
মোঃ কাওছার আহম্মেদ, রাঙ্গাবালী পটুয়াখালী প্রতিনিধি:
বয়সের ভারে কাজ করে খেতে পারেন না নুরজাহান। তিন বেলা খাবার জোটানো তার জন্য কষ্টকর।
এদিকে বয়সও ষাট পাড় হয়েছে। শরীরে বেঁধেছে একাধিক রোগ। তাই শরীরে নেই আগের মতো কর্মক্ষমতা।
মানুষের দ্বারে দ্বারে ভিক্ষাবৃত্তি করে কোনরকম চলছে তার চিকিৎসা। জীবনের শেষ সময়ে একটু স্বচ্ছলতার আশায় বিধবা ভাতার জন্য স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের কাছে ঘুরপাক খাচ্ছেন নুরজাহান। নুরজাহানের বাড়ি রাঙ্গাবালী উপজেলার বড়বাইশদিয়া ইউনিয়নের চরগঙ্গা গ্রামে। তিনি মৃত লালু গাজীর স্ত্রী। ২৫ বছর আগে নুরজাহানের স্বামী মারা যান।
আর রেখে যান দুটি সন্তান। দরিদ্রতার জন্য সন্তানদের পড়ালেখা করাতে পারেনি। তাই বড় হয়ে বাধ্য হয় দিনমজুরের কাজ করতে। সরেজমিনে গিয়ে নুরজাহান ও তার প্রতিবেশীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, নুরজাহান লিভার, গ্যাস্ট্রিক, আলসার সহ নানান জটিল রোগে আক্রান্ত। তার সন্তানেরা চিকিৎসা করতে গিয়ে সর্বশান্ত হয়ে পড়েছে। এছাড়া দুটি সন্তানই বিয়ে করেছে। তাদের ছেলে সন্তান নিয়ে সংসার চালাতে হিমসিম খাচ্ছে।
জাতীয় পরিচয়পত্রে তার ৫২ বছর থাকলেও প্রকৃত বয়স ৬০ বছর হয়েছে বলে জানান প্রতিবেশীরা। এসময় কান্না জড়িত কণ্ঠে নুরজাহান বলেন, ২৫ বছর দ্বারে দ্বারে ঘুরেছি একটি বিধবা নামের আশায়। চেয়্যারমান মেম্বারদের কাছে গেলে বলে পরে দেব এখন চলে যান। আমি অনেক রোগে আক্রান্ত। ঔষধের টাকা যোগান দিতে ভিক্ষা করতে হচ্ছে। খেয়ে না খেয়ে কোনরকম বেঁচে আছি।
সরকারের কাছে আমার চিকিৎসার দাবি জানাই। ইউপি সদস্য বেল্লাল বলেন, তার জাতীয় পরিচয় পত্রে বয়স কম থাকায় বয়স্ক ভাতা নামটি নেয়া যাচ্ছে না। আর এই মুহুর্তে বিধবা বই খালি নেই। যদি খালি হয় দিতে পারবো। রাঙ্গাবালী সমাজসেবা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম ছাইউম বলেন, নতুন করে আপাতত কোন বরাদ্দ নেই। বরাদ্দ আসলে দিতে পারবো। তবে ইউনিয়ন চেয়্যারমান এর সাথে কথা বলতে পারেন।
ওখানে বিধবা ভাতা পান এমন কেউ যদি মৃত্যুবরন করে থাকেন তাহলে চেয়্যারমান চাইলে নামটি অন্তর্ভুক্ত করতে পারেন। বড়বাইশদিয়া ইউপি চেয়্যারমান ফরহাদ হোসেন বলেন, এ নামে আমার কাছে কেউ আসেনি। যদি আসে আমি তাকে যতটুকু সম্ভব সহযোগিতা করবো।