বাংলাদেশ ০৬:৪৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৪ মার্চ ২০২৫, ৩০ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
নোটিশ :

সাংবাদিক নিয়োগ চলছে,, সাংবাদিক নিয়োগ চলছে,,০১৯৯৯-৯৫৩৯৭০, ০১৭১২-৪৪৬৩০৬,০১৭১১-০০৬২১৪ সম্পাদক

     
ব্রেকিং নিউজ ::
জেলা পরিষদের সদস্য ও বাইশারীর কৃতি সন্তানদের গণসংবর্ধনা চট্টগ্রামে আঞ্চলিক গানের কিংবদন্তি শিল্পী শেফালী ঘোষ সরকারি চাকুরির প্রলোভন দেখিয়ে টাকা আত্মসাৎকারি শীর্ষ প্রতারক হাবিবুল্লাহ হাবিব কারিকরকে গ্রেফতার করে র‌্যাব। জিয়া সেতুতে অবৈধ ডাম্প ট্রাক না চলার হুঁশিয়ারি ঘূর্ণিঝড় সিডর স্মরণে রাঙ্গাবালীতে মোমবাতি প্রজ্জ্বলন। কালুরঘাট সেতুর কাজ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হবে : সেতু উপদেষ্টা ব্রাহ্মণপাড়ায় বিপুল পরিমাণ মাদক ও অবৈধ ভারতীয় মালামাল জব্দ পীরগঞ্জে আবু সাঈদের কবর জেয়ারত করেছেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ও আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক। ইন্দুরকানিতে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিল পিরোজপুরে জোড়া খুন এর মামলায় ২১ বছরের সাজাপ্রাপ্ত আসামী খাগড়াছড়ি থেকে গ্রেপ্তার বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবস উপলক্ষে আলোচনা ও আপনজন সম্মাননা চাঁদা আদায়ের উদ্দেশ্যে অপহৃত মসজিদের ইমাম হাফেজ সোলাইমান কে উদ্ধার অপহরণকারী দাদনকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব। নাটোরে ভোরের চেতনা পত্রিকার ২৬ তম বর্ষপূর্তী উদযাপিত। বিস্ফোরক আইনে প্রধান শিক্ষক শফিক গ্রেফতার বিএনপি নেতা – কর্মীদের ওপর বোমা হামলার অভিযোগ

মানিকগঞ্জে বিজয় মেলার মাঠে ঐতিহ্যবাহী হাজারি গুড়ের মেলা। 

  • নিজস্ব সংবাদ :
  • আপডেট সময় ০৮:২৮:৩৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৪
  • ১৬৮৪ বার পড়া হয়েছে

মানিকগঞ্জে বিজয় মেলার মাঠে ঐতিহ্যবাহী হাজারি গুড়ের মেলা। 

 

