
সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি ঃ- স্টাফ রিপোর্টার,,
সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর পৌর শহরে এক সৌদি প্রবাসীর স্ত্রীকে হত্যার ঘটনায় জড়িত পলাতক আসামি জিতেশ চন্দ্র গোপকে ঢাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। শুক্রবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ১২টায় সিআইডির একটি টিম ঢাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করেন।
সুনামগঞ্জের জগ্ননাথপুরে এক প্রবাসীর স্ত্রীকে টুকরো -টুকরো করে খুন করা হয়। বৃহস্পতিবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) পুলিশ শহরের পৌর পয়েন্টের একটি মার্কেটের অভি নামের এক ফার্মেসি থেকে প্রবাসীর স্ত্রী শাহানাজ পারভীনের খণ্ডিত লাশ উদ্ধার করে। এঘটনায় শাহনাজ পারভীনের ভাই বাদী হয়ে বৃহস্পতিবারে ফার্মেসি মালিক জিতেশ চন্দ্র গোপকে আসামি করে জগন্নাথপুর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। সুনামগঞ্জের পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমান আসামি গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। উপজেলার রানীগঞ্জ ইউনিয়নের নারিকেলতলা গ্রামের সরুক মিয়া দীর্ঘদিন ধরে প্রবাসে রয়েছেন। ২০১৩ সাল থেকে পৌর শহরের নিজ মালিকানাধীন বাসায় ওই সৌদিপ্রবাসীর স্ত্রী শাহানাজ পারভীন তিন সন্তান নিয়ে বসবাস করে আসছিলেন। বোনের সাথে ভাই হেলালও বাসায় থাকতো।
শাহানাজ বাসার নিকটবর্তী ব্যারিস্টার মির্জা আব্দুল মতিন মার্কেটে অভি ফার্সেমিতে ওষুধ ক্রয়সূত্রে যাতায়াত করতেন । বুধবার বিকেলে ফার্মেসিতে যাচ্ছেন বলে বাসা থেকে বের হন তিনি। এর পর থেকে আর বাসায় ফিরেন নি। ভাই হেলাল তার বোন বাসায় ফেরেননি জানতে পেরে ওই ফার্মেসিতে যান বিকেল সাড়ে ৫ টার দিকে। তখন ফার্মেসি বন্ধ পাওয়া যায়। পরে ফার্মেসির মালিক জিতেশ চন্দ্র গোপকে মোবাইলে কল দিলে তিনি জানান, তার বোন ওষুধ না পেয়ে চলে গেছেন। শাহানাজের ব্যবহৃত মোবাইল ফোনে পরিবারের লোকজন যোগাযোগ করলে অন্য এক নারী ফোন রিসিভ করে জানান, তিনি (নিহত নারী) সিলেট ওসমানীতে আছেন। সেখানে যোগাযোগ করেও তার সন্ধান মেলেনি।পরে আরেকবার ফোন দিলে একই নারী ফোন রিসিভ করে জানান, শহরের আর্ট স্কুল এলাকায় আছেন। এ রকম একেক সময় একেক কথা বলে বিভ্রান্ত করতে থাকেন ওই নারী। পরে পুলিশকে বিষয়টি অবহিত করা হয়।
সন্ধ্যা ৭টার পর থেকে শাহনাজের ফোনটি ও বন্ধ পাওয়া যায়। রাতভর বিভিন্ন স্থানে যোগাযোগ করেও শাহনাজের সন্ধান না পেয়ে ফার্মেসি মালিকের বাসায় গিয়ে দেখেন ওই বাসাও তালাবদ্ধ। বৃহস্পতিবার দুপুরে জগন্নাথপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাজেদুল ইসলামের উপস্থিতিতে জগন্নাথপুর থানা পুলিশ তালাবদ্ধ অভি ফার্মেসির তালা ভেঙে দোকানে অভিযান চালায়। এ সময় দোকানের রোগী দেখার টেবিলের নিচে বিছানার চাদর দিয়ে মোড়ানো ওই নারীর শরীর ছয় টুকরা (গলা, পেট, হাত-পা) বিচ্ছিন্ন অংশ দেখতে পায়। পুলিশ লাশ উদ্ধার করে সুনামগঞ্জ মর্গে প্রেরণ করে।ঘটনার পর থেকে ফার্মেসি মালিক জিতেশ গোপ ও তার পরিবার পলাতক। জিতেশ গোপ কিশোরগঞ্জের ইটনা উপজেলার সইলা গ্রামের যাদব গোপের ছেলে। তিনি দীর্ঘদিন ধরে পৌর শহরে বাসা ভাড়া করে বসবাস ও ফার্মেসি ব্যবসা করতেন। জগন্নাথপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মিজানুর রহমান জানান, পুলিশ ওই ফার্মেসির সিলিং থেকে একটি রক্তমাখা ছুরি উদ্ধার করেছে। ধারণা করা হচ্ছে, ওই ছুরি দিয়েই শাহনাজকে হত্যা করা হয়েছে।