বাংলাদেশ ১২:১০ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৬ মার্চ ২০২৫, ২ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
নোটিশ :

সাংবাদিক নিয়োগ চলছে,, সাংবাদিক নিয়োগ চলছে,,০১৯৯৯-৯৫৩৯৭০, ০১৭১২-৪৪৬৩০৬,০১৭১১-০০৬২১৪ সম্পাদক

     
ব্রেকিং নিউজ ::
জেলা পরিষদের সদস্য ও বাইশারীর কৃতি সন্তানদের গণসংবর্ধনা চট্টগ্রামে আঞ্চলিক গানের কিংবদন্তি শিল্পী শেফালী ঘোষ সরকারি চাকুরির প্রলোভন দেখিয়ে টাকা আত্মসাৎকারি শীর্ষ প্রতারক হাবিবুল্লাহ হাবিব কারিকরকে গ্রেফতার করে র‌্যাব। জিয়া সেতুতে অবৈধ ডাম্প ট্রাক না চলার হুঁশিয়ারি ঘূর্ণিঝড় সিডর স্মরণে রাঙ্গাবালীতে মোমবাতি প্রজ্জ্বলন। কালুরঘাট সেতুর কাজ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হবে : সেতু উপদেষ্টা ব্রাহ্মণপাড়ায় বিপুল পরিমাণ মাদক ও অবৈধ ভারতীয় মালামাল জব্দ পীরগঞ্জে আবু সাঈদের কবর জেয়ারত করেছেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ও আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক। ইন্দুরকানিতে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিল পিরোজপুরে জোড়া খুন এর মামলায় ২১ বছরের সাজাপ্রাপ্ত আসামী খাগড়াছড়ি থেকে গ্রেপ্তার বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবস উপলক্ষে আলোচনা ও আপনজন সম্মাননা চাঁদা আদায়ের উদ্দেশ্যে অপহৃত মসজিদের ইমাম হাফেজ সোলাইমান কে উদ্ধার অপহরণকারী দাদনকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব। নাটোরে ভোরের চেতনা পত্রিকার ২৬ তম বর্ষপূর্তী উদযাপিত। বিস্ফোরক আইনে প্রধান শিক্ষক শফিক গ্রেফতার বিএনপি নেতা – কর্মীদের ওপর বোমা হামলার অভিযোগ

আজ শুভ মহালয়া

  • নিজস্ব সংবাদ :
  • আপডেট সময় ১১:১৫:৫৩ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৩ অক্টোবর ২০২৩
  • ১৬২২ বার পড়া হয়েছে

