বাংলাদেশ ০৩:১৯ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৬ মার্চ ২০২৫, ১ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
নোটিশ :

সাংবাদিক নিয়োগ চলছে,, সাংবাদিক নিয়োগ চলছে,,০১৯৯৯-৯৫৩৯৭০, ০১৭১২-৪৪৬৩০৬,০১৭১১-০০৬২১৪ সম্পাদক

     
ব্রেকিং নিউজ ::
জেলা পরিষদের সদস্য ও বাইশারীর কৃতি সন্তানদের গণসংবর্ধনা চট্টগ্রামে আঞ্চলিক গানের কিংবদন্তি শিল্পী শেফালী ঘোষ সরকারি চাকুরির প্রলোভন দেখিয়ে টাকা আত্মসাৎকারি শীর্ষ প্রতারক হাবিবুল্লাহ হাবিব কারিকরকে গ্রেফতার করে র‌্যাব। জিয়া সেতুতে অবৈধ ডাম্প ট্রাক না চলার হুঁশিয়ারি ঘূর্ণিঝড় সিডর স্মরণে রাঙ্গাবালীতে মোমবাতি প্রজ্জ্বলন। কালুরঘাট সেতুর কাজ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হবে : সেতু উপদেষ্টা ব্রাহ্মণপাড়ায় বিপুল পরিমাণ মাদক ও অবৈধ ভারতীয় মালামাল জব্দ পীরগঞ্জে আবু সাঈদের কবর জেয়ারত করেছেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ও আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক। ইন্দুরকানিতে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিল পিরোজপুরে জোড়া খুন এর মামলায় ২১ বছরের সাজাপ্রাপ্ত আসামী খাগড়াছড়ি থেকে গ্রেপ্তার বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবস উপলক্ষে আলোচনা ও আপনজন সম্মাননা চাঁদা আদায়ের উদ্দেশ্যে অপহৃত মসজিদের ইমাম হাফেজ সোলাইমান কে উদ্ধার অপহরণকারী দাদনকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব। নাটোরে ভোরের চেতনা পত্রিকার ২৬ তম বর্ষপূর্তী উদযাপিত। বিস্ফোরক আইনে প্রধান শিক্ষক শফিক গ্রেফতার বিএনপি নেতা – কর্মীদের ওপর বোমা হামলার অভিযোগ

সমাজসেবায় একুশে পদক পেলেন দই বিক্রেতা জিয়াউল হক।

  • নিজস্ব সংবাদ :
  • আপডেট সময় ০৮:১৪:১৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২০ ফেব্রুয়ারী ২০২৪
  • ১৬৮৬ বার পড়া হয়েছে

সমাজসেবায় একুশে পদক পেলেন দই বিক্রেতা জিয়াউল হক।

 

 

নুরুন নাহার বেবী, নিজস্ব প্রতিবেদক 

বাংলাদেশের চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার সীমান্তঘেঁষা ভোলাহাট উপজেলার মুসরিভূজা গ্রামের বাসিন্দা জিয়াউল হক (৯১)। পেশায় তিনি একজন সাধারণ দই বিক্রেতা হলেও তার নেশা সমাজসেবা। দই বিক্রির টাকায় তিনি তৈরি করেছেন লাইব্রেরি।

এছাড়া স্কুল ও কলেজের শিক্ষার্থীদের বিনামূল্যে বই দেওয়াসহ সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে নিয়মিত অনুদান দেন জিয়াউল হক। তাই তাকে সবাই চেনে সাদা মনের মানুষ হিসেবে।

সম্প্রতি বিভিন্ন বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ দেশের ২১ জন নাগরিককে একুশে পদক দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। ১৩ ফেব্রুয়ারি সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব আইরীন ফারজানার সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে পদকপ্রাপ্তদের তালিকা প্রকাশ করা হয়। সেই তালিকায় নাম রয়েছে প্রত্যন্ত অঞ্চলের দই বিক্রেতারও। সমাজসেবায় অবদান রাখায় এই পদক পাচ্ছেন তিনি।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জিয়াউল হকের বাবার নাম মরহুম তৈয়ব আলী মোল্লা এবং মায়ের নাম শরীফুন নেছা। তার বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার ভোলাহাট উপজেলার ৩ নম্বর দলদলী ইউনিয়নের চামা মুশরিভুজা গ্রামে। প্রথম স্ত্রীর মৃত্যুর পর বর্তমানে তিনি বটতলা গ্রামে দ্বিতীয় স্ত্রীকে নিয়ে বসবাস করছেন।

