
সোনাগাজী (ফেনী) সংবাদদাতাঃ
ফেনীর সোনাগাজী সদর ইউনিয়নের চরশাহাপুরে তিন ফসলি জমিতে আরো একটি আশ্রয় কেন্দ্র নির্মাণের পাঁয়তারার প্রতিবাদে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেছে স্থানীয় কৃষক ও সর্বস্তরের জনতা। শনিবার দুপুর ১২টায় ৭নং সোনাগাজী সদর ইউনিয়নের ৪নং ওয়াডেের শাহাপুর ডাঙ্গা সিয়া মোস্তপা খালের গোড়ায় ধানের জমিতে দাঁড়িয়ে ওই মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। দুই সহস্রাধিক কৃষক, শ্রমিক, নারী-পুরুষ এ কর্মসূচীতে অংশ নেন।
শাহাপুর তিন ফসলি ভূমি রক্ষা কমিটির সভাপতি আবুল কাসেমের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক আবদুল মান্নান বাবুলের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, কৃষক নেতা সিরাজুল ইসলাম, আবুল কালাম, আবুল হাশেম, সাফিয়া খাতুন, আলমগীর হোসেন, মো. জহির, মোশারফ হোসেন, লোকমান হোসেন ও গিয়াস উদ্দিন প্রমূখ।
এসময় বক্তারা বলেন, চরশাহাপুর গ্রামে ইতোপূর্বে দুটি আশ্রয় কেন্দ্র নির্মাণ করা হয়েছে। এর মধ্যে চরশাহাপুর গ্রামের চরখোয়াজের লামছি মৌজায় তিন ফসলি জমিতে আরো একটি আশ্রয় কেন্দ্র নির্মাণের পাঁয়তারা করা হচ্ছে। সম্প্রতি উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ভূমিগুলোতে খুঁটি দিয়ে আশ্রয় কেন্দ্র নির্মাণের জন্য চিহ্নিত করা হয়েছে। গ্রামবাসীর দাবি চিহ্নিত ভূমিতে তিন ফসল চাষ করে গ্রামবাসী জীবিকা নির্বাহ করে আসছে। তিনটি আশ্রয় কেন্দ্র থাকা স্বত্ত্বেও একই গ্রামে আরো একটি আশ্রয় কেন্দ্র নির্মাণ করা মানে মরার উপর খাড়ার ঘাঁ। এমনটাই দাবি করেন কৃষক, শ্রমিক ও সর্বস্তরের জনতা। উক্ত আশ্রয় কেন্দ্র নির্মিত হলে তিন ফসলি ভূমি ধ্বংসের পাশিপাশি সামাজিক অবক্ষয়েরও আশংকা করছেন তারা।
কৃষক আলমগীর হোসেন জানান, স্থানীয় প্রভাবশালীরা স্থানীয় কৃষকদের হুমকি ধমকি দিয়ে জোর পূব’ক ফসলি জমির কাঁচা ধান কেটে ফেলার হুমকি দিচ্ছেন এবং জোর পূব’ক কাঁচা ধান কেটে প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য উঠে পড়ে লেগেছেন। সামাজিক স্থিতিশীলতা ও তিন ফসলি ভূমি রক্ষায় অন্য মৌজায় প্রস্তাবিত আশ্রয় কেন্দ্র নির্মাণের দাবি জানান।
শাফিয়া খাতুন জানান, আমার জমি নিয়ে আদালতে মামলা থাকার পরও ধানের জমি জোর করে দখল করার পায়তারা করছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশ অনুযায়ী ফসলি জমি রক্ষা করেই আশ্রয় কেন্দ্র নির্মাণের আহবান জানান তারা।
তিন ফসলি জমিতে আশ্রয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নের বিষয়ে উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি এসএম অনিক চৌধুরীকে ফোন করা হলে, তিনি জানান, জমি অধিগ্রহণ করার ক্ষেত্রে বিধি অনুযায়ী তিন ফসলি বিষয়টি বিবেচনা করার সুযোগ নেই। যাদের কাগজপত্র বা আদালতে অভিযোগ রয়েছে তাদের বিষয়ে বিবেচনা করা হবে।
উপজেলা নিবা’হী কম’কর্তা কামরুল হাসান জানান, এটা সরকারী খাস খতিয়ান ভুক্ত জমি। তারপরও কারো অভিযোগ থাকলে বিবেচনা করা হবে।