বাংলাদেশ ০২:৪৮ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৫ মার্চ ২০২৫, ৩০ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
নোটিশ :

সাংবাদিক নিয়োগ চলছে,, সাংবাদিক নিয়োগ চলছে,,০১৯৯৯-৯৫৩৯৭০, ০১৭১২-৪৪৬৩০৬,০১৭১১-০০৬২১৪ সম্পাদক

     
ব্রেকিং নিউজ ::
জেলা পরিষদের সদস্য ও বাইশারীর কৃতি সন্তানদের গণসংবর্ধনা চট্টগ্রামে আঞ্চলিক গানের কিংবদন্তি শিল্পী শেফালী ঘোষ সরকারি চাকুরির প্রলোভন দেখিয়ে টাকা আত্মসাৎকারি শীর্ষ প্রতারক হাবিবুল্লাহ হাবিব কারিকরকে গ্রেফতার করে র‌্যাব। জিয়া সেতুতে অবৈধ ডাম্প ট্রাক না চলার হুঁশিয়ারি ঘূর্ণিঝড় সিডর স্মরণে রাঙ্গাবালীতে মোমবাতি প্রজ্জ্বলন। কালুরঘাট সেতুর কাজ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হবে : সেতু উপদেষ্টা ব্রাহ্মণপাড়ায় বিপুল পরিমাণ মাদক ও অবৈধ ভারতীয় মালামাল জব্দ পীরগঞ্জে আবু সাঈদের কবর জেয়ারত করেছেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ও আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক। ইন্দুরকানিতে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিল পিরোজপুরে জোড়া খুন এর মামলায় ২১ বছরের সাজাপ্রাপ্ত আসামী খাগড়াছড়ি থেকে গ্রেপ্তার বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবস উপলক্ষে আলোচনা ও আপনজন সম্মাননা চাঁদা আদায়ের উদ্দেশ্যে অপহৃত মসজিদের ইমাম হাফেজ সোলাইমান কে উদ্ধার অপহরণকারী দাদনকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব। নাটোরে ভোরের চেতনা পত্রিকার ২৬ তম বর্ষপূর্তী উদযাপিত। বিস্ফোরক আইনে প্রধান শিক্ষক শফিক গ্রেফতার বিএনপি নেতা – কর্মীদের ওপর বোমা হামলার অভিযোগ

নোয়াখালীতে প্রশাসনের নাম ভাঙিয়ে ফসলি জমির মাটি বিক্রির উৎসব

  • নিজস্ব সংবাদ :
  • আপডেট সময় ০৬:৫৭:১৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২ মার্চ ২০২৩
  • ১৬৭৩ বার পড়া হয়েছে

নোয়াখালীতে প্রশাসনের নাম ভাঙিয়ে ফসলি জমির মাটি বিক্রির উৎসব

নোয়াখালী প্রতিনিধি:

নোয়াখালীর কবিরহাট উপজেলায় ভূমি আইনকে অমান্য করে তিন ফসলি জমির মাটি দিনে ও রাতে বিক্রি করেই চলছে অসাধু মাটিখেকোরা।

স্থানীয়দের অভিযোগ, সারা বছরই এসব মাটিখেকোরা তাদের অবৈধ মাটি বিক্রির ব্যবসা দিনে ও রাতে চালিয়েই যাচ্ছে। মাটি খেকোদের উৎপীড়নে দিশাহারা হয়ে উঠেছে ফসলি জমির মালিক ও কৃষকরা। এ ঘটনায় প্রশাসনের ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ বলে মনে করছে কৃষি সংশ্লিষ্ট সচেতন মহল।

সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার ধানশালিক ইউনিয়ন, বাটইয়া ইউনিয়ন, ঘোষবাগ ইউনিয়ন, ধানসিঁড়ি ইউনিয়ন, সুন্দল পুর ইউনিয়ন, চাপরাশিরহাট, নরোত্তম পুর ইউনিয়ন ও কবিরহাট পৌরসভাসহ বিভিন্ন ইউনিয়নের বিভিন্ন জায়গায় চলছে অবৈধ ভাবে দিনে ও রাতে ফসলি জমির মাটি বিক্রয়ের মহা উৎসব।