জিয়াউল হক ১৯৫৫ সালে পঞ্চম শ্রেণি পাস করে ষষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তি হতে চান। কিন্তু বাড়ি বাড়ি গরুর দুধ দহন করে জীবিকা নির্বাহ করা বাবা বই কেনার জন্য দেড় টাকা দিতে পারেননি। এই কারণে উচ্চবিদ্যালয়েও ভর্তি হওয়া হয়নি তার। এরপর বাবার সংগ্রহ করা দুধ দিয়ে দই তৈরি করে ফেরি করে বিক্রি করা শুরু করেন। দু তিন বছর পর কিছু টাকা জমা হয় জিয়াউল হকের হাতে। তখন জিয়াউল হকের চিন্তা হয়, যারা তার মতো টাকার অভাবে বই কিনতে না পেরে লেখাপড়া থেকে ছিটকে পড়তে পারে, তাদের তিনি এই টাকা দিয়ে বই কিনে দেবেন। তবেই তার বিদ্যালয়ে পড়তে না পারার বেদনা লাঘব হবে।

আর এই লক্ষ্য সামনে রেখে গরিব ছাত্রদের মধ্যে বই বিলি শুরু করেন। যতদিন পর্যন্ত সরকার বই বিনা মূল্যে দেওয়া শুরু করেনি, ততোদিন পর্যন্ত বই দিতে থাকেন। এরপর উচ্চমাধ্যমিক ও স্নাতক শ্রেণির ছাত্রদের বই দিতে থাকেন জিয়াউল। তার দেওয়া বই পড়ে ও আর্থিক সহায়তা পেয়ে অনেকেই স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করে চাকরি করছেন। শুধু তাই নয়, দই বিক্রি করা টাকায় বইয়ের ভান্ডার গড়ে তোলেন। ১৯৬৯ সালে নিজের বাড়ির একটি ঘরে প্রতিষ্ঠা করেন ‘জিয়াউল হক সাধারণ পাঠাগার’। এ পাঠাগারে এখন ১৪ হাজার বই আছে বলে জানা গেছে।

ভোলাহাট উপজেলার স্থানীয় বাসিন্দা জামিল। তিনি বলেন, ৬৫ বছর ধরে জেলার বিভিন্ন স্থানে সাইকেলে চেপে মাথায় দই নিয়ে বিক্রি করেন জিয়াউল হক। আর এ দই বিক্রি থেকে যে টাকা আয় হয়, তা দিয়েই সমাজসেবা চালিয়ে যান। এলাকার শত শত মানুষের উপকার করেছেন তিনি। বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেও অনুদান দিয়েছেন। এমনকি, কেউ টাকার অভাবে পড়ালেখা করতে পারছেন না শুনলে তার দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন সবসময়।

 

 

 

 

 

 

আপলোডকারীর তথ্য

Banglar Alo News

hello
জনপ্রিয় সংবাদ

জেলা পরিষদের সদস্য ও বাইশারীর কৃতি সন্তানদের গণসংবর্ধনা

সমাজসেবায় একুশে পদক পেলেন দই বিক্রেতা জিয়াউল হক।

আপডেট সময় ০৮:১৪:১৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২০ ফেব্রুয়ারী ২০২৪

 

 

নুরুন নাহার বেবী, নিজস্ব প্রতিবেদক 

বাংলাদেশের চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার সীমান্তঘেঁষা ভোলাহাট উপজেলার মুসরিভূজা গ্রামের বাসিন্দা জিয়াউল হক (৯১)। পেশায় তিনি একজন সাধারণ দই বিক্রেতা হলেও তার নেশা সমাজসেবা। দই বিক্রির টাকায় তিনি তৈরি করেছেন লাইব্রেরি।

