বাংলাদেশ ০২:১২ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৫ মার্চ ২০২৫, ৩০ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
নোটিশ :

সাংবাদিক নিয়োগ চলছে,, সাংবাদিক নিয়োগ চলছে,,০১৯৯৯-৯৫৩৯৭০, ০১৭১২-৪৪৬৩০৬,০১৭১১-০০৬২১৪ সম্পাদক

     
ব্রেকিং নিউজ ::
জেলা পরিষদের সদস্য ও বাইশারীর কৃতি সন্তানদের গণসংবর্ধনা চট্টগ্রামে আঞ্চলিক গানের কিংবদন্তি শিল্পী শেফালী ঘোষ সরকারি চাকুরির প্রলোভন দেখিয়ে টাকা আত্মসাৎকারি শীর্ষ প্রতারক হাবিবুল্লাহ হাবিব কারিকরকে গ্রেফতার করে র‌্যাব। জিয়া সেতুতে অবৈধ ডাম্প ট্রাক না চলার হুঁশিয়ারি ঘূর্ণিঝড় সিডর স্মরণে রাঙ্গাবালীতে মোমবাতি প্রজ্জ্বলন। কালুরঘাট সেতুর কাজ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হবে : সেতু উপদেষ্টা ব্রাহ্মণপাড়ায় বিপুল পরিমাণ মাদক ও অবৈধ ভারতীয় মালামাল জব্দ পীরগঞ্জে আবু সাঈদের কবর জেয়ারত করেছেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ও আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক। ইন্দুরকানিতে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিল পিরোজপুরে জোড়া খুন এর মামলায় ২১ বছরের সাজাপ্রাপ্ত আসামী খাগড়াছড়ি থেকে গ্রেপ্তার বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবস উপলক্ষে আলোচনা ও আপনজন সম্মাননা চাঁদা আদায়ের উদ্দেশ্যে অপহৃত মসজিদের ইমাম হাফেজ সোলাইমান কে উদ্ধার অপহরণকারী দাদনকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব। নাটোরে ভোরের চেতনা পত্রিকার ২৬ তম বর্ষপূর্তী উদযাপিত। বিস্ফোরক আইনে প্রধান শিক্ষক শফিক গ্রেফতার বিএনপি নেতা – কর্মীদের ওপর বোমা হামলার অভিযোগ

সিংড়ায় ব্যাপকভাবে চায়না জালে পোনা মাছ নিধন চলছে

  • নিজস্ব সংবাদ :
  • আপডেট সময় ০৩:১৫:১৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৯ জুলাই ২০২৪
  • ১৬৩০ বার পড়া হয়েছে

 

 

 

আলিফ বিন রেজা, সিংড়া (নাটোর) প্রতিনিধি:
এখন বর্ষাকাল। মৎস্য ভান্ডার নামে খ্যাত চলনবিল অধ্যুষিত নাটোরের সিংড়া উপজেলায় নতুন বন্যার পানিতে ঝাঁক বেঁধে বিচরণ করছে অসংখ্য দেশি প্রজাতি মাছের পোনা। মৎস্য আইনে ৩১ আগষ্ট পর্যন্ত মাছ ধরা নিষেধ থাকলেও এক শ্রেণির মানুষ তা মানছেন না। নিষিদ্ধ চায়না দুয়ারী জালে নিধন করছেন নানা রকম দেশি প্রজাতি মাছের পোনা। আএতে ধ্বংস হচ্ছে মৎস্যসম্পদ ও জলজপ্রাণী। ফলে হুমকির মুখে পড়েছে জীববৈচিত্র্য। এসব বন্ধের দাবি জানিয়েছেন সচেতন মহল। তবে নির্দিষ্ট সময়ে বন্যার পানি থাকলে মাছের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে বলে আশা করছেন উপজেলা মৎস্য বিভাগ।