বিশেষ করে ধানশালিক ইউনিয়ন এর জনতা বাজারের গোলাপ নবী এন্টারপ্রাইজ এর প্রোপ্রাইটর মো. মিয়া ড্রাইভার, তার ছেলে ভোলন ড্রাইভার ও সামছুল হক সিন্ডিকেট কয়েক বছর যাবত বিভিন্ন এলাকার মাটি বিক্রি করেই চলছে ইটভাটার মালিকদের কাছে। শত-শত বিঘা কৃষি জমির মাটি বিক্রি করে দিয়ে আবাদি জমি ধ্বংস করে হাতিয়ে নিচ্ছে মোটা অংকের টাকা। এই উপজেলায় মাটিখেকো নামে বহুল পরিচিত বেশ কয়েকটি প্রভাবশালী সিন্ডিকেট গ্রুপ রয়েছে। ফলে হুমকির মুখে পড়েছে পুরো উপজেলার ফসলি জমি।

এলাকাবাসীরা বলেছেন, মাছ চাষের কথা বলে পুকুর খনন করে শতাধিক বিঘা আবাদি কৃষি জমির মাটি ভেকু দিয়ে কেটে বিভিন্ন ইট ভাটা ও স্থাপনা নির্মাণকারীদের কাছে বিক্রি করছে মাটি বিক্রেতা চক্রটি। অন্য দিকে বড় চাকার ড্রাম ট্রাক্টর দিয়ে মাটি নেয়ার ফলে অধিকাংশ গ্রামীণ কাঁচা-পাকা সড়কের বেহাল অবস্থা হয়ে গেছে।

এ বিষয়ে ধানশালিকের অটোরিকশা চালক সুজন ও ঘোষবাগের সিএজি চালক হাসানসহ একাধিক চালক বলেন, রাস্তাঘাট যতই ঠিক করা হোক না কেন তাতে কোনো লাভ নেই, কারণ মাটি বিক্রি বন্ধ না হলে ড্রাম ট্রাক্টর চলাচল বন্ধ হবে না। ড্রাম ট্রাক্টরের কারণে পাকা সড়কের পিচ উঠে যাচ্ছে এবং গর্ত সৃষ্টি হচ্ছে। কাঁচা সড়ক ভেঙ্গে বড় বড় গর্ত হয়, যা দেখার ও বলার কেউ নেই।

ভুক্তভোগী কৃষক ধানশিঁড়ি গ্রামের রহমত মিয়া ও বাটইয়া গ্রামের মো. হোসেন বলেন, ফসলি জমির মাটি বিক্রির ব্যবসা চালাতে তৎপর রয়েছে কয়েকটি চক্র। তারা সারা বছর মাটি বিক্রি করলেও অদৃশ্য শক্তি ও ক্ষমতার কারণে প্রশাসন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার আগেই উধাও হয়ে যায় তারা। কেউ বাধা দিলে প্রভাবশালীদের তোপের মুখে পড়তে হয় তাদের। কয়েক হাজার বিঘা জমিতে ধান, বাদাম, মসুর, তিল, সরিষাসহ নানান জাতের ফসলের আবাদ করতেন কৃষকরা। মাটি বিক্রি করার কারনে সেসব ফসল এখন আর তেমন হয়না।

মাটি কাটার বিভিন্ন জায়গা গুলোতে গিয়ে দেখা যায়- অন্তত ১৫টি এক্সেভেটর (ভেকু) দিয়ে মাটি কাটা হচ্ছে। আর মাটি গুলো ট্রাক্টর ট্রলি দিয়ে ইটভাটায় নেয়া হচ্ছে। অনুসন্ধানের পর ধানশালিক ইউনিয়নের মাটি ব্যবসায়ী মো. মিয়া ড্রাইভার এর কাছে ফসলি জমির মাটি কাটার বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি বলেন, ইউএনও তাদের চেয়ারম্যান এর কাছে বলেছেন রাতে মাটি কাটার জন্য ! তবে তিনি অনুমোদনের কোন কাগজ পত্র দেখাতে পারেননি। মৌখিক ভাবে বলেছেন বলে তিনি জানান।

অনুমোদনের বিষয়ে ৬নং ধানশাঁলিক ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাহাব উদ্দিন এর কাছে মুঠোফোনে জানতে চাইলে তিনি বলেন, একথা সঠিক নয়। কেউ ভুল ব্যাখ্যা দিয়েছে। তিনি আরো বলেন, কৃষকরা নিজেরাই মাটি বিক্রয় করে। তিনি আরো বলেন- সাংবাদিকরা কে কোথায় কি অনিয়ম করছে সুধু এগুলোর খোঁজ নেওয়াই কি তাদের কাজ!

