বাংলাদেশ ০৯:৪৫ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২০ মার্চ ২০২৫, ৬ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
নোটিশ :

সাংবাদিক নিয়োগ চলছে,, সাংবাদিক নিয়োগ চলছে,,০১৯৯৯-৯৫৩৯৭০, ০১৭১২-৪৪৬৩০৬,০১৭১১-০০৬২১৪ সম্পাদক

     
ব্রেকিং নিউজ ::
জেলা পরিষদের সদস্য ও বাইশারীর কৃতি সন্তানদের গণসংবর্ধনা চট্টগ্রামে আঞ্চলিক গানের কিংবদন্তি শিল্পী শেফালী ঘোষ সরকারি চাকুরির প্রলোভন দেখিয়ে টাকা আত্মসাৎকারি শীর্ষ প্রতারক হাবিবুল্লাহ হাবিব কারিকরকে গ্রেফতার করে র‌্যাব। জিয়া সেতুতে অবৈধ ডাম্প ট্রাক না চলার হুঁশিয়ারি ঘূর্ণিঝড় সিডর স্মরণে রাঙ্গাবালীতে মোমবাতি প্রজ্জ্বলন। কালুরঘাট সেতুর কাজ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হবে : সেতু উপদেষ্টা ব্রাহ্মণপাড়ায় বিপুল পরিমাণ মাদক ও অবৈধ ভারতীয় মালামাল জব্দ পীরগঞ্জে আবু সাঈদের কবর জেয়ারত করেছেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ও আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক। ইন্দুরকানিতে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিল পিরোজপুরে জোড়া খুন এর মামলায় ২১ বছরের সাজাপ্রাপ্ত আসামী খাগড়াছড়ি থেকে গ্রেপ্তার বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবস উপলক্ষে আলোচনা ও আপনজন সম্মাননা চাঁদা আদায়ের উদ্দেশ্যে অপহৃত মসজিদের ইমাম হাফেজ সোলাইমান কে উদ্ধার অপহরণকারী দাদনকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব। নাটোরে ভোরের চেতনা পত্রিকার ২৬ তম বর্ষপূর্তী উদযাপিত। বিস্ফোরক আইনে প্রধান শিক্ষক শফিক গ্রেফতার বিএনপি নেতা – কর্মীদের ওপর বোমা হামলার অভিযোগ

মাত্র ১০০ টাকার জন্য খুন হয়েছিলেন সাইকেল ম্যাকানক্সি খাকছার আলী

  • নিজস্ব সংবাদ :
  • আপডেট সময় ০৯:৪৩:৫৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ৮ অক্টোবর ২০২৩
  • ১৬৫২ বার পড়া হয়েছে

মাত্র ১০০ টাকার জন্য খুন হয়েছিলেন সাইকেল ম্যাকানক্সি খাকছার আলী

 

 

 

 

 

মোঃ ইসরাফিল হোসেন,রাজশাহী জেলা প্রতিনিধি:

গত ১৭ সেপ্টেম্বর দিনে দুপুরে বাঘা থানাধীন বাউসা ইউনিয়নের দীঘা বাজারে  নিজ সাইকেল রিক্সার গ্যারেজে নির্মমভাবে খুন হয়েছিলেন সাইকেল মেকানিক খাকছার আলী (৫২) । ধারালো অস্ত্রের আঘাতে তার দেহ থেকে মাথা প্রায় বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছিল। তার রক্তে রঞ্জিত হয়েছিল নিজ ছোট প্রতিষ্ঠানটি। নিভৃত পল্লীর এমন নৃশংস ঘটনায় এলাকাবাসী স্তম্ভিত হয়ে যায়।

 

 

ঘটনার পরদিন পুলিশ সুপার রাজশাহী জনাব সাইফুর রহমান পিপিএম  তাঁর সহকর্মীদের নিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে দ্রুততম সময়ে ঘটনার রহস্য উদ্ঘাটনে সংশ্লিষ্ট সকলকে নির্দেশনা প্রদান করেন। মামলা দায়েরের পর তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) নিয়োজিত হন বাঘা থানার পরিদর্শক তদন্ত জনাব সবুজ রানা। জেলার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা তার সাথে ছিলেন

 

 

তদন্তে নেমে সবাই হতবাক হয়ে যায়। নিহত ব্যক্তির জ্ঞাত কোন শত্রু নেই, নেই কোন ব্যবসায়ীক প্রতিদ্বন্দ্বী। পারিবারিক বিরোধ, জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের কোনো তথ্যও পাওয়া গেলো না। সবচেয়ে আশ্চর্য বিষয় ছিল ভর দুপুরে হাটের দিনে খুন হলেও নেই কোন প্রত্যক্ষদর্শী সাক্ষী ।

 

 

