
মোঃ আব্দল্লাহ আল মুকিম রাজু, পঞ্চগড় প্রতিনিধিঃ
উদ্দ্যেশ্য প্রণোদিত ভাবে এক মামলায় গ্রেপ্তার করে মাদকদ্রব্য রেখে ছবি ধারণ করে গণমাধ্যম কর্মীদের ছবি প্রেরণ করার অভিযোগ উঠেছে পঞ্চগড়ের বোদা থানার পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। মহা পুলিশ পরিদর্শক বরাবরে লিখিত অভিযোগ করে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে দৃস্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগী।
বোদা উপজেলার সরকারপাড়া গ্রামের মো. আলিমুজ্জামান গত ১৭ মার্চ অনলাইনে ও ২০ মার্চ ডাকযোগে মহা পুলিশ পরিদর্শক বরাবরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। অভিযোগে বিভিন্ন অলনাইনে প্রকাশিত ছবিসহ নিউজরে কপি সংযুক্ত করা হয়েছে। মিডিয়া কনফারেন্স স্থানে এ ছবি তোলা হয়।
তিনি লিখিত অভিযোগে জানান, জীবীকার সন্ধানে তিনি আট বছর পূর্বে ঢাকায় গিয়ে গার্মেন্টসে কাজ শুরু করেন। গত চার মাস আগে ঢাকা থেকে বাড়িতে ফিরে আসেন। তার অজান্তেই একটি চেকের মামলায় আদালত তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে। গত ১২ মার্চ গভীর রাতে বোদা থানার ১০/১২ জন পুলিশ তাঁর বাড়ি ঘেরাও করে এবং বাড়ির ভিতর প্রবেশ করে।
এসময় তার ও পরিবারের লোকজনের সাথে অসদাচরণ করে তাকে গ্রেপ্তার করে বোদা থানায় নিয়ে যায়। পরদিন ঢাকার মিরপুরে কর্মরত পুলিশ কনস্টেবল/ট্রাফিক আবু সায়েমের পরামর্শে বোদা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. আবু মুসা অনুমান ১২ টা থেকে একটার সময় থানায় গ্রেপ্তার হওয়া অপর দুই মাদক আসামীদের ছবি তোলার ফটোসেশনে তাকেসহ ফটো তুলতে চাইলে তিনি ফটো তুলতে অস্বীকার করেন।
এ সময় অজ্ঞাতনামা এক পুলিশ কনস্টেবল প্রতারণা করে বলে যে. তাকে বাদ দিয়ে বাকি আসামীদের ফটো তোলা হবে। কিন্তু তার নিষেধ অমান্য করে পুলিশ কনস্টেবল অন্যান্য মাদক আসামীদের সাথে তার ফটো তোলেন।
এর পর পরিদশর্ক তদন্ত মো. আবু মুসা আঙ্গুল দেখিয়ে তাকে বলেন যে, সেদিন তুমি জমিতে গেছিলে তাই না, আজ তোমাকে মাদক দিয়ে ছবি তুলেছি. তোমার ছবি সামাজিক ও গণমাধ্যমে প্রকাশ করে তোমাকে মাদক ব্যবসায়ী হিসাবে সমাজে চিহ্নিত করবো। এর পর তার সামনে মাদকদ্রব্য (গাঁজা) রেখে থানার পরিদর্শক তদন্ত মো. আবু মুসা ও অজ্ঞাতনামা পুলিশ কনস্টেবল তাদের মোবাইলে ফটো ধারণ করেন। থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মোজাম্মেল হক সব কিছু জানা সত্ত্বেও তার নেতৃত্বে তোলা ছবি সামাজিক ও গণমাধ্যম কর্মীদের নিউজ করার জন্য দেয়া হয়। পরদিন ১৪ মার্চ জামিনে মুক্তি পেয়ে জানতে পারেন যে, তাকে মাদক ব্যবসায়ী হিসেবে ছবিতে চিহ্নিত করে বিভিন্ন পত্রপত্রিকা ও অনলাইন নিউজ প্রকাশিত হয়েছে। যাহাতে তিনিসহ তার পরিবারের লোকজন সামাজিকভাবে হেয়প্রতিপন্নসহ তাদের মান-সম্মান ক্ষুন্ন করা হয়েছে। পুলিশ কনস্টেবল আবু সায়েমের শ^শুর সানাউল্লাহর সাথে সম্প্রতি আলিমুজ্জামানের জমি নিয়ে বিরোধ দেখা দেয়। আলিমুজ্জামানের চাচা সানাউল্লাহ। সানাউল্লাহ জামাই পুলিশ কনস্টেবল আবু সায়েম। আলিমুজ্জামানের অভিযোগ পুলিশ কনস্টেবল আবু সায়েম সু-পরিকল্পিতভাবে মোটা অংকের টাকার লোভে প্রভাবিত করে বোদা থানার পুলিশকে দিয়ে এ ঘটনা ঘটিয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পঞ্চগড়ের একজন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ও মানবাধিকারকর্মী অভিযোগটি শুনে বলেন, পুলিশ যদি এমনটা করে থাকেন তাহলে ওই ব্যক্তির মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছেন। পাশাপাশি ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ভঙ্গ করেছেন। জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনী বা বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া উচিত।