দেশের বৃহত্তম মিঠা পানির মাছের প্রধান উৎস চলনবিলে এখনো প্রায় ৪৪ প্রজাতি দেশি মাছ পাওয়া যায়, যা দেশের চাহিদা মিটিয়ে পাশের দেশ ভারতেও রপ্তানি করা হয়। উপজেলা মৎস্য বিভাগ বলছে, প্রতি বছর এ উপজেলা থেকে প্রায় ২১ হাজার মেট্রিক টন মাছ উৎপাদন করা হয় এর মধ্যে শুধু উন্মুক্ত জলাশয় থেকে বর্ষাকাল সহ বছরে মাছ আহরণ করা হয় প্রায় সাড়ে ৮ হাজার মেট্রিক টন। বাকি মাছ পুকুর ও অন্যান্য জলাশয়ে চাষ করা হয়। উন্মুক্ত জলাশয় থেকে উৎপাদিত শুটকি মাছ ও চাষকৃত সাদা পাবদা মাছ পাশের দেশ ভারতে রপ্তানি করা হয়। যা বৈদেশিক আয়ের একটি উৎস এই চলনবিল।

সাধারণত শ্রাবণ মাসের মাঝামাঝি সময়ে এ বিলে দেশি প্রজাতি মাছের প্রজননকাল। আষাঢ় মাসের শুরুতেই এ বছর বিলে পানি আসায় এবং পানি বেশি থাকায় পোনা মাছের উৎপাদন লক্ষ্য মাত্রার চেয়ে বেশি দেখা যাচ্ছে। মৎস্য প্রজননের এই সময়ে মাছ ধরা নিষেধ থাকলেও মানছেন না কেউ। এসব পোনা মাছ ধরার জন্যে মরিয়া হয়ে উঠেছে কিছু অসাধু মৎস্যজীবি।

বানা, কারেন্ট জাল, চায়না জাল সহ বিভিন্ন অবৈধ ফাঁদ পেতে অবাধে নিধন করছে মা ও পোনা মাছ। মাছ শিকারের এসব ফাঁদের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ হলো চায়না দুয়ারী জাল। মাছের পাশাপাশি চায়না দুয়ারী জালের হাত থেকে রক্ষা পাচ্ছে না কাঁকড়া, ব্যাঙ, কুইচা, সাপসহ অধিকাংশ জলজ প্রাণী। এতে ধ্বংস হচ্ছে মৎস্য সম্পদ ও জলজ প্রাণী, হুমকিতে পড়েছে জীববৈচিত্র্য।

সিংড়া উপজেলায় সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, পৌর এলাকার উত্তর দমদমা, দক্ষিণ দমদমা, ফলিয়া, হিয়ালা বিল ও কয়া, চৌগ্রাম, ছাতারদিঘী, ডাহিয়া, কলম, তাজপুর ও শেরকোল ইউনিয়নের বিভিন্ন জায়গায় চায়না দুয়ারীসহ অবৈধ ফাঁদ পেতে পোনা মাছ নিধনের উৎসব চলছে। এসব মাছ প্রকাশে বিক্রয় করছেন স্থানীয় বাজারে।

উপজেলার ডাহিয়া বাজারের কৃষক আলহাজ্ব ও শালমারা গ্রামের মাহাবুর শেখ জানান, প্রতিদিন সকালে মাছের বাজারে চায়না দুয়ারী জালে আটকা পড়া টাকি, শোল, কৈ, বোয়াল, ভেদা, শিং, মাগুরসহ বিভিন্ন প্রজাতির দেশি মাছের পোনা বিক্রয় করছেন এক শ্রেণির অসাধু জেলেরা। উৎসুক হয়ে এসব মাছ কিনছেন কেউ কেউ। তিনি প্রশাসনের কাছে বন্ধের দাবি জানান।

পৌর শহরের আশরাফুল ইসলাম নাইচ বলেন, চায়না জালে সকল প্রকার মাছ ও অন্যান্য জলজ প্রাণী আটকা পরে। যা জীববৈচিত্র্যের জন্য ক্ষতি।