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফাতিমা সুলতানা বলেন, আমি কাউকে এধরনের কথা বলিনি। তিনি বলেন- ‘আমি তাদেরকে সেখানে গিয়ে না পেলেও জেল, জরিমানা করবো’। কিন্তু এই নিউজ লেখা পর্যন্ত দৃশ্যমান কোন পদক্ষেপ না দেখায়- গতকাল বুধবার (১ মার্চ) ইউএনও কে আবার অবগত করা হলে তিনি বলেন, বিভিন্ন প্রোগ্রামের ব্যস্ততার কারনে ঘটনাস্থলে যাওয়া হয়নি।

জনপ্রিয় সংবাদ

জেলা পরিষদের সদস্য ও বাইশারীর কৃতি সন্তানদের গণসংবর্ধনা

নোয়াখালীতে প্রশাসনের নাম ভাঙিয়ে ফসলি জমির মাটি বিক্রির উৎসব

আপডেট সময় ০৬:৫৭:১৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২ মার্চ ২০২৩

নোয়াখালী প্রতিনিধি:

নোয়াখালীর কবিরহাট উপজেলায় ভূমি আইনকে অমান্য করে তিন ফসলি জমির মাটি দিনে ও রাতে বিক্রি করেই চলছে অসাধু মাটিখেকোরা।

স্থানীয়দের অভিযোগ, সারা বছরই এসব মাটিখেকোরা তাদের অবৈধ মাটি বিক্রির ব্যবসা দিনে ও রাতে চালিয়েই যাচ্ছে। মাটি খেকোদের উৎপীড়নে দিশাহারা হয়ে উঠেছে ফসলি জমির মালিক ও কৃষকরা। এ ঘটনায় প্রশাসনের ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ বলে মনে করছে কৃষি সংশ্লিষ্ট সচেতন মহল।

সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার ধানশালিক ইউনিয়ন, বাটইয়া ইউনিয়ন, ঘোষবাগ ইউনিয়ন, ধানসিঁড়ি ইউনিয়ন, সুন্দল পুর ইউনিয়ন, চাপরাশিরহাট, নরোত্তম পুর ইউনিয়ন ও কবিরহাট পৌরসভাসহ বিভিন্ন ইউনিয়নের বিভিন্ন জায়গায় চলছে অবৈধ ভাবে দিনে ও রাতে ফসলি জমির মাটি বিক্রয়ের মহা উৎসব।

বিশেষ করে ধানশালিক ইউনিয়ন এর জনতা বাজারের গোলাপ নবী এন্টারপ্রাইজ এর প্রোপ্রাইটর মো. মিয়া ড্রাইভার, তার ছেলে ভোলন ড্রাইভার ও সামছুল হক সিন্ডিকেট কয়েক বছর যাবত বিভিন্ন এলাকার মাটি বিক্রি করেই চলছে ইটভাটার মালিকদের কাছে। শত-শত বিঘা কৃষি জমির মাটি বিক্রি করে দিয়ে আবাদি জমি ধ্বংস করে হাতিয়ে নিচ্ছে মোটা অংকের টাকা। এই উপজেলায় মাটিখেকো নামে বহুল পরিচিত বেশ কয়েকটি প্রভাবশালী সিন্ডিকেট গ্রুপ রয়েছে। ফলে হুমকির মুখে পড়েছে পুরো উপজেলার ফসলি জমি।

