
মোঃ সারোয়ার হোসেন অপু , প্রতিনিধি বদলগাছী (নওগাঁ):
নওগাঁর বদলগাছীতে রাস্তার মাটি কেটে রাস্তায় বাঁশের বেড়া দিয়ে রাস্তা বন্ধ করে রেখেছে এলাকার প্রভাবশালী পরিবার।
ঘটনাটি ঘটেছে বদলগাছী উপজেলার মথরাপুর ইউপির লালুকাবাড়ী নামক গ্রামে। রাস্তা দখল করে মাটি কেটে রাস্তায় বাঁশের বেড়া দেওয়ায় দুর্ভোগে পড়েছে লালুকাবাড়ী গ্রামের কয়েকটি পরিবার ও পথচারীরা। বাঁশের বেড়াগুলি রাস্তা থেকে দ্রুত সরিয়ে না নিলে যেকোনো সময় ঘটতে পারে বড় ধরণের সংঘর্ষ।
এলাকাবাসী জানায়, পূর্ব শত্রুতার জের ধরে আব্দুস সামাদের ছেলে মাসুম হোসেন (৩৮)ও দুলাল হোসেনের ছেলে সানোয়ার হোসেন(৩৫ )ঐ পাড়ায় চলাচলের রাস্তা মোজাম্মেল হকের বাড়ীর সামনে রাস্তা কেটে বাঁশের বেড়া দিয়ে ঘিরে দিয়েছে।
জানা গেছে, বদলগাছী উপজেলার মথরাপুর ইউনিয়নের লালুকাবাড়ী গ্রামের মোজাম্মেল হক সোনার তার পৈতৃক জায়গায় বাড়ি করে দীর্ঘদিন ধরে ভোগদখল করে আসছেন।
কিন্তু আব্দুস সামাদের ছেলে মাসুম হোসেন (৩৮)ও দুলাল হোসেনের ছেলে সানোয়ার হোসেন(৩৫) নামে দুই প্রভাবশালী ব্যক্তি বেশ কিছুদিন ধরে তাদের যাতায়াতের একমাত্র রাস্তায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে তাদের ধানী জমিবেদখল করে নেয়ার অপচেষ্টা করে আসছেন।
এরই ধারাবাহিকতায় প্রভাবশালী মাসুম হোসেন (৩৮) ও সানোয়ার হোসেন(৩৬)গত ৪ই মার্চ তাদের বাড়ির সাথের যাতায়াতের রাস্তা লোকজন নিয়ে কেটে ফেলে এবং পরদিন ৫ইমার্চ বাঁশের বেড়া দিয়ে রাস্তা বন্ধ করে দখল করে নেন।
এ সময় বাড়িতে থাকা মহিলা সহ আশেপাশের লোকজন তাদের চলাচলের রাস্তায় বেড়া দিতে বাধা দিলে প্রতিপক্ষের ভাড়া করা লোকজন তাদেরকে মেরে ফেলার হুমকি দেন। তাই ভয়ে কোনো কিছুই করতে পারেননি।
পরে পুরুষ সদস্যরা বাড়িতে যাওয়ার চেষ্টা করলে প্রভাবশালী মাসুম হোসেন ও সানোয়ার হোসেন লোকজনসহ তাদের পথ রোধ করে ভয়ভীতি দেখান।
এ বিষয়টি গ্রামের গণ্যমান্য ব্যক্তি ও ইউপি সদস্যকে অবগত করেন। তারা বিষয়টি মীমাংসার জন্য গেলে রাস্তার জমির জন্য মাঠের সম্পন্ন জমি চান। না হলে সমাধান হবে না বলে মেম্বার জানান।পরে বাধ্য হয়ে মোজাম্মেল হক সোনার বাদী হয়ে আব্দুস সামাদের ছেলে মাসুম হোসেন (৩৮)ও দুলাল হোসেনের ছেলে সানোয়ার হোসেন(৩৫)কে প্রধান আসামি করে থানা অফিসার ইনচার্জ ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর একটি অভিযোগ দায়ের করেন।
