
প্রেস বিজ্ঞপ্তি
র্যাব ফোর্সেস আমাদের প্রিয় মাতৃভূমির অপ্রতিরোধ্য উন্নয়ন অগ্রযাত্রাকে ত্বরান্বিত করতে এবং সন্মানিত নাগরিকদের জন্য টেকসই নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আইনের আলোকে কঠোর পরিশ্রম করে যাচ্ছে। এছাড়াও দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে দীর্ঘদিন যাবত পালিয়ে থাকা বিভিন্ন মেয়াদে সাজাপ্রাপ্ত ও ওয়ারেন্টভূক্ত আসামীদের গ্রেফতারের মাধ্যমে দৃষ্টান্ত স্থাপন করে জনগনের বিশ্বাস ও আস্থা অর্জন করে আসছে।
গত ইং ০২ অক্টোবর ২০২৩ তারিখ দুইটি পৃথক মামলা যথাক্রমে (১) যশোর জেলার ঝিকরগাছা থানার বিপ্লব হত্যা মামলা ও (২) যশোর জেলার শার্শা থানার মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রন আইন এর মামলায় আসামীদের বিজ্ঞ আদালত কর্তৃক যাবজ্জীবন সাজা প্রদান পূর্বক গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন। উক্ত গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হওয়ার পর তাৎক্ষণিক র্যাব-৬, যশোর ক্যাম্পের গোয়েন্দা দল যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামীদের গ্রেফতারের লক্ষে গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করে। এরই ধারাবাকিতায় র্যাব-৬, যশোর ক্যাম্পের একটি আভিযানিক দল ইং ০৫/১০/২৩ তারিখ গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারে যে, যশোর জেলার ঝিকরগাছা থানার মামলার যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামী ইমামুল ইসলাম (৩১) যশোর ঝিকরগাছা থানাধীন কৃষ্ণনগর এলাকায় আত্মগোপনে আছে। সংবাদ প্রাপ্ত হয়েই আভিযানিক দলটি তাৎক্ষণিক উক্ত স্থানে অভিযান পরিচালনা করে একই তারিখ মধ্যরাতে আসামী ইমামুল ইসলাম (৩১), পিতা- মাসুম, সাং- কাটাখাল ১নং কলোনী, থানা- ঝিকরগাছা, জেলা- যশোর’কে গ্রেফতার করে।
গ্রেফতারকৃত আসামীকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, গত ১৭ জুন ২০১৪ তারিখ রাত সাড়ে ১০ টার দিকে যশোর ঝিকরগাছা থানাধীন কাটাখাল ১ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা কালুর ছেলে (ভিকটিম) বিপ্লব হোসেন ও তার ভায়রার ছেলে মিলনকে পূর্ব শত্রুতার জের ধরে ঝিকরগাছা বাজার থেকে বাড়ি ফেরার পথে আসামী ইমামুল ইসলাম সহ অন্যান্য আসামীরা মিলে ছুরিকাঘাত করে। পরবর্তীতে স্থানীয় লোকজন এগিয়ে এসে তাদেরকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে যশোর ২৫০ শয্যা হাসপতালে ভর্তি করে। এ ঘটনায় ১৮ জুন ২০১৪ তারিখ আহত বিপ্লবের পিতা কালু বাদী হয়ে ঝিকরগাছা থানায় মামলা করেন। বিপ্লবের অবস্থার অবনতি হলে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয় এবং চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় ১৬ দিন পর বিপ্লব মারা যায়। উক্ত ঘটনায় মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আসামীদের বিরুদ্ধে বিজ্ঞ আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। মামলাটির বিচারিক কার্যক্রম শেষে ঘটনার সাথে আসামী ইমামুল ইসলাম (৩১) এর সম্পৃক্ততার প্রমাণ পাওয়ায় ইং ০২/১০/২০২৩ তারিখ বিজ্ঞ আদালত তাকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ড সহ ২০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো ছয় মাসের সশ্রম কারাদন্ডের সাজা প্রদান পূর্বক গ্রেফতারী পরোয়ানা ইস্যু করেন।
র্যাব-৬, যশোর ক্যাম্পের অপর একটি আভিযানিক দল ইং ০৫/১০/২৩ তারিখ মধ্যরাতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে যশোর জেলার ঝিকরগাছা থানাধীন শংকরপুর এলাকায় পৃথক অভিযান পরিচালনা যশোর জেলার শার্শা থানার মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রন আইনের মামলার যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত কুখ্যাত মাদক কারবারি মোঃ হারুন অর রশিদ (৩২), পিতা- ছিয়াব আলী, সাং- কুমড়ী, থানা- ঝিকরগাছা, জেলা- যশোর’কে গ্রেফতার করে।
গ্রেফতারকৃত আসামীকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, আসামী মোঃ হারুন অর রশিদ গত ইং ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৬ তারিখে ০১ (এক) কেজি হেরোইন সহ যশোর জেলার শার্শা থানা এলাকা হতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে গ্রেফতার হয়। পরবর্তীতে আসামীর বিরুদ্ধে যশোর জেলার শার্শা থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রন আইনে একটি মাদক মামলা রুজু হয়। উক্ত মামলায় গ্রেফতারকৃত আসামী এক বছর জেল হাজতে থাকার পর বিজ্ঞ আদালত হতে জামিনে মুক্তি লাভ করে নিয়মিত বিজ্ঞ আদালতে হাজিরা না দিয়ে পলাতক হয়। তদন্তকারী কর্মকর্তা মামলাটি তদন্ত শেষে আসামীর বিরুদ্ধে বিজ্ঞ আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। মামলাটির বিচারিক কার্যক্রম শেষে ঘটনার সাথে আসামী মোঃ হারুন অর রশিদ (৩২) এর সম্পৃক্ততার প্রমাণ পাওয়ায় ইং ০২/১০/২০২৩ তারিখ বিজ্ঞ আদালত আসামী’কে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ড সহ ২০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো ছয় মাসের সশ্রম কারাদন্ডের সাজা প্রদান পূর্বক গ্রেফতারী পরোয়ানা ইস্যু করেন। এছাড়াও গ্রেফতারকৃত যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামী একজন পেশাদার মাদক ব্যবসায়ী বলে জানা যায়।
গ্রেফতারকৃত আসামীদ্বয়কে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য যশোর জেলার ঝিকরগাছা থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।