
প্রেস বিজ্ঞপ্তি
র্যাব-১১ এর অভিযানে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ হতে ধারালো অস্ত্র ও ককটেলসহ মহাসড়কে ডাকাতির সংঘবদ্ধ ডাকাত চক্রের ০৬ সদস্য গ্রেফতার॥
র্যাব প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে সমাজের বিভিন্ন অপরাধ এর উৎস উদঘাটন, অপরাধীদের গ্রেফতারসহ আইন শৃঙ্খলার সামগ্রিক উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। বিভিন্ন অপরাধীদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনার জন্য র্যাব ফোর্সেস নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করে থাকে। দায়িত্বপূর্ণ এলাকায় ডাকাতি ও সন্ত্রাসী কর্মকান্ড দমনের লক্ষ্যে অত্যন্ত পেশাদারিত্বের সাথে র্যাব জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেফতার ও আইনের আওতায় আনার জন্য নিয়মিত সন্ত্রাস বিরোধী অভিযান পরিচালনা করে থাকে।
https://youtu.be/ICr9xMjLwvA
সম্প্রতি নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁ থানা এলাকায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে বেশ কয়েকটি চাঞ্চল্যকর ডাকাতির ঘটনা ঘটে। উক্ত ডাকাতি সংক্রান্ত ঘটনাগুলোর প্রেক্ষিতে এলাকার সাধারণ জনগণ ও মহাসড়কে চলাচলরত যাত্রীসাধারণের মধ্যে ব্যপক আতঙ্কের সৃষ্টি হয়। ডাকাতির ঘটনাগুলো নারায়ণগঞ্জের স্থানীয় গণমাধ্যমসহ দেশের শীর্ষস্থানীয় বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়। ডাকাতির ঘটনা ঘটার দ্রুততম সময়ের মধ্যে র্যাব ঘটনা সংক্রান্তে প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহ করে সেগুলো পর্যালোচনা শুরু করে।
এছাড়াও ভুক্তভোগীদের নিকট থেকে প্রয়োজনীয় তথ্য এবং ডাকাতদের গ্রেফতারের জন্য আবেদন পাওয়া যায়। লক্ষ্য করে দেখা যায় যে, গত বেশ কিছুদিন ধরে ধারাবাহিকভাবে নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁ থানা এলাকা ও ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে দূর্ধষ ডাকাতির ঘটনা ঘটছে এবং সবগুলি ডাকাতির ঘটনা প্রায় একই রকম। এতে ধারণা করা যায়, একটি বড় সংঘবদ্ধ ডাকাত দল অত্র এলাকাসমূহতে পরিকল্পিতভাবে ডাকাতি করে আসছে।
ডাকাতদের বয়স, ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত অস্ত্রের ধরন এবং লুণ্ঠিত দ্রব্যাদি সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করে র্যাবের একটি চৌকস গোয়েন্দা দল গোপনে ঢাকা- চট্টগ্রাম মহাসড়কে ডাকাত প্রবণ এলাকায় কঠোর গোয়েন্দা নজরদারি শুরু করে এলাকার কিছু সক্রিয় ডাকাত সদস্যকে সনাক্ত করে তাদের গতিবিধি লক্ষ্য করা হয় এবং একইসাথে তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তা নেওয়া হয়।
এরই ধারাবাহিকতায় গোপন সূত্রে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে র্যাব-১১, সিপিএসসি এর একটি আভিযানিক দল কর্তৃক ১৫ মে ২০২২ খ্রিষ্টাব্দে গভীর রাতে অভিযান পরিচালনা করে নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁ থানাধীন সোনাখালী এলাকায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পাশে ডাকাতির প্রস্তুতি গ্রহণকালে ধারালো অস্ত্র ও ককটেলসহ সংঘবদ্ধ ডাকাত চক্রের ০৬ জন সক্রিয় সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারকৃতরা হলোঃ ১। মোঃ আজিজুল ইসলাম (১৮), পিতা- মোঃ বাবুল হোসেন, সাং- নানাকি মধ্যপাড়া, ওলিপুর বাজার, থানা- সোনারগাঁও, জেলা- নারায়ণগঞ্জ; ২। মোঃ সাইফুল ইসলাম @ সাইদুর (২০), পিতা- মোঃ শফিকুল ইসলাম, সাং- শারেং সরকার চাপাতলী, থানা-বন্দর, জেলা- নারায়ণগঞ্জ; ৩। মোঃ হৃদয় (১৮), পিতা- মোঃ দায়েন, সাং- নানাকি মধ্যপাড়া, ওলিপুর বাজার, থানা- সোনারগাঁও, জেলা- নারায়ণগঞ্জ; ৪। মোঃ তালিফ হোসেন (২৩), পিতা- মোঃ দেলোয়ার হোসেন, সাং- ইটেরপুল, থানা-বন্দর, জেলা-নারায়ণগঞ্জ ৫। মোঃ রাজু আহম্মেদ (২২), পিতা- মোঃ ইব্রাহিম, সাং- হরিপুর সিড়ি ব্রীজ, থানা-বন্দর, জেলা-নারায়ণগঞ্জ এবং ৬। মোঃ ফারুক (১৯), পিতা- মোঃ ইব্রাহীম, সাং- নয়াপাড়া, ওলিপুর বাজার, থানা- সোনারগাঁও, জেলা- নারায়ণগঞ্জ।
গ্রেফতারকৃত আসামীদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, এই চক্রটি গত ০১ এপ্রিল ২০২২ তারিখ গভীর রাতে সোনারগাঁ থানাধীন ঢাকা- চট্টগ্রাম মহাসড়কে গাজীপুরের ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগের অধ্যাপক মাহবুব আলম এর পরিবারকে ধারালো অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে ডাকাতি করেছিল।
গ্রেফতারকৃত আসামীদের হেফাজত হতে ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত ০৩টি ককটেল, ০২টি চাইনিজ কুড়াল, ০১টি চাপাতি, ০২টি ছোড়া, ০২টি লোহার রড, ০৬টি টর্চ লাইট ও ০২টি লোহার পাইপ উদ্ধার করা হয়। এছাড়াও ডাকাতি হয়ে যাওয়া অধ্যাপক মাহবুব আলম এর ০১টি মোবাইল ফোনও উদ্ধার করা হয়। ডাকাতি করা টাকাগুলো এবং লুট করা স্বর্ণালংকারগুলো উক্ত গ্যাং এর সদস্যগণ ভাগ বাটোয়ারা করে নেয় বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়।
প্রাথমিক অনুসন্ধানে জানা যায়, গ্রেফতারকৃত আসামীরা সংঘবদ্ধ ডাকাত চক্রের সক্রিয় সদস্য। এই সংঘবদ্ধ ডাকাত চক্রটি পরষ্পর যোগসাজশে পূর্ব- পরিকল্পনামাফিক ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে চলাচলকারী গাড়ী সমূহকে টার্গেট করে তাদের ডাকাতি কার্যক্রম চালিয়ে আসছিল। গভীর রাতে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে চলাচল করার সময় নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁ থানার বিভিন্ন নির্জন স্থানে গাছ কেটে রাস্তায় ফেলে ব্যারিকেড সৃষ্টি করে চলন্ত গাড়ীর গতিরোধ করে অতর্কিতভাবে হামলা করে এবং ধারালো অস্ত্র প্রদর্শণ করে চলাচলরত যাত্রীসাধারণদের ভয়ভীতি ও আতঙ্ক সৃষ্টি করে সাধারণ লোকজনদের জিম্মি করে ডাকাতি করে সিএনজি/মোটরসাইকেলযোগে দ্রুততার সাথে ঘটনাস্থল হতে পালিয়ে যায়।
দুষ্কৃতিকারী এই ডাকাত দলের সদস্যরা ডাকাতি করতে গিয়ে কখনও কখনও জনসাধারণকে মারধর, ছুরিকাঘাত ও গাড়ি ভাংচুরসহ গুরুতর জখম পর্যন্ত করে থাকে। দীর্ঘদিন দিন ধরে তারা নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁ থানা এলাকায় এবং ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের বিভিন্ন নির্জন স্থানে তাদের অন্যান্য সহযোগীদের নিয়ে ডাকাতি করে আসছিল। গ্রেফতারকৃত আসামীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন।
হাসান শাহরিয়ার
মেজর
উপ-অধিনায়ক
র্যাব-১১, আদমজীনগর, নারায়ণগঞ্জ
ফোনঃ ৭৬৯৪৯৩৩