প্রথাগত তদন্তের পাশাপাশি তথ্য প্রযক্তি নিয়ে অনেক কাজ করা হলো। সম্ভাব্য সকল বিষয় বিশ্লেষণ করেও কিছুই পাওয়া যাচ্ছিল না। তদন্তকারী কর্মকর্তা এবং তার তদারককারীদের উপর প্রচ্ছন্ন চাপ বেড়ে যাচ্ছিল।
এভাবে প্রায় তিন সপ্তাহ কেটে যাওয়ার পর একটু আশার আলো দেখা যায়। আইও তার বিশ্বস্ত সোর্সের  মাধ্যমে জানতে পারেন ঘটনার পর থেকে নিহত ব্যক্তির প্রতিবেশি আবীর (২০) পিতাঃ আসাদুল ইসলাম গ্রামঃ দীঘা  নামে একটা ছেলের আচরণ সন্দেহজনক।
যেহেতু কোনো ক্লু ই পাওয়া যাচ্ছে না, আইও এটা নিয়েই কাজ শুরু করেন। গতকাল রাতে তাকে বাঘা থানায় আনা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সে কোনো কিছুই স্বীকার করে না।পুলিশ সুপার স্যারের নির্দেশনায় জেলার উর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও জিজ্ঞাসাবাদে যোগ দেন।
রাত বাড়তে থাকে, বাড়তে থাকে সমন্বিত জিজ্ঞসাবাদের চাপ। এক পর্যায়ে সে মুখ খুলতে শুরু করে। কিন্তু প্রথম পর্যায়ে বিভ্রান্তিকর তথ্য দিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের টিমকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করে।

কিন্তু টিমের সদস্যরা ততক্ষণে বুঝে গেছেন ঘটনায় সে জড়িত। তারাও হাল ছাড়ার পাত্র না, লেগে থাকলেন। এক পর্যায়ে আবীর পুরো ঘটনার বর্ণনা দিল যা পারিপার্শ্বিকতার সাথে হুবহু মিলে গেলো।

জিজ্ঞাসাবাদে সে জানায়, ঘটনার দিন দুপুর সাড়ে বারটার দিকে সে ঘাস কাটার জন্য হাসুয়া নিয়ে বের হয়ে খাকছারের দোকানে যায়। খাকছার তখন দোকানে একাই ছিলেন এবং নিজের জন্য পান বানাচ্ছিলেন, পাশেই বিকট শব্দে করাত কল চলছিল। পাড়া সম্পর্কে দাদা খাকছারের কাছে সে ১০০ টাকা চায়, কিন্তু সে টাকা না  দিয়ে গালি দেয়।
এতে ক্রোধান্বিত হয়ে আবীর হাতে থাকা হাসুয়া দিয়ে খাকছারের ঘাড়ে সজোরে একটি কোপ মারে, এতে তখনই তার মৃত্যু হয়। পাশে করাত কলের শব্দের কারনে কেউ শুনতে পায়নি। সে হাসুয়া নিয়েই বাজারের পিছন দিয়ে ঘাস কাটতে চলে যায়।
আজ (৭/১০/২০২৩) বিকেলে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট জনাব লিটন হোসেনের আদালতে সে নিজেকে জড়িয়ে দোষ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেছে।

ক্লু লেস খুনের ঘটনা এর পূর্বেও রাজশাহী জেলা পুলিশের সদস্যরা উদ্ঘাটন করেছেন কিন্তু এটা একটা ভিন্ন মাত্রা যোগ করেছে। এই তদন্তে তথ্য প্রযুক্তি  প্রয়োগের কোনো সুযোগ ছিল না । সম্পূর্ণ ম্যানুয়াল, প্রথাগত পদ্ধতি ব্যবহার করে এমন একটা নৃশংস খুনের রহস্য উন্মোচন করা হলো।

জনপ্রিয় সংবাদ

জেলা পরিষদের সদস্য ও বাইশারীর কৃতি সন্তানদের গণসংবর্ধনা

মাত্র ১০০ টাকার জন্য খুন হয়েছিলেন সাইকেল ম্যাকানক্সি খাকছার আলী

আপডেট সময় ০৯:৪৩:৫৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ৮ অক্টোবর ২০২৩

 

 

 

 

 

মোঃ ইসরাফিল হোসেন,রাজশাহী জেলা প্রতিনিধি:

গত ১৭ সেপ্টেম্বর দিনে দুপুরে বাঘা থানাধীন বাউসা ইউনিয়নের দীঘা বাজারে  নিজ সাইকেল রিক্সার গ্যারেজে নির্মমভাবে খুন হয়েছিলেন সাইকেল মেকানিক খাকছার আলী (৫২) । ধারালো অস্ত্রের আঘাতে তার দেহ থেকে মাথা প্রায় বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছিল। তার রক্তে রঞ্জিত হয়েছিল নিজ ছোট প্রতিষ্ঠানটি। নিভৃত পল্লীর এমন নৃশংস ঘটনায় এলাকাবাসী স্তম্ভিত হয়ে যায়।

 

 