সিংড়া পরিবেশ ও প্রকৃতি আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক মো. আবু জাফর সিদ্দিকী বলেন, আইনের যথাযথ প্রয়োগ ও বাস্তবায়নের পাশাপাশি সামাজিকভাবে জনসচেতনতা সৃষ্টি করে মাছ শিকারের সব ধরনের অবৈধ ফাঁদ বন্ধ করতে পারলে মাছ নিধন ও অন্যান্য জলজপ্রাণী ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করা সম্ভব।

সিংড়া সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোঃ শাহাদত হোসেন বলেন, চলতি অর্থ বছরের শুরুতেই স্থানীয় বাজার গুলোতে ৮টি অভিযান ও মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হয়েছে। এতে ৭৫০ মিটার চায়না দুয়ারী ও প্রায় দেড় লক্ষ মিটার কারেন্ট জাল জব্দ করে পোড়ানো হয়েছে। আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। স্থানীয় মাছের বাজারগুলোতে প্রতিনিয়ত মনিটরিং করা হচ্ছে। নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত বিলে বন্যার পানি থাকলে মাছের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে বলে আমরা আশা করছি।

 

 

 

 

আপলোডকারীর তথ্য

Banglar Alo News

hello
জনপ্রিয় সংবাদ

জেলা পরিষদের সদস্য ও বাইশারীর কৃতি সন্তানদের গণসংবর্ধনা

সিংড়ায় ব্যাপকভাবে চায়না জালে পোনা মাছ নিধন চলছে

আপডেট সময় ০৩:১৫:১৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৯ জুলাই ২০২৪

 

 

 

আলিফ বিন রেজা, সিংড়া (নাটোর) প্রতিনিধি:
এখন বর্ষাকাল। মৎস্য ভান্ডার নামে খ্যাত চলনবিল অধ্যুষিত নাটোরের সিংড়া উপজেলায় নতুন বন্যার পানিতে ঝাঁক বেঁধে বিচরণ করছে অসংখ্য দেশি প্রজাতি মাছের পোনা। মৎস্য আইনে ৩১ আগষ্ট পর্যন্ত মাছ ধরা নিষেধ থাকলেও এক শ্রেণির মানুষ তা মানছেন না। নিষিদ্ধ চায়না দুয়ারী জালে নিধন করছেন নানা রকম দেশি প্রজাতি মাছের পোনা। আএতে ধ্বংস হচ্ছে মৎস্যসম্পদ ও জলজপ্রাণী। ফলে হুমকির মুখে পড়েছে জীববৈচিত্র্য। এসব বন্ধের দাবি জানিয়েছেন সচেতন মহল। তবে নির্দিষ্ট সময়ে বন্যার পানি থাকলে মাছের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে বলে আশা করছেন উপজেলা মৎস্য বিভাগ।

দেশের বৃহত্তম মিঠা পানির মাছের প্রধান উৎস চলনবিলে এখনো প্রায় ৪৪ প্রজাতি দেশি মাছ পাওয়া যায়, যা দেশের চাহিদা মিটিয়ে পাশের দেশ ভারতেও রপ্তানি করা হয়। উপজেলা মৎস্য বিভাগ বলছে, প্রতি বছর এ উপজেলা থেকে প্রায় ২১ হাজার মেট্রিক টন মাছ উৎপাদন করা হয় এর মধ্যে শুধু উন্মুক্ত জলাশয় থেকে বর্ষাকাল সহ বছরে মাছ আহরণ করা হয় প্রায় সাড়ে ৮ হাজার মেট্রিক টন। বাকি মাছ পুকুর ও অন্যান্য জলাশয়ে চাষ করা হয়। উন্মুক্ত জলাশয় থেকে উৎপাদিত শুটকি মাছ ও চাষকৃত সাদা পাবদা মাছ পাশের দেশ ভারতে রপ্তানি করা হয়। যা বৈদেশিক আয়ের একটি উৎস এই চলনবিল।

