
মোঃ সারোয়ার হোসেন অপু, বদলগাছী (নওগাঁ) প্রতিনিধি:
জানা যায়, নওগাঁর বদলগাছীর বিলাশবাড়ি ইউপির হলুদবিহার গ্রামে সুদের টাকা না পেয়ে একজনকে ঘরের মধ্যে বন্দী করে মারপিট করে আহত করার অভিযোগ উঠেছে। আহত জহুরুল ইসলাম বর্তমানে নওগাঁ সদর হাসপাতালে চিকিসাধীন রয়েছে।
শ্বশুর রশীদের টাকা এনজিওতে দেওয়া টাকার সুদ আদায়ের জন্য জামাই এস এম রাফিউল হাসান খুসবু (আমির) তার সহযোগীদের নিয়ে এ ধরনের ঘটনা ঘটিয়েছে বলে ভুক্তভোগী সহ এলাকাবাসীর অভিযোগ। আহত জহুরুল ইসলাম বদলগাছীর বিলাসবাড়ী ইউপির জোব্বারের ছেলে ও সাবেক জেলা পরিষদের সদস্য।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গতকাল ৬ মার্চ (সোমবার) বেলা আনুমানিক ১১.৩০টায় বারফলা গ্রামের মোঃ জোব্বারের ছেলে মোঃ জহুরুল ইসলাম (৪৮) কে হলুদবিহার গ্রামের আফজাল মাষ্টারের ছেলে বিলাসবাড়ি ইউপি চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করা এস এম রাফিউল হাসান খুসুব (আমির ) তাঁর শ্বশুর রশীদ এর সুদ কারবারির টাকা আদায়ের জন্য ডেকে নেন নিজের অফিস ঘরে।
কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে জহুরুলের উপর চড়াও হন এস এম রাফিউল হাসান খূসুব (আমীর)। এক পর্যায়ে এস এম রাফিউল হাসান আমির ও তার সাথে থাকা সহযোগীরা এলোপাতাড়ি মারধর করে গুরুতর আহত করে জহুরুলকে। স্থানীয়রা বিষয়টি দেখে সাথে সাথে থানা পুলিশকে ফোন করে।
থানা পুলিশের এস আই আবু তাহের ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন ও আহত জহুরুল ইসলামকে উদ্ধার করে চিকি সার জন্য নওগাঁ সদর হাসপাতালে পাঠায়। সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, আহত জহুরুল ইসলাম হলুদ বিহার চারমাথা মোড়ে এসএম রাফিউল হাসান খুসুবু (আমিরের ) বারান্দায় পড়ে আছে। এ অবস্থায় সে বলেন, আমি বারফালা সমবায় সমিতি নামে একটি এন জি ও, করে ছিলাম। সেই এন জি ও তে আমিরের শ্বশুর আঃ রশীদের দেড়লক্ষ টাকা সুদের উপর খাটাতে দেয়।
কিন্তু বিভিন্ন কারণে এনজিওর টাকা না তুলতে পেরে এনজিওটি বন্ধ হয়ে যায়। এনজিও বন্ধ হয়ে গেলে রশীদের টাকা আমি কিস্তিতে পরিশোধ করতে থাকি। জহুরুল ইসলাম আরও বলেন, যেহেতু টাকাটা আমি নিয়েছি তাই তাঁর টাকা পরিশোধ করার চেষ্টাও আমি নিজেই করে আসছিলাম।
বেশির ভাগ টাকা দিয়ে দিয়েছি। হিসাবে সে আমার কাছে আর মাত্র ৬০ হাজার টাকা পায়। কিন্তু তারা সম্পুর্ন টাকা দাবি করে এবং কৌশলে মিমাংসার কথা বলে আমাকে তাঁর আড্ডা খানায় ডেকে নিয়ে দোকানের সাটার বন্ধ করে মারধর করে ও বলে তোকে মেরে ফেলে দিবো, হাত পা কেটে নিবো, তোকে জেএমবি বানাবো, আর অকথ্য ভাষায় গালি-গালাজ করে। আমার চি কারে স্থানীয় এলাকাবাসি ছুটে আসলেও তারা এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসী হওয়ায় কেউ ঘরের ভিতরে যাওয়ার সাহস পায়নি। স্থানীয়রা বলেন, আঃ রশিদ এলাকার নামকরা সুদারু।
সুদের ব্যবসা করেন। কয়েক মাস পূর্বে রশিদের মেয়ের সাথে হলুদবিহার গ্রামের আফজাল মাষ্টারের ছেলে এস এম রাফিউল হাসান (আমীরের) বিয়ে হয়। শ্বশুরের সুদের টাকা আদায়ের জন্য এস এম রাফিউল হাসান (আমির) তার দলের কর্মীদের নিয়ে আমীরের অফিস রুমে দরজা বন্ধ করে জহুরুলকে মারাত্মক ভাবে মারধর করে। তথ্য সংগ্রহ কালে এলাকাবাসী জানায়, আমীর বিগত ইউপি নির্বাচনে বিলাশবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী হিসাবে ছিলেন।
আমীর বর্তমানে বদলগাছী ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হিসেবে আছেন। চেয়ারম্যান হিসেবে মনোনয়ন নিয়ে হলুদ বিহার চারমাথা মোড়ে একটি অফিস খুলে বসেন। জয় না পেলেও কতিপয় ছেলেদের নিয়ে আড্ডা দিত। আমীরের এই ঘরে টাকা পয়সার অভিযোগ নিষ্পত্তি করা হয়।
বিভিন্ন ভয়ভীতি দেখিয়ে মারধর করে অনেক অভিযোগ নিষ্পত্তি করা হতো। এলাকাবাসী আমীরের এই ঘরটিকে টর্চার সেল বলে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় অনেকে বলেন, অত্যাচার করে তাকে ফেলে রেখে মোটরসাইকেল যোগে আমির সটকে পড়ে। তারপর পুলিশ এসে আহত জহুরুলকে উদ্ধার করে চিকি সার জন্য পাঠান।
জহুরুল এখন নওগাঁ সদর হাসপাতালে ভর্তি আছেন। এ বিষয় অভিযুক্ত এস এম রাফিউল হাসান (আমির) মুঠো ফোনে বলেন, ঘটনাটি সম্পুর্ন মিথ্যা। তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই আবু তাহের বলেন, এখনও কেউ অভিযোগ দেয় নি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা
হবে।