আজ শুভ মহালয়া

স্বীকৃতি বিশ্বাস, যশোরঃ
মহায়ার ভোরে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের ঘুম ভাঙে রেডিওতে ভেসে আসা বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রের সুমধুর  কণ্ঠে চণ্ডীপাঠ ও মহিষাসুরমর্দিনীর সুর শুনে। এই কারণে বাঙালির কাছে মহালয়া মানেই দুর্গাপুজা শুরু।
আর তাই আজ শনিবার শুভ মহালয়ার মধ্য দিয়ে শারদীয় দুর্গোৎসবের ক্ষণ গননা শুরু হলো।
মহালয়া আসন্ন শারদীয় দূর্গোৎসবের আগমনী সুর নিয়ে আসলেও শাস্ত্র অনুসারে এই দিনের সঙ্গে দুর্গাপুজার কোনও সম্পর্ক নেই। বরং মহালয়া বা সর্বপিতৃ অমাবস্যা হল প্রয়াত পিতৃপুরুষদের উদ্দেশ্যে তর্পণ শ্রাদ্ধ করার দিন। পণ্ডিতদের অনেকের মতে তর্পণ এবং পার্বণ শ্রাদ্ধের প্রশস্ত দিন হিসেবে মহালয়া পারলৌকিক ক্রিয়াকর্মের তিথি বলে নির্দিষ্ট হওয়ায় একে ‘শুভ’ বলে গ্রাহ্য না করাই ভালো। মহালয়া কথাটি এসেছে মহত্‍ আলয় থেকে। হিন্দু ধর্ম অনুসারে পিতৃপক্ষে প্রয়াত পিতৃপুরুষরা তাঁদের বংশধরদের হাত থেকে জল নিতে মর্ত্যলোকে আসেন। এই ১৫ দিন এখানে কাটিয়ে মহালয়াতেই তাঁরা জল গ্রহণ করে তৃপ্ত হয়ে ফিরে যান। অনেকের মতে প্রয়াত পিতৃপুরুষদের জল ও পিণ্ড প্রদান করে তাঁদের তৃপ্ত করা হয় বলেই মহালয়া একটি পূণ্য তিথি। একে অশুভ মনে করার কোনও কারণ নেই।
আবার রামায়ণ অনুসারে, ত্রেতা যুগে শ্রীরামচন্দ্র অকালে দেবী দুর্গার পুজা করেছিলেন, রাবণকে পরাজিত করে সীতাকে উদ্ধার করার উদ্দেশ্যে। শাস্ত্রমতে দুর্গাপুজা বসন্তকালে হওয়াই নিয়ম। কিন্তু রামন্দ্র  অকালে দুর্গাপুজা করেছিলেন বলে শরত্‍কালের দুর্গাপুজাকে অকাল বোধন বলা হয়। হিন্দু ধর্মে কোনও শুভ কাজের আগে প্রয়াত পূর্বপুরুষের উদ্দেশ্যে শ্রদ্ধা অর্পণ করতে হয়। লঙ্কা জয়ের আগে এমনটাই করেছিলেন রামচন্দ্র। সেই থেকে মহালয়ায় তর্পণ অনুষ্ঠানের প্রথা প্রচলিত।
এছাড়া  মহাভারতে অন্য ব্যাখ্যা পাওয়া যায়। মহাভারত অনুসারে মৃত্যুর পর কর্ণের আত্মা পরলোক গমন করলে তাঁকে খাদ্য হিসেবে সোনা ও রত্ন দেওয়া হয়। দেবরাজ ইন্দ্রকে কর্ণ-এর কারণ জিজ্ঞাসা করলে ইন্দ্র বলেন,দানবীর কর্ণ সারা জীবন সোনা মণি মাণিক্য দান করেছেন। কিন্তু প্রয়াত পিতৃপুরুষদের উদ্দেশ্যে কখনও খাদ্য বা পানীয় দান করেননি। তাই স্বর্গে খাদ্য হিসেবে তাঁকে সোনাই দেওয়া হয়েছে। তখন কর্ণ জানান যে তাঁর পিতৃপুরুষ কারা, কোন বংশে তাঁর জন্ম, তা জানতেন না। সেই কারণে কখনোও পিতৃগণের উদ্দেশ্যে খাদ্য দান করেননি। এরপর দেবরাজের নির্দেশে কর্ণ ১৬ দিনের জন্য মর্ত্যে ফিরে পিতৃলোকের উদ্দেশ্যে অন্ন ও জল প্রদান করেন। এই পক্ষই পিতৃপক্ষ নামে পরিচিত হয়। প্রয়াত পূর্বপুরুষদের স্মরণ করার দিনও মহালয়া। এই দিন তিল-জল দিয়ে তর্পণ করে প্রয়াত পিতৃপুরুষদের পরিতৃপ্ত করা হয়। এই তর্পণ যেমন প্রয়াত বাবা মা বা পূর্বপুরুষের জন্য, তেমনই সমগ্র জীবজগতের জন্যও করেন সনাতন ধর্ম বিশ্বাসীরা।
মহালয়ার সময় ঘোর অমাবস্যা থাকে। কিন্তু দেবী দুর্গার মহাশক্তির আলোয় সেই অমাবস্যা দূর হয়। প্রতিষ্ঠা পায় শুভশক্তি। আজকের এ পূণ্য লগ্নে মন্দিরে মন্দিরে চণ্ডী পাঠ ও বিশেষ পূজার মাধ্যমে দেবী আবাহন করেন ভক্তরা। আজকের দিনে দেব দেবীরা দুর্গাপূজার জন্য নিজেদের জাগ্রত করেন। শুধু তাই না, মহালয়ার সময় প্রেতলোক থেকে পিতৃপুরুষের আত্মারা ফিরে আসে মর্ত্যলোকে। তৈরি হয় মহা আলয়।
 পিতৃপক্ষের শেষে দেবীপক্ষের সূচনার মাধ্যমে বাঙালি হিন্দুদের ঘরে ঘরে দুর্গোৎসবের পুণ্যলগ্নের ঢাক বেজে উঠে। অমাবশ্যার পরবর্তী তিথি প্রতিপদ থেকে শুরু হয় দেবী দুর্গার আরাধনা। মহাষষ্ঠীর মাধ্যমে শুরু হবে মহাসাড়ম্বরে শারদীয় দূর্গোৎসব।
জনপ্রিয় সংবাদ