এছাড়া স্কুল ও কলেজের শিক্ষার্থীদের বিনামূল্যে বই দেওয়াসহ সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে নিয়মিত অনুদান দেন জিয়াউল হক। তাই তাকে সবাই চেনে সাদা মনের মানুষ হিসেবে।

সম্প্রতি বিভিন্ন বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ দেশের ২১ জন নাগরিককে একুশে পদক দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। ১৩ ফেব্রুয়ারি সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব আইরীন ফারজানার সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে পদকপ্রাপ্তদের তালিকা প্রকাশ করা হয়। সেই তালিকায় নাম রয়েছে প্রত্যন্ত অঞ্চলের দই বিক্রেতারও। সমাজসেবায় অবদান রাখায় এই পদক পাচ্ছেন তিনি।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জিয়াউল হকের বাবার নাম মরহুম তৈয়ব আলী মোল্লা এবং মায়ের নাম শরীফুন নেছা। তার বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার ভোলাহাট উপজেলার ৩ নম্বর দলদলী ইউনিয়নের চামা মুশরিভুজা গ্রামে। প্রথম স্ত্রীর মৃত্যুর পর বর্তমানে তিনি বটতলা গ্রামে দ্বিতীয় স্ত্রীকে নিয়ে বসবাস করছেন।

জিয়াউল হক ১৯৫৫ সালে পঞ্চম শ্রেণি পাস করে ষষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তি হতে চান। কিন্তু বাড়ি বাড়ি গরুর দুধ দহন করে জীবিকা নির্বাহ করা বাবা বই কেনার জন্য দেড় টাকা দিতে পারেননি। এই কারণে উচ্চবিদ্যালয়েও ভর্তি হওয়া হয়নি তার। এরপর বাবার সংগ্রহ করা দুধ দিয়ে দই তৈরি করে ফেরি করে বিক্রি করা শুরু করেন। দু তিন বছর পর কিছু টাকা জমা হয় জিয়াউল হকের হাতে। তখন জিয়াউল হকের চিন্তা হয়, যারা তার মতো টাকার অভাবে বই কিনতে না পেরে লেখাপড়া থেকে ছিটকে পড়তে পারে, তাদের তিনি এই টাকা দিয়ে বই কিনে দেবেন। তবেই তার বিদ্যালয়ে পড়তে না পারার বেদনা লাঘব হবে।

আর এই লক্ষ্য সামনে রেখে গরিব ছাত্রদের মধ্যে বই বিলি শুরু করেন। যতদিন পর্যন্ত সরকার বই বিনা মূল্যে দেওয়া শুরু করেনি, ততোদিন পর্যন্ত বই দিতে থাকেন। এরপর উচ্চমাধ্যমিক ও স্নাতক শ্রেণির ছাত্রদের বই দিতে থাকেন জিয়াউল। তার দেওয়া বই পড়ে ও আর্থিক সহায়তা পেয়ে অনেকেই স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করে চাকরি করছেন। শুধু তাই নয়, দই বিক্রি করা টাকায় বইয়ের ভান্ডার গড়ে তোলেন। ১৯৬৯ সালে নিজের বাড়ির একটি ঘরে প্রতিষ্ঠা করেন ‘জিয়াউল হক সাধারণ পাঠাগার’। এ পাঠাগারে এখন ১৪ হাজার বই আছে বলে জানা গেছে।

ভোলাহাট উপজেলার স্থানীয় বাসিন্দা জামিল। তিনি বলেন, ৬৫ বছর ধরে জেলার বিভিন্ন স্থানে সাইকেলে চেপে মাথায় দই নিয়ে বিক্রি করেন জিয়াউল হক। আর এ দই বিক্রি থেকে যে টাকা আয় হয়, তা দিয়েই সমাজসেবা চালিয়ে যান। এলাকার শত শত মানুষের উপকার করেছেন তিনি। বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেও অনুদান দিয়েছেন। এমনকি, কেউ টাকার অভাবে পড়ালেখা করতে পারছেন না শুনলে তার দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন সবসময়।