এলাকাবাসীরা বলেছেন, মাছ চাষের কথা বলে পুকুর খনন করে শতাধিক বিঘা আবাদি কৃষি জমির মাটি ভেকু দিয়ে কেটে বিভিন্ন ইট ভাটা ও স্থাপনা নির্মাণকারীদের কাছে বিক্রি করছে মাটি বিক্রেতা চক্রটি। অন্য দিকে বড় চাকার ড্রাম ট্রাক্টর দিয়ে মাটি নেয়ার ফলে অধিকাংশ গ্রামীণ কাঁচা-পাকা সড়কের বেহাল অবস্থা হয়ে গেছে।

এ বিষয়ে ধানশালিকের অটোরিকশা চালক সুজন ও ঘোষবাগের সিএজি চালক হাসানসহ একাধিক চালক বলেন, রাস্তাঘাট যতই ঠিক করা হোক না কেন তাতে কোনো লাভ নেই, কারণ মাটি বিক্রি বন্ধ না হলে ড্রাম ট্রাক্টর চলাচল বন্ধ হবে না। ড্রাম ট্রাক্টরের কারণে পাকা সড়কের পিচ উঠে যাচ্ছে এবং গর্ত সৃষ্টি হচ্ছে। কাঁচা সড়ক ভেঙ্গে বড় বড় গর্ত হয়, যা দেখার ও বলার কেউ নেই।

ভুক্তভোগী কৃষক ধানশিঁড়ি গ্রামের রহমত মিয়া ও বাটইয়া গ্রামের মো. হোসেন বলেন, ফসলি জমির মাটি বিক্রির ব্যবসা চালাতে তৎপর রয়েছে কয়েকটি চক্র। তারা সারা বছর মাটি বিক্রি করলেও অদৃশ্য শক্তি ও ক্ষমতার কারণে প্রশাসন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার আগেই উধাও হয়ে যায় তারা। কেউ বাধা দিলে প্রভাবশালীদের তোপের মুখে পড়তে হয় তাদের। কয়েক হাজার বিঘা জমিতে ধান, বাদাম, মসুর, তিল, সরিষাসহ নানান জাতের ফসলের আবাদ করতেন কৃষকরা। মাটি বিক্রি করার কারনে সেসব ফসল এখন আর তেমন হয়না।

মাটি কাটার বিভিন্ন জায়গা গুলোতে গিয়ে দেখা যায়- অন্তত ১৫টি এক্সেভেটর (ভেকু) দিয়ে মাটি কাটা হচ্ছে। আর মাটি গুলো ট্রাক্টর ট্রলি দিয়ে ইটভাটায় নেয়া হচ্ছে। অনুসন্ধানের পর ধানশালিক ইউনিয়নের মাটি ব্যবসায়ী মো. মিয়া ড্রাইভার এর কাছে ফসলি জমির মাটি কাটার বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি বলেন, ইউএনও তাদের চেয়ারম্যান এর কাছে বলেছেন রাতে মাটি কাটার জন্য ! তবে তিনি অনুমোদনের কোন কাগজ পত্র দেখাতে পারেননি। মৌখিক ভাবে বলেছেন বলে তিনি জানান।

অনুমোদনের বিষয়ে ৬নং ধানশাঁলিক ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাহাব উদ্দিন এর কাছে মুঠোফোনে জানতে চাইলে তিনি বলেন, একথা সঠিক নয়। কেউ ভুল ব্যাখ্যা দিয়েছে। তিনি আরো বলেন, কৃষকরা নিজেরাই মাটি বিক্রয় করে। তিনি আরো বলেন- সাংবাদিকরা কে কোথায় কি অনিয়ম করছে সুধু এগুলোর খোঁজ নেওয়াই কি তাদের কাজ!

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফাতিমা সুলতানা বলেন, আমি কাউকে এধরনের কথা বলিনি। তিনি বলেন- ‘আমি তাদেরকে সেখানে গিয়ে না পেলেও জেল, জরিমানা করবো’। কিন্তু এই নিউজ লেখা পর্যন্ত দৃশ্যমান কোন পদক্ষেপ না দেখায়- গতকাল বুধবার (১ মার্চ) ইউএনও কে আবার অবগত করা হলে তিনি বলেন, বিভিন্ন প্রোগ্রামের ব্যস্ততার কারনে ঘটনাস্থলে যাওয়া হয়নি।