসেন অপু বদলগাছি( নওগাঁ) প্রতিনিধি:
পাহাড়পুরের বৌদ্ধবিহার অনেকেই দেখে থাকবেন, ছবিতে অথবা সরাসরি দেশের উত্তরাঞ্চল নওগাঁর বদলগাছি উপজেলায় গিয়ে। প্রায় ১২০০ বছর আগে স্থাপিত পৃথিবীর অন্যতম প্রাচীন এই বিদ্যাপীঠ ইতিহাসে ‘সোমপুর মহাবিহার’ নামে খ্যাত। তবে ইউনেসকোর ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট ঘোষিত এই প্রত্ন স্থাপনাটির এখন কেবল ভিত্তিভূমিই টিকে আছে। আদতে কেমন ছিল এই প্রাচীন স্থাপনা, তা একেবারে শতভাগ না হলেও প্রায় অনুরূপ আকৃতিতে দেখার সুযোগ তৈরি হলো এবার তথ্যপ্রযুক্তির কল্যাণে।
গতকাল মঙ্গলবার ‘ভার্চ্যুয়াল মিউজিয়াম বাংলাদেশ’ আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করল ‘সোমপুর মহাবিহারের বেটা ভার্সন’। আগ্রহী দর্শকেরা এখন ঘরে বসেই অনলাইনে কম্পিউটার, স্মার্টফোন ও ভিআর ব্যবহার করে সোমপুর মহাবিহারের ত্রিমাত্রিক আকৃতি দেখতে পারবেন। মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে সন্ধ্যায় ভার্চ্যুয়াল মিউজিয়াম বাংলাদেশের প্রথম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে ‘সোমপুর মহাবিহারের থ্রি সিক্সটি ভার্চ্যুয়াল ট্যুর’–এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী। বিশেষ অতিথি ছিলেন মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি সারা যাকের। আলোচনায় ভার্চ্যুয়ালি অংশ নেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক সীমা রহমান।
আলোচকেরা বলেন, প্রযুক্তি এখন অনেক এগিয়ে গেছে। তার সঙ্গে সবাইকে মানিয়ে চলতে হবে। দেশের ঐতিহাসিক স্থানগুলো এভাবে প্রযুক্তির সহায়তায় নতুন আঙ্গিকে তুলে ধরলে একটি নতুন অধ্যায়ের সৃষ্টি হবে। দর্শকেরা সহজে এগুলো দেখতে এবং উপভোগ করতে পারবেন। পরে এগুলো শিক্ষাব্যবস্থার সঙ্গে যুক্ত করলে শিক্ষার্থীদের জন্য ইতিহাস জানা আনন্দদায়ক ও সহজবোধ্য হবে। এই উদ্যোগ নেওয়ার জন্য তাঁরা ভার্চ্যুয়াল মিউজিয়ামের উদ্যোক্তাদের ধন্যবাদ জানান।
ভার্চ্যুয়াল মিউজিয়ামের প্রতিষ্ঠাতা আহমেদ জামান জানান, তাঁরা গত বছর ২৮ ফেব্রুয়ারি সোনারগাঁর ঐতিহাসিক স্থাপনা ‘পানাম নগর’–এর বেটা ভার্সন প্রকাশের মাধ্যমে ভার্চ্যুয়াল মিউজিয়ামের কার্যক্রম শুরু করেছিলেন। এরপর বাগেরহাটের ষাটগম্বুজ মসজিদ, চাঁপাইনবাবগঞ্জের ছোট সোনামসজিদ, যশোরের ১১ শিবমন্দির ও দিনাজপুরের কান্তজির মন্দিরের বেটা ভার্সনে থ্রি সিক্সটি ভার্চ্যুয়াল ট্যুর প্রকাশ করেছেন। এর সঙ্গে প্রথম বর্ষপূতিতে যুক্ত হলো সোমপুর মহাবিহার।