
রিয়াদ মাহমুদ সিকদার, কাউখালী (পিরোজপুর) প্রতিনিধি।
পিরোজপুরের কাউখালীতে শুরু হয়েছে উপজেলা নির্বাচনের সরগম। প্রার্থীরা মাঠে নেমে গেছেন। এবার চার ধাপে উপজেলা পরিষদ ভোট নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন, আর ১১মে দ্বিতীয় ধাপে কাউখালী উপজেলার ৬২হাজার ৪শত ৯৯জন ভোটার উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও নারী ভাইস চেয়ারম্যান পদে তাদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করবেন।
আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে সামনে রেখে নড়ে চড়ে বসেছেন সম্ভাব্য চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীরা। এবারের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ দলীয়ভাবে মনোনয়ন না দেয়ার সিদ্ধান্তের কারনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে পিরোজপুরের কাউখালী উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচনের জন্য জোর প্রস্তুতি নিচ্ছেন উপজেলার ৮জন সম্ভাব্য প্রার্থী।
ইতোমধ্যে ভোটারদের আকৃষ্ট করতে প্রার্থীরা তাদের পরিচয় তুলে ধরছেন এবং প্রতিনিয়ত ভোটারদের সাথে কুশল বিনিময় করে প্রার্থী হওয়ার কথা জানিয়ে দোয়া চাইছেন। সম্ভাব্য চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীরা হাট বাজারে গিয়ে প্রার্থীতা জানান দিয়ে ভোটারদের সাথে সম্পর্ক গড়ার চেষ্টা করছেন। তারা এলাকার ধর্মীয়, সামাজিক ও রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে- অংশগ্রহণ করে ভোটারদের কাছে টানার চেষ্টা করছেন।
সম্ভাব্য প্রার্থীদের আগাম প্রচারে সরব হয়ে উঠেছে ভোটের মাঠ। অনেকেই আবার ভোটারদের সঙ্গে কুশল বিনিময়, উঠান বৈঠক ও কর্মী সমাবেশ শুরু করছেন। সামাজিক নানা ধরনের অনুষ্ঠানে হাজির হচ্ছেন তারা। নির্বাচন যতোই ঘনিয়ে আসছে ততোই প্রার্থীদের কর্মী সমর্থকরা তাদের পছন্দের প্রার্থীর জন্য দোয়া চেয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে ভোটারদের কাছে তাদের প্রশংসা করে পরিচয় তুলে ধরার চেষ্টা করছেন।
উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে সম্ভাব্য চেয়ারম্যান পদে যারা প্রস্তুতি নিয়ে কাজ করছেন তারা হলেন:- কাউখালী উপজেলা পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান আবু সাঈদ মিঞা মনু, কাউখালী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা এডভোকেট আব্দুস শহীদ, উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান মোঃ মনিরুজ্জামান তালুকদার পল্টন, উপজেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আমিনুর রশীদ মিল্টন, কাউখালী উপজেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক ও বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সহ সম্পাদক বিশ্বজিৎ পাল, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও জেলা পরিষদের সাবেক সদস্য মামুন হোসাইন বাবলু জোমাদ্দার, সয়না রঘুনাথপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবু সাঈদ।
এছাড়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে দলীয় প্রতীক না দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়ায় এবং বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার সম্মতি দিলে উপজেলা বিএনপির আহবায়ক ও দুই বারের সাবেক উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এস এম আহসান কবীর স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারেন বলে তিনি জানিয়েছেন।
উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে সম্ভাব্য ভাইস চেয়ারম্যান পদে যারা প্রস্তুতি নিয়ে কাজ করছেন তারা হলেন:- কাউখালী উপজেলা পরিষদের বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ মৃদুল আহম্মেদ সুমন, উপজেলা আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক ও কাউখালী পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক বিপুল বরণ ঘোষ, কাউখালী আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ সাজেদুল ইসলাম সোহেল, জাতীয় ছাত্র সমাজ (জেপি) কাউখালী উপজেলার শাখার সভাপতি মোঃ শামীম হোসেন, সাংবাদিক ফোরামের সভাপতি হাফেজ মাছুম বিল্লাহ, এবং বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার সম্মতি দিলে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবেন উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক জিয়াউল হাসান নিক্সন ও উপজেলা যুবদলের সদস্য সচিব শারিফুল আজম সোহেল, মৎস্যজীবী সাইদুর রহমান, সয়না রঘুনাথপুর ইউনিয়নের রেমান।
উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে সম্ভাব্য মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে যারা নির্বাচনী প্রস্তুতি নিয়ে কাজ করছেন তারা হলেন:- উপজেলা পরিষদের বর্তমান মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান নার্গিস আক্তার হাদিয়া, উপজেলা পরিষদের সাবেক মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ফাতেমা ইয়াসমিন পপি, উপজেলা যুব মহিলা লীগের সভাপতি শাহিদা হক, উপজেলা যুব মহিলা লীগের সাধারণ সম্পাদক কাশমীরী পারভীন ঝুমুর ও উপজেলা জাতীয় মহিলা পার্টি জেপির সাধারণ সম্পাদক সীমা আক্তার। তফসিল ঘোষণা না হলেও কাউখালী উপজেলার সব ইউনিয়নে নির্বাচনী হাওয়া বইছে।
আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচন সম্পার্কে ভোটারদের মতামত জানতে চাইলে তারা বলছেন নির্বাচন এলেই কেবল নেতাদের পা পড়ে প্রত্যন্ত অঞ্চলের জনপদে, যতোই নির্বাচন ঘনিয়ে আসছে ততোই প্রার্থী এবং তাদের সমর্থকদের আনাগোনা বেড়ে যায়। শুধু নির্বাচন এলেই ভোটারদের কদর বাড়ে। যতোদিন নির্বাচন থাকে ততোদনি তাদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠে গোটা অঞ্চল।
নির্বাচন চলে গেলে এসব নেতারা আর আমাদের খোজঁখবর রাখেনা। তবে এবারের নির্বাচন হবে প্রার্থীদের জনপ্রিয়তা যাচাইয়ের নির্বাচন। কারন দলীয় মনোনয়ন না হলে যোগ্য প্রার্থীকে নির্বাচিত করার ব্যাপারে ভোটাররা তাদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পারবেন।