
মোঃ ছায়েদ হোসেন, রামগঞ্জ (লক্ষ্মীপুর) প্রতিনিধিঃ
রামগেেঞ্জ কয়েকদিন ধরে টানা বৃষ্টিতে বিপাকে পড়েছেন নিম্ন আয়ের মানুষ। গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টির কারণে অনেকেই সারা দিন ঘর থেকে বের হচ্ছেন না। টানা বৃষ্টিতে মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা বিঘ্নিত হচ্ছে। তবে সব থেকে বেশি বিপাকে পড়েছেন নিম্ন আয়ের শ্রমজীবী মানুষ। তবে সবচেয়ে বেশি বিপদে পড়েছে খেটে খাওয়া নিম্ন আয়ের মানুষগুলো। অনেকেই বৃষ্টিতে ভিজে বের হয়েছেন, কাজের সন্ধানে। কাজ না পেয়ে অনেককে বিভিন্ন দোকানে বসে থাকতে দেখা গেছে। সেইসঙ্গে বিপাকেপড়েছে বই-খাতা হাতে বিদ্যালয়ের উদ্দেশে রাস্তায় বের হওয়া শিক্ষার্থী ও অভিভাবকেরা।
রামগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন স্থানে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রাতভর বৃষ্টি হওয়ায় সড়কের কোথাও কোথাও পানি জমে আছে। এতে ভোগান্তিতে পড়েন অফিসগামী লোকজন ও শিক্ষার্থীরা। এছাড়া, বিপাকে পড়েছেন খেটে খাওয়া নিম্ন আয়ের মানুষ। অনেকে বৃষ্টি মাথায় নিয়েই ছুটেছেন অফিসে। কেউ ছাতা মাথায় আবার কেউ পলিথিন মুড়িয়ে গন্তব্যে যাচ্ছেন। বৃষ্টি থাকায় কোথাও কোথাও দেখা দিয়েছে যানবাহন সংকট। বৃষ্টির কারণে রাস্তায় রিকশা চালানো যাচ্ছেনা যাত্রীও নেই। সকাল থেকে বসে আছি রাস্তায় কোন মানুষের দেখা নেই। গত টানা কয়েক দিনের ভারি বৃষ্টিপাতের ফলে জেলার বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টির পানিতে জলাবদ্ধতা তৈরি হওয়ায় যান ও মানুষের চলাচল ব্যহত হচ্ছে। গুরুত্বপূর্ণ কাজ ছাড়া মানুষ বের হচ্ছে না বাড়ির বাইরে। যাত্রী না থাকায় সারাদিনে তারা আয় করতে পারছেন না। ফলে পরিবার নিয়ে তারা দুশ্চচিন্তায় রয়েছে।
টানা বৃষ্টির কারণে শহরের কোথাও কোথাও সৃষ্টি হয়েছে জলাবদ্ধতা। এদিকে বৃষ্টিপাতের ফলে পৌর এলাকার ড্রেনেস ব্যবস্থা না থাকার কারণে রামগঞ্জ-হাজীগঞ্জ সড়কের রামগঞ্জ পৌরশহরের পুলিশ বক্সের উত্তর পাশে হাটু পরিমান পানিতে তলিয়ে গেছে সড়ক। জলাবদ্ধতার কারণে পানির মধ্যে ঝুঁকি নিয়ে চলছে রিকশা, ভ্যান, সিএনজি, অটোরিক্সা, বাস, ট্রাকসহ নানা যানবাহন। এতে রাস্তা ভেঙে বড় বড় গর্ত তৈরি হওয়ায় ঝুঁকি নিয়ে চলাফেরা করছেন পথচারীরা। এছাড়া সোনাপুর – চিতোষী সড়কের চৌরাস্তা থেকে মডেল বিশ^বিদ্যালয় কলেজ পর্যন্ত দেখা গেছে একই চিত্র। রামগঞ্জ মধ্যবাজার থেকে থানা বাইপাস সড়ক, এরশাদ হোসেন সড়ক থেকে নূরপ্লাজা হয়ে রামগঞ্জ চৌরাস্তা পর্যন্ত সড়কে খানা-খন্দ ও পানি জমে থাকায় পথচারীদের হেঁটে চলার সময় সতর্কভাবে পা ফেলতে হচ্ছে।
রোজকার মতো প্রতিদিন জিয়া শপিং কমপ্লেক্সের সামনে ভ্যানে করে ফল বিক্রি করেন বাচ্চু মিয়া। তিনি বলেন, ‘টানা বৃষ্টির মধ্যে বিক্রি হচ্ছে না। প্রতিদিন ৪০০-৫০০ টাকা আয় হতো। এখন ১০০ থেকে ২০০ টাকা হচ্ছে। তা-ও একটু কমলে বৃষ্টিতে ভিজে ভিজে বিক্রি করি।
দিনমজুর মনির হোসেন বলেন, ভোর থেকেই বৃষ্টি শুরু হয়েছে। সকালে হয়তো বৃষ্টি কমবে, সেই আসা নিয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়েছি। ‘যা কিছু হয় সব গরিবের ক্ষতি হয়, ধনীর কিছু হয় না। বন্যা হলে, বৃষ্টি হলে, করোনা হলে, খরা এলে গরিব মরে। সকাল পেরিয়ে দুপুর হতে যাচ্ছে, এখনো কোনো কাজ পাইনি। তাই বাড়ি ফিরে যাচ্ছি।
সিএনজি চালক আক্তার হোসেন, হাবীব, খোরশেদসহ অনেকে বলেন, টানা বৃষ্টিতে তাঁরা দুর্ভোগের মধ্যে পড়েছেন। তাঁদের আয়ের ওপরই সংসার চলে। তাই রুজির ধান্দায় বৃষ্টিতে ভিজে ঘর থেকে বের হয়েছেন। বৃষ্টিতে ভেজা কাপড়েই যাত্রী বহন করছিলেন রিকশাচালক মোতালেব । তিনি বলেন, ‘সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছি। সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ৫০-১০০ টাকা রোজগার হয়েছে, বাকি দিনে কি যে হবে! ভাড়ায় রিকশা চালায়, মালিককে কী দেব, নিজে কী নেব।