জেলা পরিষদের সদস্য ও বাইশারীর কৃতি সন্তানদের গণসংবর্ধনা

আজ শুভ মহালয়া

আপডেট সময় ১১:১৫:৫৩ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৩ অক্টোবর ২০২৩
স্বীকৃতি বিশ্বাস, যশোরঃ
মহায়ার ভোরে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের ঘুম ভাঙে রেডিওতে ভেসে আসা বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রের সুমধুর  কণ্ঠে চণ্ডীপাঠ ও মহিষাসুরমর্দিনীর সুর শুনে। এই কারণে বাঙালির কাছে মহালয়া মানেই দুর্গাপুজা শুরু।
আর তাই আজ শনিবার শুভ মহালয়ার মধ্য দিয়ে শারদীয় দুর্গোৎসবের ক্ষণ গননা শুরু হলো।
মহালয়া আসন্ন শারদীয় দূর্গোৎসবের আগমনী সুর নিয়ে আসলেও শাস্ত্র অনুসারে এই দিনের সঙ্গে দুর্গাপুজার কোনও সম্পর্ক নেই। বরং মহালয়া বা সর্বপিতৃ অমাবস্যা হল প্রয়াত পিতৃপুরুষদের উদ্দেশ্যে তর্পণ শ্রাদ্ধ করার দিন। পণ্ডিতদের অনেকের মতে তর্পণ এবং পার্বণ শ্রাদ্ধের প্রশস্ত দিন হিসেবে মহালয়া পারলৌকিক ক্রিয়াকর্মের তিথি বলে নির্দিষ্ট হওয়ায় একে ‘শুভ’ বলে গ্রাহ্য না করাই ভালো। মহালয়া কথাটি এসেছে মহত্‍ আলয় থেকে। হিন্দু ধর্ম অনুসারে পিতৃপক্ষে প্রয়াত পিতৃপুরুষরা তাঁদের বংশধরদের হাত থেকে জল নিতে মর্ত্যলোকে আসেন। এই ১৫ দিন এখানে কাটিয়ে মহালয়াতেই তাঁরা জল গ্রহণ করে তৃপ্ত হয়ে ফিরে যান। অনেকের মতে প্রয়াত পিতৃপুরুষদের জল ও পিণ্ড প্রদান করে তাঁদের তৃপ্ত করা হয় বলেই মহালয়া একটি পূণ্য তিথি। একে অশুভ মনে করার কোনও কারণ নেই।
আবার রামায়ণ অনুসারে, ত্রেতা যুগে শ্রীরামচন্দ্র অকালে দেবী দুর্গার পুজা করেছিলেন, রাবণকে পরাজিত করে সীতাকে উদ্ধার করার উদ্দেশ্যে। শাস্ত্রমতে দুর্গাপুজা বসন্তকালে হওয়াই নিয়ম। কিন্তু রামন্দ্র  অকালে দুর্গাপুজা করেছিলেন বলে শরত্‍কালের দুর্গাপুজাকে অকাল বোধন বলা হয়। হিন্দু ধর্মে কোনও শুভ কাজের আগে প্রয়াত পূর্বপুরুষের উদ্দেশ্যে শ্রদ্ধা অর্পণ করতে হয়। লঙ্কা জয়ের আগে এমনটাই করেছিলেন রামচন্দ্র। সেই থেকে মহালয়ায় তর্পণ অনুষ্ঠানের প্রথা প্রচলিত।
