
মোঃ শহিদুল ইসলাম, টাঙ্গাইল জেলা প্রতিনিধিঃ
খাদ্য তালিকায় ধানের পরেই গমের স্থান থাকলেও দিন দিন গম চাষে আগ্রহ হারাচ্ছে টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর উপজেলার গম চাষিরা। আজ থেকে ৮/১০ বছর আগে ধানের জমিতে ধান চাষের পাশাপাশি গম চাষ করতেন চাষিরা। গম চাষের জন্য উপযোগী মাটির উর্বরতা হারাচ্ছে উপজেলার যমুনা চরাঞ্চলসহ গ্রামাঞ্চলের জমিগুলোতে। বন্যা পরবর্তী শুকনো মৌসুমে দিগন্তজুড়া বালুচরে গম চাষ করেন চরাঞ্চলের কৃষকরা।
অন্যদিকে, গ্রামাঞ্চলের জমিগুলোতে এক বছরে এক সিজেনে ধান চাষ ও অন্য সিজেনে গম চাষ করতেন কৃষকরা। কিন্তু বর্তমানে শ্রমিক সংকট, ভালো বীজের অভাব, মাড়াইয়ের সমস্যা, বৈরী আবহাওয়া ও বিষবৃক্ষ তামাক চাষের কারণে জমির উর্বরতা নষ্ট হয়ে যাওয়াসহ বিভিন্ন কারণে গমের পরিবর্তে অন্যান্য ফসল চাষ করছেন বলে জানান চাষিরা।
সরেজমিনে উপজলোর যমুনা চরাঞ্চল ঘুরে দেখা গেছে, যমুনার বুকে জেগে উঠা চরাঞ্চলে কিছু জমিতে গম চাষ হলেও বাকি জমগিুলোতে বাদাম, বোরো ধান, ভুট্টা, বিষবৃক্ষ তামাকসহ অন্যান্য ফসল চাষ হচ্ছে। তবে চরাঞ্চলের চেয়ে উপজেলার গ্রামাঞ্চল গুলোতে গম চাষ ভালো হয়েছে। এর মধ্যে উপজেলার আগতেরিল্যা এলাকায় ১০৩ হেক্টর ধান চাষের জমিতে গম চাষ করা হয়েছে। গম চাষের খরচের চেয়ে অন্যান্য ফসল চাষে খরচ অনেক কম, লাভ অনেক বেশি। সে কারণেই কৃষকদের আবাদের তালিকা থেকে গম চাষ ক্রমেই হারিয়ে যাচ্ছে। গত কয়েক বছরে গমের ফলন ভালো না হওয়ায় গম চাষে ঝুঁকি নিচ্ছেননা এখানকার চাষিরা। তবে উপজেলা কৃষি অফিস থেকে চাষিদেরকে গম চাষে উৎসাহিত করতে মাঠ দিবসসহ মাঠ পর্যায়ে গিয়ে কৃষকদেরকে বিভিন্ন পরামর্শ দিয়ে আসছেন।
গম চাষিরা জানান, বর্তমানে আমাদের চরাঞ্চলের অন্যান্য ফসলের চেয়ে গম চাষে লাভ অনেক কম। গম আবাদ করতে গেলে অনেক খরচ হয়, শ্রমিকরাও গম খেতে কাজ করতে চায় না। বিষবৃক্ষ তামাক চাষের কারণে মাটির উর্বরতা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। কয়েক বছর আগেও আমরা বিঘায় বিঘায় গম চাষ করেছি। এ বছর কিছু জমিতে গমের চাষ করলেও ফলন তেমন ভালো হয়নি। তবে ফলন ভালো হলে এবং বাজারে গমের ভালো দাম পেলে আবার আমরা আগের মতো গম চাষ শুরু করবো।
এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ ডা. মোঃ হুমায়ুন কবির দৈনিক সংবাদ সারাবেলা’কে বলেন, যমুনা চরাঞ্চলসহ উপজেলায় ৯১০ হেক্টর জমিতে গম চাষ করা হয়েছে। ইতিমধ্যে গম কাটা শুরু হয়েছে এবং ফলন মোটামটি ভালো হয়েছে। আমরা গম চাষিদেরকে মাঝে মধ্যে বিনামূল্যে উন্নত মানের গমের বীজ ও সার বিতরণসহ মাঠ পর্যায়ে গিয়ে ভালো ফলনের জন্য কৃষকদের বিভিন্ন পরামর্শ দিয়েছি। আশাকরি আগামীতে আরও বেশি জমিতে গম চাষ করবে কৃষকরা।