আবু বক্কর সিদ্দিক মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি: 
“শ্যামল নির্মল ঐতিহ্যে মানিকগঞ্জ”মেলা মেলা মেলা, হাজারী গুড় মেলা! মানিকগঞ্জে আজ বৃহস্পতিবার বেলা তিনটা থেকে শুরু হচ্ছে তিন দিনব্যাপী হাজারি গুড়ের মেলা। মানিকগঞ্জ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের খেলার মাঠে ৮ ফেব্রুয়ারী বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হওয়া এই মেলা চলবে আগামী ১০ ফেব্রুয়ারী শনিবার পর্যন্ত। দেশের ঐতিহ্যবাহী হাজারি গুড়ের হারানো ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে এবং দেশব্যাপী এটি ছড়িয়ে দিতে প্রথমবারের মতো এই মেলার আয়োজন করেছে মানিকগঞ্জ জেলা প্রশাসন।
শীত এলে এ দেশের গ্রামের বাড়িগুলোয় পিঠা-পায়েস তৈরির আয়োজন শুরু হয়। এ সময়ে খেজুরের রস ও গুড়ের চাহিদা এমনিতেই বেশি। আর হাজারি গুড় হলে তো কথাই নেই! যুগ যুগ ধরে ঐতিহ্য বহন করে আসছে মানিকগঞ্জের এই হাজারি গুড়।
মানিকগঞ্জের হরিরামপুরে ছোট ছোট পাত্রে ঢেলে রাখা হয়েছে হাজারি গুড়। মানিকগঞ্জে সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের খেলার মাঠে আজ থেকে শুরু হওয়া এই মেলা চলবে আগামী শনিবার পর্যন্ত। দেশের ঐতিহ্যবাহী হাজারি গুড়ের হারানো ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে এবং দেশব্যাপী এটি ছড়িয়ে দিতে প্রথমবারের মতো এই মেলার আয়োজন করেছে জেলা প্রশাসন।
মনভোলানো স্বাদের পাশাপাশি হাজারি গুড়ের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো, হাতে নিয়ে চাপ দিতেই গুঁড়া গুঁড়া হয়ে যায়। হাজারি গুড় তৈরির কারিগরদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, শুধু দেশেই নয়, এই গুড়ের সুনাম ছড়িয়ে আছে দেশের বাইরেও। এই গুড়ের নামেই মানিকগঞ্জ জেলার ব্র্যান্ডিং করা হয়েছে—‘লোকসংগীত আর হাজারী গুড়, মানিকগঞ্জের প্রাণের সুর’
হাজারী গুড়ের উৎপত্তি মানিকগঞ্জ জেলার হরিরামপুর উপজেলার ঝিটকা অঞ্চলে। এ অঞ্চলের কিছু পরিবার এখানো হাজারী গুড় তৈরি করছে। একসময় ব্যাপকভাবে হাজারী গুড়ের উৎপাদন হলেও খেজুর গাছের স্বল্পতা কারণে তা কমে এসেছে।
সাংবাদিকদের এক প্রতিবেদনে শাইখ সিরাজ বলেছেন, জনশ্রুতি আছে, ইংল্যান্ডের রানি এলিজাবেথকেও এই গুড় উপহার দেওয়া হয়েছিল। রানি এলিজাবেথ গুড় খেয়ে অভিভূত হয়েছিলেন। গুণমুগ্ধতা প্রকাশ করতে আগ্রহী হয়ে ‘হাজারী’ নামে একটি সিলমোহরও তৈরি করে দিয়েছিলেন রানি। তিনি নিজেই ছড়িয়ে দিয়েছিলেন এ গুড়ের নাম।
হাজারী গুড়ের ইতিহাস, হাজারী গুড় নিয়ে এলাকায় প্রচলিত গল্প থেকে জানা যায়, প্রায় দেড়শ বছর আগে হরিরামপুর উপজেলার ঝিটকা অঞ্চলে মো. হাজারী প্রামানিক নামে একজন গাছি ছিলেন। যিনি খেজুরের রস দিয়ে গুড় তৈরি করতেন। একদিন বিকেলে খেজুর গাছে হাঁড়ি বসিয়ে গাছ থেকে নামামাত্রই একজন দরবেশ তার কাছে রস খেতে চান।
তখন হাজারী প্রামানিক ওই দরবেশকে বলেছিলেন, সবেমাত্র গাছে হাঁড়ি বসানো হয়েছে। এত অল্প সময়ে বড় জোর ১০-১৫ ফোঁটা রস হাঁড়িতে পড়েছে। তবু দরবেশ তাকে গাছে উঠে হাঁড়ি নামিয়ে রস খাওয়ানোর অনুরোধ জানান। দরবেশের অনুরোধে আবারও খেজুর গাছে ওঠেন হাজারী প্রামানিক। তিনি দেখতে পান, রসে হাঁড়ি ভরে গেছে। রসভর্তি হাঁড়ি নিয়ে তিনি গাছ থেকে নেমে দরবেশকে রস খাওয়ান এবং দরবেশের পা জড়িয়ে ধরেন। তখন দরবেশ তাকে বুকে জড়িয়ে ধরে বলেন, তুমি যত গুড় তৈরি করবে, তার সুনাম দেশ-বিদেশে ছড়িয়ে পড়বে। এরপর থেকেই গাছি হাজারী প্রামানিকের নামেই এই গুড়ের নামকরণ করা হয় ‘হাজারী গুড়’
জেলা প্রশাসক রেহেনা আকতার বলেন, শত বছরের লোকসংস্কৃতির ঐতিহ্য এই জেলায়। এই জেলার ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির সঙ্গে জড়িয়ে আছে হাজারি গুড়ও। এই দুই মিলিয়ে জেলার ব্র্যান্ডিং করা হয়েছে ‘লোকসংগীত আর হাজারী গুড়, মানিকগঞ্জের প্রাণের সুর’। হাজারি গুড়ের ঐতিহ্য ছড়িয়ে দিতে এবং নতুন প্রজন্মের কাছে এর ইতিহাস তুলে ধরতেই এই মেলার আয়োজন।
ট্যাগস :
আপলোডকারীর তথ্য

