
সাইফুর নিশাদ, মনোহরদী (নরসিংদী) প্রতিনিধি :
মনোহরদীর ৩টি ইউনিয়নের ইউপি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রতিপক্ষ আওয়ামী লীগে দাঁড়িয়েছে।ফলে ইউনিয়ন ৩ টির ৩ টিতেই নৌকাডুবির ঝুঁকি দেখা দিয়েছে।
মনোহরদীর খিদিরপুর,কৃষ্ণপুর ও চরমান্দালিয়া ইউনিয়নে আগামী ১৫ জুন ইউপি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এ ৩ ইউনিয়নের ৩ টিতেই আওয়ামী লীগের দলীয় পদ পদবীধারী নেতাগন বিদ্রোহী চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন। এ কারনে ৩ ইউনিয়নেই নৌকা প্রার্থী ঝুঁকিতে পড়েছেন। স্থানীয় রাজনৈতিক সচেতন মহল ও ইউনিয়নের ভোটারদের সাথে কথা বলে এমনটাই মনে হয়।
একমাত্র চরমান্দালিয়া ইউনিয়নে নৌকার প্রার্থী আব্দুল কাদিরের বিজয়ের সম্ভাবনা কিছুটা। তবে শঙ্কামুক্ত নন তিনিও। এখানেও আওয়ামী লীগের শক্ত প্রতিপক্ষ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি এবং সাবেক চেয়ারম্যান আনিছ উদ্দীন শাহীন। আনারস প্রতীকে নিজ দল নৌকার বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থানে মাঠে রয়েছেন তিনি।কৃষ্ণপুর ও খিদিরপুর ইউনিয়নেও একই পরিস্থিতি। সেখানেও আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগেরই পদস্থ নেতা আনারস প্রতীকে লড়ছেন। খিদিরপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রমিজ উদ্দীন মাষ্টারের বিরুদ্ধে এখানে পূর্ন শক্তিতে মাঠে আছেন বর্তমান চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক মাহবুবুর রহমান জামিল।
ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহসভাপতি বজলুর রহমান বজলুও এখানে আরেক বিদ্রোহী প্রার্থী। শুধু তাতেই শেষ নয়, আওয়ামী ঘরানার কাউসার রশীদ বিপ্লব ও আনোরুজ্জামান মুকুলও পূর্ন গতিতে মাঠ দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন এখানে। এ ইউনিয়নে আরেক শক্তিশালী স্বতন্ত্র প্রার্থী বাকিউল ইসলাম বাকী। ফলে নৌকাডুবির আয়োজন এখানে প্রায় চূড়ান্ত বলে মনে করছেন অনেকেই। কৃষ্ণপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও দীর্ঘ দিনের ত্যাগী নেতা মাহবুবুর রহমান দুলাল আনারস প্রতীকে আওয়ামী প্রার্থীর কঠিন প্রতিদ্বন্দ্বী এখানে। ফলে নৌকার প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান এমদাদুল হক আকন্দের খুবই বেকায়দা পরিস্থিতি চলছে এখানে।
নৌকাডুবির আশঙ্কা এখানেও। সংগঠনের পক্ষ থেকে দলের পদ পদবীধারী ৪ বিদ্রোহী প্রার্থীকে বহিস্কার করা হয়েছে। তবে এতে পরিস্থিতির খুব একটা পরিবর্তন হয়েছে বলে মনে হচ্ছে না। মনোহরদী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক প্রিয়াশীষ রায় এ প্রসঙ্গে জানান,জেলাসহ দলের উর্ধতন নেতৃবৃন্দের যথাযথ ভূমিকায় নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ করা গেলে এখনো পরিস্থিতি বদলে দেয়া সম্ভব। আর এতে নৌকা প্রার্থীর বিজয় নিশ্চিত করা যাবে খুব সহজেই।গত ২৬ ফেব্রুয়ারী অনুষ্ঠিত এখানকার ৯ ইউপি নির্বাচন মোটামুটি শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে।
কিন্তু এ নির্বাচন ততোটা নির্ঝঞ্ঝাট নাও হতে পারে বলে হচ্ছে। ইতোমধ্যেই এখানে বেশকিছু সংঘাত সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে এ ৩ ইউপির নির্বাচনী প্রচার প্রচারনায়। বেশ ক’টি মামলা পাল্টা মামলা,ভাংচুর পাল্টা ভাংচুর,নৌকা প্রতীকে অগ্নি সংযোগের মতো ঘটনা ঘটেছে এখানে। মনোহরদী উপজেলা নির্বাহী অফিসার এ.এস.এম.কাসেম বর্তমান বাস্তবতা স্বীকার করে জানান, যা কিছুই হোক কেন তবু শান্তিপূর্ণ নির্বাচনে বদ্ধপরিকর প্রশাসন। আশা করা যায়, সেটি সম্ভবও হবে ইনশাআল্লাহ।