
ভূরুঙ্গামারী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধিঃ
কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারীর দুধকুমার, কালজানি ও সংকোষ নদের বুকে জেগে ওঠা চরে বোরো ধানের আবাদ করেছে এখানকার কৃষকরা। কিন্তু গত সাত দিনের টানা বৃষ্টির ফলে বোরো আবাদ পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় ক্ষতির আশঙ্কায় করছেন চাষিরা। গত কয়েক দিনের ভারি বৃষ্টি আর উজান থেকে নেমে আসা ঢলের কারণে ভূরুঙ্গামারীর সব কটি নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে নদীর তীরবর্তী নিচু অঞ্চলে রোপণ করা স্থানীয় জাতের কালো বোরো ধান ক্ষেতে পানি প্রবেশ করে তলিয়ে গেছে। চরের নদী ভাঙনে অনেক ভূমিহীন, দরিদ্র, গরিব ও অসহায় চাষিরা এই কালো বোরো ধান নদীর ধারে রোপণ করেছিলেন। আশা ছিল ধান উত্তোলন করতে পারলে এ ফসল থেকে লাভবান হওয়ার। আর কয়েক দিন পরেই সেসব ধান কেটে কৃষকের ঘরে তোলার কথা। কিন্তু সে আশা এখন নিরাশায় পরিণত হয়েছে।
উপজেলার নলেয়া, দক্ষিন তিলাই, পাইকের ছড়া, আন্ধারীঝার, বহলগুড়ি, পাইকডাঙ্গা ও ঝুকিয়া এলাকা ঘুরে দেখাগেছে, কয়েক শত হেক্টর জমির ধান পানির নিচে তলিয়ে গেছ।এছাড়াও পানি জমেছে পটল, ঝিঙা, মরিচ, করলা, শসা, চিচিঙ্গা ও শাক-সবজির ক্ষেতে।কোথাও কোথাও ধানের গাছ ও সবজি পচে গেছে। কৃষকদের সাথে কথা বললে তারা জানান,বোরো ধানের আশানুরুপ ফসল ঘরে তোলার স্বপ্ন দেখলেও ভারি বৃষ্টি হওয়ায় সেই স্বপ্ন ভেসে যাচ্ছে বলে জানান অনেক বোরো চাষিরা। তাদের মতে হঠাৎ নদীর পানি বৃদ্ধি হওয়ায় ধানের খড় নিয়েও দুশ্চিন্তায় আছেন।
উপজেলার পাইকেরছড়া ইউনিয়নের গছিডাংগা গ্রামের আজাদুল বলেন, ৩ বিঘা জমিতে ধান চাষ করেছি। এখন ধান খেত পানিতে তলিয়ে আছে। কিছু কিছু ধান পচে গেছে। এভাবে বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে সব ধান পচে যাবে।
ঝুকিয়া এলাকার আমজাদ হোসেন বলেন, অনেক কষ্ট করে বর্গানিয়ে দুই বিঘা জমিতে ধান গাড়ছিলাম তাও তো পানির নিচে চলে গেলো। ভালো ফলন না হলে তো লোকসান গুনতে হবে।
আরাজি পাইক ডাঙ্গা গ্রামের কৃষক আব্দুস সাত্তার বলেন, প্রতি বছরের মত এবারও দুধকুমার নদের ধারে প্রায় আড়াই বিঘা জমিতে বোরো আবাদ করছি। আশা করছিলাম ভালো ফসল পাবো। কিন্তু হঠাৎ ভারি বৃষ্টি হওয়ায় ধানগুলো তলিয়ে গেছে। পানি না কমলে সব ধান পচে যাবে।
কুড়িগ্রাম রাজারহাট কৃষি আবহাওয়া পর্যবেক্ষনাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুস সবুর জানান,গত এক সপ্তাহে কুড়িগ্রামে ২০৫ মিঃমিঃ বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এদিকে আগামীকাল সকাল ৯ পর্যন্ত রংপুর বিভাগে হালকা বজ্র বৃষ্টিসহ ঝড়ো হাওয়া বয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানান তিনি। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান জানান, ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ও ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের তালিকা প্রণয়নে কাজ চলছে।