Banglar Alo News

hello
জনপ্রিয় সংবাদ

জেলা পরিষদের সদস্য ও বাইশারীর কৃতি সন্তানদের গণসংবর্ধনা

মানিকগঞ্জে বিজয় মেলার মাঠে ঐতিহ্যবাহী হাজারি গুড়ের মেলা। 

আপডেট সময় ০৮:২৮:৩৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৪

 

আবু বক্কর সিদ্দিক মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি: 
“শ্যামল নির্মল ঐতিহ্যে মানিকগঞ্জ”মেলা মেলা মেলা, হাজারী গুড় মেলা! মানিকগঞ্জে আজ বৃহস্পতিবার বেলা তিনটা থেকে শুরু হচ্ছে তিন দিনব্যাপী হাজারি গুড়ের মেলা। মানিকগঞ্জ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের খেলার মাঠে ৮ ফেব্রুয়ারী বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হওয়া এই মেলা চলবে আগামী ১০ ফেব্রুয়ারী শনিবার পর্যন্ত। দেশের ঐতিহ্যবাহী হাজারি গুড়ের হারানো ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে এবং দেশব্যাপী এটি ছড়িয়ে দিতে প্রথমবারের মতো এই মেলার আয়োজন করেছে মানিকগঞ্জ জেলা প্রশাসন।
শীত এলে এ দেশের গ্রামের বাড়িগুলোয় পিঠা-পায়েস তৈরির আয়োজন শুরু হয়। এ সময়ে খেজুরের রস ও গুড়ের চাহিদা এমনিতেই বেশি। আর হাজারি গুড় হলে তো কথাই নেই! যুগ যুগ ধরে ঐতিহ্য বহন করে আসছে মানিকগঞ্জের এই হাজারি গুড়।
মানিকগঞ্জের হরিরামপুরে ছোট ছোট পাত্রে ঢেলে রাখা হয়েছে হাজারি গুড়। মানিকগঞ্জে সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের খেলার মাঠে আজ থেকে শুরু হওয়া এই মেলা চলবে আগামী শনিবার পর্যন্ত। দেশের ঐতিহ্যবাহী হাজারি গুড়ের হারানো ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে এবং দেশব্যাপী এটি ছড়িয়ে দিতে প্রথমবারের মতো এই মেলার আয়োজন করেছে জেলা প্রশাসন।
মনভোলানো স্বাদের পাশাপাশি হাজারি গুড়ের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো, হাতে নিয়ে চাপ দিতেই গুঁড়া গুঁড়া হয়ে যায়। হাজারি গুড় তৈরির কারিগরদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, শুধু দেশেই নয়, এই গুড়ের সুনাম ছড়িয়ে আছে দেশের বাইরেও। এই গুড়ের নামেই মানিকগঞ্জ জেলার ব্র্যান্ডিং করা হয়েছে—‘লোকসংগীত আর হাজারী গুড়, মানিকগঞ্জের প্রাণের সুর’