এ ব্যাপারে কাছে জানতে চাইলে বাঁশের বেড়া দেওয়া জমি তাদের দাবি করে মাসুম হোসেন জানান, কাগজমূলে তারা জমির মালিক। রাস্তাটি তাদের পৈতৃক জমি। সে জমি দখল করা হয়েছে। মোজাম্মেলকে এতদিন ধরে তাদের জমির উপর রাস্তা করে ব্যবহার করতে দেওয়া হয়েছিলো। এখন আর তাদের ঐ জমির উপর দিয়ে কাউকে রাস্তা দিবেন না। তাই রাস্তার মাটি কেটে বেড়া দিয়েছি।
রকেট নামে ব্যক্তি বলেন, বিগত চেয়ারম্যানের আমলে এই রাস্তায় মাটি কাটাও হয়েছে। প্রায় ৪৫বছর ধরে গ্রামবাসীসহ আশেপাশে জনসাধারণ চলাচলের জন্য এই রাস্তা ব্যবহার করে আসছে। হঠাৎ গত ৫ই মার্চ থেকে রাস্তার নিচের জমির মালিক লোকজন নিয়ে রাস্তার মাটি কেটে ফেলেন। রাস্তার ব্যপারে জানতে চাইলে বলেন, এই জমির মালিক আমি। এতদিন রাস্তা দিয়েছি এখন আর দিবো না। এই বিষয়ে স্থানীয় মেম্বার ও চেয়ারম্যান জানে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ঐ গ্রামের একাধিক ব্যক্তি জানান, প্রায় ৪০/৪৫ বছর ধরে এলাকার লোকজন এ রাস্তা দিয়ে চলাচল করেন। হঠাৎ দেখি সামছুল হক রাস্তার মাঝে বেড়া দিয়ে চলাচলের বাধা দিচ্ছেন এবং রাস্তার মাটি লোকজন দিয়ে কেটে ফেলেছেন। রাস্তার মাটি কাটার সময় ঐ ওয়ার্ডের মেম্বার লিটন উপস্থিত ছিলেন। রাস্তার জমির মালিক নাকি তারা।
মাসুম হোসেন ও সানোয়ার হোসেন পরিকল্পিত ভাবে এই অশান্তি সৃষ্টি করেছেন।
ভুক্তভোগীরা গ্রামের অসহায় মানুষ আর আমিনুর ও সহযোগিরা প্রভাবশালী। তাই প্রশাসনের হস্তক্ষেপ ছাড়া এই সমস্যা সমাধান হবে না।উক্ত সমস্যা সমাধানে ঐ এলাকার গ্রাম্য মাতব্বর ও সাধারণ লোকজন প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন।
এ ব্যপারে মোজাম্মেল হক বলেন, রাস্তা কাটার সময় স্থানীয় ইউপি মেম্বার উপস্থিত ছিলেন। আমিন নিয়ে এসে রাস্তা কেটে রাস্তার উপর বেড়া দেন মাসুম হোসেন ও সানোয়ার হোসেন।
এ ব্যপারে মথরাপুর ইউপির চেয়ারম্যান মাসুদ রানা বলেন, বিষয় টি ২৯ শতাংশ জমি নিয়ে দন্দ এর মধ্যে শান্তি শৃঙ্খলা ফিরাতে ১২ শতাংশ জমি ছার দিওয়ার সিদ্ধান্ত দিলে দুই পক্ষ মেনে চলে যায়, পরে মোজাম্মেল পক্ষ না মানার কারনেই মাসুদ ও সানোয়ার পক্ষ তাদের চলাচলের রাস্তা বন্ধ করেছে। এবং স্হানীয় মেম্বারের মাধ্যমে নিরসনের চেষ্টা করে ও পারিনি।
এ ব্যপারে স্থানীয় মেম্বার আহসান হাবিব লিটন বলেন, আমি পরে ফোনে বিস্তারিত জানাব ভাই বলে কেটে দেন।
এ ব্যপারে বদলগাছী থানা অফিসার ইনচার্জ আতিয়ার রহমান জানান, রাস্তায় বেড়া দিয়ে চলাচলে বাধা দেওয়ার অভিযোগ পেয়েছি। এস আই কে পরিদর্শন সহ চলাচলের রাস্তার ব্যাবস্হা নিতে নির্দেশ দিয়েছি।
এ ব্যপারে বদলগাছী নির্বাহী অফিসার আলপনা ইয়াসমিন বলেন, এ ব্যপারে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। অতি শীঘ্রই এর সমাধান করা হবে।