সাধারণত শ্রাবণ মাসের মাঝামাঝি সময়ে এ বিলে দেশি প্রজাতি মাছের প্রজননকাল। আষাঢ় মাসের শুরুতেই এ বছর বিলে পানি আসায় এবং পানি বেশি থাকায় পোনা মাছের উৎপাদন লক্ষ্য মাত্রার চেয়ে বেশি দেখা যাচ্ছে। মৎস্য প্রজননের এই সময়ে মাছ ধরা নিষেধ থাকলেও মানছেন না কেউ। এসব পোনা মাছ ধরার জন্যে মরিয়া হয়ে উঠেছে কিছু অসাধু মৎস্যজীবি।

বানা, কারেন্ট জাল, চায়না জাল সহ বিভিন্ন অবৈধ ফাঁদ পেতে অবাধে নিধন করছে মা ও পোনা মাছ। মাছ শিকারের এসব ফাঁদের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ হলো চায়না দুয়ারী জাল। মাছের পাশাপাশি চায়না দুয়ারী জালের হাত থেকে রক্ষা পাচ্ছে না কাঁকড়া, ব্যাঙ, কুইচা, সাপসহ অধিকাংশ জলজ প্রাণী। এতে ধ্বংস হচ্ছে মৎস্য সম্পদ ও জলজ প্রাণী, হুমকিতে পড়েছে জীববৈচিত্র্য।

সিংড়া উপজেলায় সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, পৌর এলাকার উত্তর দমদমা, দক্ষিণ দমদমা, ফলিয়া, হিয়ালা বিল ও কয়া, চৌগ্রাম, ছাতারদিঘী, ডাহিয়া, কলম, তাজপুর ও শেরকোল ইউনিয়নের বিভিন্ন জায়গায় চায়না দুয়ারীসহ অবৈধ ফাঁদ পেতে পোনা মাছ নিধনের উৎসব চলছে। এসব মাছ প্রকাশে বিক্রয় করছেন স্থানীয় বাজারে।

উপজেলার ডাহিয়া বাজারের কৃষক আলহাজ্ব ও শালমারা গ্রামের মাহাবুর শেখ জানান, প্রতিদিন সকালে মাছের বাজারে চায়না দুয়ারী জালে আটকা পড়া টাকি, শোল, কৈ, বোয়াল, ভেদা, শিং, মাগুরসহ বিভিন্ন প্রজাতির দেশি মাছের পোনা বিক্রয় করছেন এক শ্রেণির অসাধু জেলেরা। উৎসুক হয়ে এসব মাছ কিনছেন কেউ কেউ। তিনি প্রশাসনের কাছে বন্ধের দাবি জানান।

পৌর শহরের আশরাফুল ইসলাম নাইচ বলেন, চায়না জালে সকল প্রকার মাছ ও অন্যান্য জলজ প্রাণী আটকা পরে। যা জীববৈচিত্র্যের জন্য ক্ষতি।

সিংড়া পরিবেশ ও প্রকৃতি আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক মো. আবু জাফর সিদ্দিকী বলেন, আইনের যথাযথ প্রয়োগ ও বাস্তবায়নের পাশাপাশি সামাজিকভাবে জনসচেতনতা সৃষ্টি করে মাছ শিকারের সব ধরনের অবৈধ ফাঁদ বন্ধ করতে পারলে মাছ নিধন ও অন্যান্য জলজপ্রাণী ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করা সম্ভব।

সিংড়া সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোঃ শাহাদত হোসেন বলেন, চলতি অর্থ বছরের শুরুতেই স্থানীয় বাজার গুলোতে ৮টি অভিযান ও মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হয়েছে। এতে ৭৫০ মিটার চায়না দুয়ারী ও প্রায় দেড় লক্ষ মিটার কারেন্ট জাল জব্দ করে পোড়ানো হয়েছে। আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। স্থানীয় মাছের বাজারগুলোতে প্রতিনিয়ত মনিটরিং করা হচ্ছে। নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত বিলে বন্যার পানি থাকলে মাছের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে বলে আমরা আশা করছি।