ঘটনার পরদিন পুলিশ সুপার রাজশাহী জনাব সাইফুর রহমান পিপিএম  তাঁর সহকর্মীদের নিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে দ্রুততম সময়ে ঘটনার রহস্য উদ্ঘাটনে সংশ্লিষ্ট সকলকে নির্দেশনা প্রদান করেন। মামলা দায়েরের পর তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) নিয়োজিত হন বাঘা থানার পরিদর্শক তদন্ত জনাব সবুজ রানা। জেলার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা তার সাথে ছিলেন

 

 

তদন্তে নেমে সবাই হতবাক হয়ে যায়। নিহত ব্যক্তির জ্ঞাত কোন শত্রু নেই, নেই কোন ব্যবসায়ীক প্রতিদ্বন্দ্বী। পারিবারিক বিরোধ, জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের কোনো তথ্যও পাওয়া গেলো না। সবচেয়ে আশ্চর্য বিষয় ছিল ভর দুপুরে হাটের দিনে খুন হলেও নেই কোন প্রত্যক্ষদর্শী সাক্ষী ।

 

 

প্রথাগত তদন্তের পাশাপাশি তথ্য প্রযক্তি নিয়ে অনেক কাজ করা হলো। সম্ভাব্য সকল বিষয় বিশ্লেষণ করেও কিছুই পাওয়া যাচ্ছিল না। তদন্তকারী কর্মকর্তা এবং তার তদারককারীদের উপর প্রচ্ছন্ন চাপ বেড়ে যাচ্ছিল।
এভাবে প্রায় তিন সপ্তাহ কেটে যাওয়ার পর একটু আশার আলো দেখা যায়। আইও তার বিশ্বস্ত সোর্সের  মাধ্যমে জানতে পারেন ঘটনার পর থেকে নিহত ব্যক্তির প্রতিবেশি আবীর (২০) পিতাঃ আসাদুল ইসলাম গ্রামঃ দীঘা  নামে একটা ছেলের আচরণ সন্দেহজনক।
যেহেতু কোনো ক্লু ই পাওয়া যাচ্ছে না, আইও এটা নিয়েই কাজ শুরু করেন। গতকাল রাতে তাকে বাঘা থানায় আনা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সে কোনো কিছুই স্বীকার করে না।পুলিশ সুপার স্যারের নির্দেশনায় জেলার উর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও জিজ্ঞাসাবাদে যোগ দেন।
রাত বাড়তে থাকে, বাড়তে থাকে সমন্বিত জিজ্ঞসাবাদের চাপ। এক পর্যায়ে সে মুখ খুলতে শুরু করে। কিন্তু প্রথম পর্যায়ে বিভ্রান্তিকর তথ্য দিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের টিমকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করে।

কিন্তু টিমের সদস্যরা ততক্ষণে বুঝে গেছেন ঘটনায় সে জড়িত। তারাও হাল ছাড়ার পাত্র না, লেগে থাকলেন। এক পর্যায়ে আবীর পুরো ঘটনার বর্ণনা দিল যা পারিপার্শ্বিকতার সাথে হুবহু মিলে গেলো।

জিজ্ঞাসাবাদে সে জানায়, ঘটনার দিন দুপুর সাড়ে বারটার দিকে সে ঘাস কাটার জন্য হাসুয়া নিয়ে বের হয়ে খাকছারের দোকানে যায়। খাকছার তখন দোকানে একাই ছিলেন এবং নিজের জন্য পান বানাচ্ছিলেন, পাশেই বিকট শব্দে করাত কল চলছিল। পাড়া সম্পর্কে দাদা খাকছারের কাছে সে ১০০ টাকা চায়, কিন্তু সে টাকা না  দিয়ে গালি দেয়।
এতে ক্রোধান্বিত হয়ে আবীর হাতে থাকা হাসুয়া দিয়ে খাকছারের ঘাড়ে সজোরে একটি কোপ মারে, এতে তখনই তার মৃত্যু হয়। পাশে করাত কলের শব্দের কারনে কেউ শুনতে পায়নি। সে হাসুয়া নিয়েই বাজারের পিছন দিয়ে ঘাস কাটতে চলে যায়।
আজ (৭/১০/২০২৩) বিকেলে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট জনাব লিটন হোসেনের আদালতে সে নিজেকে জড়িয়ে দোষ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেছে।

ক্লু লেস খুনের ঘটনা এর পূর্বেও রাজশাহী জেলা পুলিশের সদস্যরা উদ্ঘাটন করেছেন কিন্তু এটা একটা ভিন্ন মাত্রা যোগ করেছে। এই তদন্তে তথ্য প্রযুক্তি  প্রয়োগের কোনো সুযোগ ছিল না । সম্পূর্ণ ম্যানুয়াল, প্রথাগত পদ্ধতি ব্যবহার করে এমন একটা নৃশংস খুনের রহস্য উন্মোচন করা হলো।