
কাউখালী (পিরোজপুর) প্রতিনিধি।
শীতে পানগাছে নতুন পাতা গজায় না। চাহিদা অনুযায়ী এ সময় পানের উৎপাদন কম হওয়ায় দামও থাকে কিছুটা চড়া। নানান প্রতিকূলতায় গত দুই বছর পান বিক্রি করে ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হন পানচাষিরা। তবে পানের বাড়তি দামে হাসি ফুটেছে চাষিদের মুখে।পিরোজপুরের কাউখালীতে গত তিন সপ্তাহ ধরে পানের হাটে এলাকায় উৎপাদিত পানের দাম বেড়ে যাওয়ায় চাষিরা উৎসাহিত।
কাউখালী হাটে পান ক্রেতা কমল বলেন, পান-সুপারির যেভাবে দাম বাড়ছে তাতে মধ্যবিত্তের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে চলে যাচ্ছে। দিন দিন পানের দাম বাড়ায় অনেকে এরইমধ্যে কমিয়ে দিয়েছেন পান খাওয়া।
অপরদিকে এবার পানের ভালো দাম পাওয়ায় চাষিদের মুখে হাসি ফুটেছে। চলতি মৌসুমে যেসব চাষিদের পানের বাম্পার ফলন হয়েছে তারা এখন বেজায় খুশিতে। বিগত বছরগুলোতে পানের দাম ভালো না পাওয়ায় পান চাষে দিন দিন আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছে চাষীরা।
চিরাপাড়া এলাকার পান চাষী মিলন দাস বলেন, এর আগে এ উপজেলায় পান চাষ করে বেকারদের কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হত, সারা বছর পানের বরজে কাজ করে সুন্দরভাবে জীবিকা নির্বাহ করতে এখানকার কয়েক শতাধিক দিনমজুর পরিবার। গত ৩-৪ বছর ধরে পানের দাম কম পাওয়ায় এলাকার পান চাষীরা পান চাষ বন্ধ করে অন্য পেশায় ঝুকে পড়ছেন ।
খোঁজ-খবর নিয়ে জানা যায়, কাউখালীসহ আশ-পাশের উপজেলাগুলোতে পানের বাজার এখন বেশ চড়া। হাটবাজার ও পাইকারি মোকামগুলোতে সর্বকালের রেকর্ডমূল্যে বিক্রি হচ্ছে পান। মোকামের একাধিক পাইকারি পান ব্যবসায়ী জানান, ভালো মানের পান এক জোড়া (৯৬টি) বিক্রি হচ্ছে ৩০০-৩৫০ টাকা, যা আগে ছিল ১৭০ টাকা, মাঝারি মানের প্রতি জোড়া পান বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকায়, যা আগে ছিল ১০০ টাকা ও ছোট আকারের পানের প্রতি জোড়া বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকায়, যা আগে ছিল ৫০ টাকা করে।
এখানে সপ্তাহে দুদিন সোম ও শুক্রবার লাখ লাখ টাকার পান দেশের বিভিন্ন স্থানে চালান হয়। পানের হাট বাজার গিয়ে দেখা গেছে, বেচা-কেনা করতে কয়েক’শ চাষি পান নিয়ে বাজারে বসেন। আর ঢাকা, খুলনা, চাঁদপুরসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা ব্যবসায়ীরা চাষিদের কাছ থেকে পান কিনছেন। এসব পান ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন এলাকায় নিয়ে যান।
পাইকারি পান বিক্রেতারা বলছেন, শৈত্যপ্রবাহ ও কম বৃষ্টির হওয়ায় আবার বৃষ্টির পানি না সরতে পারায় এ বছর পানের ফলনে ক্ষতি হয়েছে। এতে চাহিদা অনুযায়ী বাজারে পানের যোগান কম থাকায় পানের বাজারের অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। কাউখালী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সোমা দাস বলেন, এ বছর পানের দাম বেশি হওয়ায় পান চাষিরা পান চাষে আগ্রহী হচ্ছে। আমরা কৃষি বিভাগ থেকে পান চাষীদের পরামর্শ সহ বিভিন্ন প্রকার সহযোগিতা করে যাচ্ছি।