হাজারী গুড়ের উৎপত্তি মানিকগঞ্জ জেলার হরিরামপুর উপজেলার ঝিটকা অঞ্চলে। এ অঞ্চলের কিছু পরিবার এখানো হাজারী গুড় তৈরি করছে। একসময় ব্যাপকভাবে হাজারী গুড়ের উৎপাদন হলেও খেজুর গাছের স্বল্পতা কারণে তা কমে এসেছে।
সাংবাদিকদের এক প্রতিবেদনে শাইখ সিরাজ বলেছেন, জনশ্রুতি আছে, ইংল্যান্ডের রানি এলিজাবেথকেও এই গুড় উপহার দেওয়া হয়েছিল। রানি এলিজাবেথ গুড় খেয়ে অভিভূত হয়েছিলেন। গুণমুগ্ধতা প্রকাশ করতে আগ্রহী হয়ে ‘হাজারী’ নামে একটি সিলমোহরও তৈরি করে দিয়েছিলেন রানি। তিনি নিজেই ছড়িয়ে দিয়েছিলেন এ গুড়ের নাম।
হাজারী গুড়ের ইতিহাস, হাজারী গুড় নিয়ে এলাকায় প্রচলিত গল্প থেকে জানা যায়, প্রায় দেড়শ বছর আগে হরিরামপুর উপজেলার ঝিটকা অঞ্চলে মো. হাজারী প্রামানিক নামে একজন গাছি ছিলেন। যিনি খেজুরের রস দিয়ে গুড় তৈরি করতেন। একদিন বিকেলে খেজুর গাছে হাঁড়ি বসিয়ে গাছ থেকে নামামাত্রই একজন দরবেশ তার কাছে রস খেতে চান।
তখন হাজারী প্রামানিক ওই দরবেশকে বলেছিলেন, সবেমাত্র গাছে হাঁড়ি বসানো হয়েছে। এত অল্প সময়ে বড় জোর ১০-১৫ ফোঁটা রস হাঁড়িতে পড়েছে। তবু দরবেশ তাকে গাছে উঠে হাঁড়ি নামিয়ে রস খাওয়ানোর অনুরোধ জানান। দরবেশের অনুরোধে আবারও খেজুর গাছে ওঠেন হাজারী প্রামানিক। তিনি দেখতে পান, রসে হাঁড়ি ভরে গেছে। রসভর্তি হাঁড়ি নিয়ে তিনি গাছ থেকে নেমে দরবেশকে রস খাওয়ান এবং দরবেশের পা জড়িয়ে ধরেন। তখন দরবেশ তাকে বুকে জড়িয়ে ধরে বলেন, তুমি যত গুড় তৈরি করবে, তার সুনাম দেশ-বিদেশে ছড়িয়ে পড়বে। এরপর থেকেই গাছি হাজারী প্রামানিকের নামেই এই গুড়ের নামকরণ করা হয় ‘হাজারী গুড়’
জেলা প্রশাসক রেহেনা আকতার বলেন, শত বছরের লোকসংস্কৃতির ঐতিহ্য এই জেলায়। এই জেলার ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির সঙ্গে জড়িয়ে আছে হাজারি গুড়ও। এই দুই মিলিয়ে জেলার ব্র্যান্ডিং করা হয়েছে ‘লোকসংগীত আর হাজারী গুড়, মানিকগঞ্জের প্রাণের সুর’। হাজারি গুড়ের ঐতিহ্য ছড়িয়ে দিতে এবং নতুন প্রজন্মের কাছে এর ইতিহাস তুলে ধরতেই এই মেলার আয়োজন।