এছাড়া  মহাভারতে অন্য ব্যাখ্যা পাওয়া যায়। মহাভারত অনুসারে মৃত্যুর পর কর্ণের আত্মা পরলোক গমন করলে তাঁকে খাদ্য হিসেবে সোনা ও রত্ন দেওয়া হয়। দেবরাজ ইন্দ্রকে কর্ণ-এর কারণ জিজ্ঞাসা করলে ইন্দ্র বলেন,দানবীর কর্ণ সারা জীবন সোনা মণি মাণিক্য দান করেছেন। কিন্তু প্রয়াত পিতৃপুরুষদের উদ্দেশ্যে কখনও খাদ্য বা পানীয় দান করেননি। তাই স্বর্গে খাদ্য হিসেবে তাঁকে সোনাই দেওয়া হয়েছে। তখন কর্ণ জানান যে তাঁর পিতৃপুরুষ কারা, কোন বংশে তাঁর জন্ম, তা জানতেন না। সেই কারণে কখনোও পিতৃগণের উদ্দেশ্যে খাদ্য দান করেননি। এরপর দেবরাজের নির্দেশে কর্ণ ১৬ দিনের জন্য মর্ত্যে ফিরে পিতৃলোকের উদ্দেশ্যে অন্ন ও জল প্রদান করেন। এই পক্ষই পিতৃপক্ষ নামে পরিচিত হয়। প্রয়াত পূর্বপুরুষদের স্মরণ করার দিনও মহালয়া। এই দিন তিল-জল দিয়ে তর্পণ করে প্রয়াত পিতৃপুরুষদের পরিতৃপ্ত করা হয়। এই তর্পণ যেমন প্রয়াত বাবা মা বা পূর্বপুরুষের জন্য, তেমনই সমগ্র জীবজগতের জন্যও করেন সনাতন ধর্ম বিশ্বাসীরা।
মহালয়ার সময় ঘোর অমাবস্যা থাকে। কিন্তু দেবী দুর্গার মহাশক্তির আলোয় সেই অমাবস্যা দূর হয়। প্রতিষ্ঠা পায় শুভশক্তি। আজকের এ পূণ্য লগ্নে মন্দিরে মন্দিরে চণ্ডী পাঠ ও বিশেষ পূজার মাধ্যমে দেবী আবাহন করেন ভক্তরা। আজকের দিনে দেব দেবীরা দুর্গাপূজার জন্য নিজেদের জাগ্রত করেন। শুধু তাই না, মহালয়ার সময় প্রেতলোক থেকে পিতৃপুরুষের আত্মারা ফিরে আসে মর্ত্যলোকে। তৈরি হয় মহা আলয়।
 পিতৃপক্ষের শেষে দেবীপক্ষের সূচনার মাধ্যমে বাঙালি হিন্দুদের ঘরে ঘরে দুর্গোৎসবের পুণ্যলগ্নের ঢাক বেজে উঠে। অমাবশ্যার পরবর্তী তিথি প্রতিপদ থেকে শুরু হয় দেবী দুর্গার আরাধনা। মহাষষ্ঠীর মাধ্যমে শুরু হবে মহাসাড়ম্বরে শারদীয় দূর্গোৎসব।